ডাচ বাংলা ব্যাংকে সংঘবদ্ধ জালিয়াতি
বিশেষ প্রতিনিধি : এবার ডাচ বাংলা ব্যাংকের জালিয়াতদের হাতেনাতে ধরেছে পুলিশ। এরা জালিয়াতির মাধ্যমে দেশের বড় বড় শিল্পগ্রুপের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। কয়েকটি শিল্প গ্রুপের অভিযোগের ভিত্তিতে গুলশান পুলিশ অভিযানেে নেমে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এক কর্মকর্তাসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) গুলশানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রাজধানীর ভাটারা এলাকায় একটি রেস্টুরেন্ট থেকে বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে গুলশান বিভাগের আভিযানিক টিম।
গ্রেফতাররা হলো- মো. জাকির হোসেন (৩৫), ইয়াসিন আলী (৩৪), মাহবুব ইশতিয়াক ভূইয়া (৩৫), আনিছুর রহমান ওরফে সোহান (৪২), মো. দুলাল হোসাইন (৩৫), মো.আসলাম (৫৩), আব্দুর রাজ্জাক (৪৮), জাকির হোসেন (৪৪), মো. আনোয়ার হোসেন ভুইয়া (৫৬) ও মো. নজরুল ইসলাম (৫০)। এদের মধ্যে জাকির হোসেন ডাচ বাংলা ব্যাংকের কাওরান বাজার শাখায় এসএমই সেলস টিম ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত।
সংবাদ সম্মেলনে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার শাখায় ওয়াল্টন গ্রুপের অ্যাকাউন্ট থেকে সাড়ে ৬ কোটি টাকা আরটিজিএস ফর্মে ট্রান্সফারের একটি আবেদন আসে। আবেদনকৃত অর্থ এবি ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ট্রান্সফারের আবেদন করা হয়। তবে বসুন্ধরা শাখার ব্যবস্থাপকের কাছে লেনদেনের আবেদনটি অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় তিনি ওয়াল্টন গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
ওয়াল্টন গ্রুপ থেকে জানানো হয়, তারা এ ধরনের কোনও অর্থ ট্রান্সফারের আবেদন করেননি। পরে ট্রান্সফারের আবেদনটি স্থগিত করা হয়।এ বিষয়ে ওয়াল্টন গ্রুপের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) ডিএমপির ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চক্রটির ১০ জনকে গ্রেফতার করে ভাটারা থানা পুলিশ।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রটি বিভিন্ন ব্যাংকের যে শাখা থেকে টাকা ট্রান্সফার করা হবে সেসব শাখার ম্যানেজারকে তারা বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে কিংবা প্রলুব্ধ করে তাদের সহায়তার জন্য সবধরনের কাজকর্ম করতো। তিনি জানান, চক্রটি এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের থেকে টাকা ট্রান্সফার করেছে এবং আরও একটি প্রতিষ্ঠান অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফারের পাঁয়তারা করছিল।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকগুলোর উদ্দেশে মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আপনারা নিজেরা সচেতন থাকবেন। বড় অংকের টাকা ট্রান্সফার হলে অবশ্যই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবগত করে তারা যেন টাকা ট্রান্সফার করেন। এ ঘটনার সাথে আর কারা কারা জড়িত গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ এ আরও বিস্তারিত তথ্য পাওয়া সম্ভব হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান।