সেনাবাহিনীর সঙ্গে গণমাধ্যমের কোনো দূরত্ব থাকবে না:সেনাপ্রধান
বিশেষ প্রতিনিধি : সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছিলাম, জনগণের সঙ্গে কোনো দূরত্ব থাকবে না। গণমাধ্যমের সঙ্গেও কোনো দূরত্ব থাকবে না। এটা আমি উপলব্ধি করি। আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গেই কাজ করব। পাশাপাশি গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনা সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণেরও অংশ।সম্প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলাকালে ‘ডিফেন্স জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিজাব)’ নির্বাহী কমিটি ও সদস্যদের উদ্দেশে সেনাবাহিনী প্রধান এ কথা বলেন।
সাভারের মিলিটারি ফার্মে মাটির নিচে বিশেষভাবে স্থাপিত সেনাসদরের ফিল্ড কমান্ড পোস্টের মিডিয়া সেন্টারে আনুষ্ঠানিক ওই ব্রিফিং ও মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়। সেখানে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করেন সেনাবাহিনী সদর দপ্তরের সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুন-উর-রশিদ। এ সময় বক্তব্য রাখেন ডিজাব সভাপতি আবুল খায়ের, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য মাসুদ করিম প্রমুখ। গত ১৯ ডিসেম্বর শুরু হওয়া ওই অনুশীলন আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার।
সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, ‘গণমাধ্যমের সঙ্গে আমাদের তথা সেনাবাহিনীর দূরত্ব থাকবে না। কিন্তু যখনই দেখা যায় যে, আপনারা এমন কিছু লিখছেন বা আপনাদের অজান্তে হয়ে যাচ্ছে, যা নিয়ে আমরা বিব্রত হচ্ছি কিংবা এটা নিয়ে টানাপোড়েন সৃষ্টি হচ্ছে তখনই দূরত্বটা সৃষ্টি হয়। আমরা একে অপরের সহায় হব, সহযোগী হব।’
সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণে গণমাধ্যমকর্মীদের সম্পৃক্ত করার বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা কিন্তু প্রশিক্ষণ নিচ্ছি যুদ্ধের। আর যুদ্ধের সময় অবশ্যই গণমাধ্যম আমাদের সঙ্গে থাকবে। যেভাবে থাকবে ওই আঙ্গিকেই আমরা আপনাদের তথা গণমাধ্যমকে সঙ্গে নিয়ে যাব। আগামীতে যখনই এ ধরনের প্রশিক্ষণ হবে সেখানে গণমাধ্যম থাকবে। এটা আমাদের প্রশিক্ষণের অংশ।শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, যুদ্ধের সময় যেভাবে মিডিয়া সেল কাজ করবে, সেভাবে সেনা সদর দপ্তরের মিডিয়া সেল তৈরি করা হয়েছে। এভাবেই সেনাবাহিনী গণমাধ্যমের সঙ্গে কাজ করবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সরকারের নির্দেশে যে কোনো দায়িত্ব পালনে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।
ব্রিফিংয়ে সেনাসদরের সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মামুন-উর-রশিদ জানান, ‘কঠিন প্রশিক্ষণ, সহজ যুদ্ধ’ এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে আমরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। সেনাবাহিনীর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ বছর সেনাবাহিনী সদর দপ্তরের কমান্ড গ্রুপ ও সাপোর্ট গ্রুপ দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশাগত উৎকর্ষ বেড়েছে।মামুন-উর-রশিদ বলেন, ‘প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আমরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে। সেই আলোকে আমরা এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি।’
সেনাসদরের কমান্ড গ্রুপের মিডিয়া সেলে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. সাইফুল আলম, চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ, ডিজাবের সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, ডিজাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদ, অর্থ সম্পাদক আয়নাল হোসেনসহ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও ডিজাবের বেশ কয়েকজন সদস্য।