জেলার খবর

বয়স্ক-এতিমদের কম্বল দিলো বসুন্ধরা

ডেস্ক রিপোর্টার : দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্ৰুপ বসুন্ধরা গ্ৰুপের অর্থায়নে এবং কালের কণ্ঠ শুভসংঘ বগুড়া জেলা শাখার আয়োজনে সোমবার বগুড়া জিলা স্কুল মাঠ ও শাজাহানপুরে ১০০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। কম্বল পেয়ে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ আজহার আলী বলেন, হামি অনেক খুশি হচি বাবা কম্বল প্যায়া। দোওয়া করিচ্চি তোমাকেরে জন্যে, আল্লাহ ভালো করুক।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সামাজিক সংগঠন শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান।

জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, বসুন্ধরা গ্ৰুপ দেশের মানুষের বন্ধু। তারা যে কোন দূর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। করোনাকালেও তারা সারাদেশে অসহায় মানুষদের মধ্যে ব্যাপক সহযোগিতা করেছে। এটা নি:সন্দেহে একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত। বসুন্ধরার মতো প্রতিটি শিল্প গ্ৰুপ দেশের অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে এলে মানবতার জন্য সেটি উদাহরণ সৃষ্টি হবে। কালের কন্ঠ শুভসংঘ’র কার্যক্রমের প্রশংসা করে তিনি বলেন, সারা বছরই সামাজিক এই সংগঠনটি অসহায় মানুষদের পাশে থাকছে। যতোটুকু সাধ্য মেলে তা নিয়েই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।

৭২ বছরের আমির আলী বলেন, বেজায় শীত পরিছে বাবা। কম্বলডা পানু। হামি জানভরে দোওয়া করমু বসুন্ধরার মালিকের জন্নি। কম্বল পেয়ে ৯ বছরের ছোট মনির তার খুশির ভাব প্রকাশ করে জানায়, হামি আব্বাক কচ্চুনু একটা নতুন কম্বল আনব্যার। হামার পাপ ইস্কা চলায়। প্রতিদিন আনবার চ্যায়াও আনে না। আজ হামি কম্বল পাছি। হামি খুব খুশি।

এদিকে বিকেলে শাজাহানপুর মাঝিড়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা শুভসংঘের আয়োজনে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাবেক কাউন্সিলর খোরশেদ আলম। উপস্থিত ছিলেন শুভসংঘের প্রধান উপদেষ্টা জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান দুলু, উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা আশিক খান, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলরুবা খাতুন, কালের কন্ঠের প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান জিয়া, আতিকুল ইসলাম আতিক প্রমূখ।

এতিম শিশুদের কম্বল বিতরণ

জারের ঠ্যালায় কয়দিন ধরে কষ্টে আছিনু বাবা। একনা কম্বলের জন্য কতজনের কাছে না গেলাম। কেউ একনা কম্বল দেয়নি বাব। শ্যাষে আইজ একনা কম্বল পাইনো বাব। এখন আর কাউকে কম্বলের কথা বলমু না। এই কম্বল হলেই জার চলি যাবে।বসুন্ধরা গ্রুপের কম্বল পেয়ে কথাগুলো বলছিলেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের বাগড়া চকপোতা গ্রামের হতদরিদ্র বৃদ্ধ মরিয়ম বেওয়া। তার মতো ২০০ দরিদ্র মানুষকে কম্বল দিয়েছে শুভসংঘ।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার সাধুবাড়ী সালেহা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এই কম্বল বিতরণ করা হয়। কালের কণ্ঠ শুভসংঘের উপজেলা কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল হাই বারীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ হাবিবর রহমান। তিনি বলেন, শীতে কম্বল দিচ্ছে বসুন্ধরা। করোনাকালেও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের মতো সমাজের সব বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত।অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম, উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রায়হান বলেন, শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম, কালেরকণ্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান।

‘শুভ কাজে সবার পাশে’ শ্লোগান সামনে রেখে নওগাঁয় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। নওগাঁ সদর উপজেলার বিভিন্ন মাদাসায় পৃথক পৃথক ভাবে কালের কণ্ঠ শুভসংঘের আয়োজনে দুই শতাধিক কম্বল বিতরণ করা হয়। বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় এ কম্বল বিতরণ করা হয়।নওগাঁ সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের রওদাতুল কোরআন ফতেপুর আক্কাছ আলী হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার ছাত্রদের এবং বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বশিপুর নূরাণী মহিলা মাদরাসার ছাত্রীদের মাঝে এ কম্বল বিতরণ করা হয়। এ ছাড়াও দুস্থ শীতার্তদের মাঝে ঘুরে ঘুরে কম্বল প্রদান করা হয়।

কম্বল বিতরণ করার সময় রওদাতুল কোরআন ফতেপুর আক্কাছ আলী হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন দুবলহাটি ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোখলেসুর রহমান আযম। তিনি বলেন, ‘এই তীব্র শীতে মাদরাসার এতিম শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করে তাদের মাঝে কম্বল বিতরণ করে নজিরবিহিন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে শুভসংঘ। আমরা বসুন্ধরা গ্রুপ, কালের কণ্ঠ ও শুভসংঘের আরো সাফল্য কামনা করি।বোয়ালিয়া ইউনিয়নের বশিপুর নূরাণী মহিলা মাদরাসার ছাত্রীদের মাঝে কম্বল বিতরণের সময় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ। এ সময় নূরাণী মহিলা মাদরাসার পরিচালক এনামুল হক, সাংবাদিক সজিব হোসেন, বকুল হোসেনসহ শুভসংঘের বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button