শনির দশায় বার্সেলোনা

স্পোর্টস ডেস্ক : শনির দশায় পড়েছে বার্সেলোনা। একের পর এক হারে সমর্থকরা পড়েছে মহা দুশ্চিন্তায়।
সবচেয়ে কঠিন ভক্তরা মাঠেই কান্নাকাটি করে ফেলছেন। বার্সেলোনা ভক্তদের যেন কান্না থামছেই না। বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৩-০ গোলে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে ক্লাবের বিদায়কে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বার্সেলোনার সমর্থকরা। প্রিয় দলের এমন করুণ পরিণতিতে তারা মুষড়ে পড়েছেন।তবে নতুন কোচ এবং ক্লাব কর্তৃপক্ষের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেও বাস্তবতা মেনে নিয়েছেন অনেকেই। যদিও, ইউরোপা লিগে বার্সেলোনার ম্যাচ দেখতে হবে এটা রীতিমত হতাশ করছে সমর্থকদের।
ম্যাচের শুরু থেকে শেষ এভাবেই চাতক পাখির মতো অপেক্ষা করেছে সমর্থকরা; একটা ভালো মুহূর্তের জন্য। কিন্তু অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনায় প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগই দেয়নি বাভারিয়ানরা। কাতালান ক্লাবটিকে একেবারে নিঃশেষ করে দিয়েছে তারা। আর অপেক্ষার শেষে এভাবেই হতাশায় নিমজ্জিত হতে হয়েছে বার্সেলোনার সমর্থকদের।তবে, বায়ার্নের বিপক্ষের হার ততটা পোড়াচ্ছে না স্প্যানিশদের। কারণ, এটা যে নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে গিয়েছিল তাদের জন্য। জার্মান প্রতিপক্ষরা তাদের উড়িয়ে দেবে, এটাই যেন এখন নিয়তি বলেই মেনে নিয়েছেন তারা। তাদের আক্ষেপ ইউসিএলের মঞ্চ থেকে গ্রুপ পর্বেই বাদ পড়তে হলো বার্সেলোনাকে।
এক সমর্থক বলেন, আমাদের সব গৌরব আজ ভুলন্ঠিত হলো। আমাদের সব শিরোপা, সব মর্যাদা আজ থেকে অতীত। এই পরাজয় আমাদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে। রিয়াল-অ্যাতলেটিকো যখন ইউসিএলে খেলবে তখন আমাদের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কোনো কাজ থাকলো না। আমরা ইউরোপা লিগ খেলব, ভাবতেই হতাশ লাগছে।এ পরাজয় স্বাভাবিক ঘটনাই ছিল। বায়ার্ন আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ভালো একটা দল। আর আমাদের ফুটবলাররা যেভাবে খেললো, তাতে মনে হয়েছে তারা এই প্রথম এরকম বিগ ম্যাচে নেমেছে। ক্লাব ম্যানেজমেন্ট-ফুটবলার সবার যা ইচ্ছা তাই করছে। কেউ এর মর্যাদা নিয়ে ভাবছে না।
সেই ২০০৩-০৪ মৌসুমে শেষবার ইউরোপা লিগ খেলেছিল বার্সা। এরপর ক্লাবে আগমন ঘটে তাদের ক্ষুদে জাদুকরের। মেসি ম্যাজিকে আর কখনোই পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি কাতালোনিয়ানদের। কিন্তু ১৭ বছর পর মেসিকে ছাড়া নামতেই একেবারে বিবর্ণ বার্সেলোনা। জেতার মতো কোনো পরিস্থিতি তো দূরে থাক, প্রতিপক্ষের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি তারা।নতুন ম্যানেজমেন্টের অধীনে দলটাকে গোছাতে চেষ্টা করছেন ক্লাব কিংবদন্তি জাভি। কিন্তু, মাঠের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স কোনোভাবেই এগোতে দিচ্ছে না ক্লাবটাকে। আমূল পরিবর্তন চান তাই সমর্থকরা।
হতাশ আরেক সমর্থক বলেন, ‘আমরা এরকম কিছুই আশা করছিলাম। এ ধাক্কাটা আমাদের প্রয়োজন ছিল। আশা করবো এখন আমাদের ম্যানেজমেন্টের টনক নড়বে। তারা হয়ত ফুটবলার নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাটা আরও একটু পরিষ্কার করবে।’ আরও বলেন, দলটা একটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাদের সময় দিতে হবে, এটা আমরাও জানি। কিন্তু যাদের সময় দেওয়া হচ্ছে, তারা সেটার মূল্য বুঝতে পারছে কি না আমাদের সন্দেহ আছে। আগে তাদেরকে ক্লাবের মর্যাদা এবং ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে হবে।গ্রুপ ই’তে বায়ার্ন এবং ডায়নামো কিয়েভের পর তৃতীয় হয়ে ইউসিএল মঞ্চ থেকে ছিটকে গেল ক্লাব বার্সেলোনা।