বিশেষ প্রতিবেদন

রাষ্ট্রীয় ঘুষ ভবন ছিল হাওয়া ভবন

 

বিশেষ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হাওয়া ভবনকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার প্যারালাল কেন্দ্রে পরিণত করে এই ভবনকে ঘুষ, পার্সেন্টেজ দেওয়ার অঘোষিত নিয়মে পরিণত করেছিলো।বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফাইড পেজে এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

পোস্টে তিনি লেখেন, ব্যাপক দলীয়করণ ও সিন্ডিকেট তৈরি করে কৃত্রিমভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে সাধারণ জনগণের পকেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে তারা। সজীব ওয়াজেদ জয় আরও লেখেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল, এই ৫ বছরে বাংলাদেশকে ৫০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে, এ কথা কি সত্যি নাকি শুধুই রাজনৈতিক বক্তব্য? সেই সত্য ঘটনাগুলোই আপনাদের সামনে আসবে এক এক করে। হত্যা, নির্যাতন, দখল, দলীয়করণ, দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, ব্যাপক লুটপাট, দুর্নীতি ও অর্থপাচার, জঙ্গি উত্থান গ্রেনেড হামলার মতো এত ব্যাপক ঘটনা স্বাধীন বাংলাদেশে আর ঘটেনি, যা হয়েছে সেই ৫ বছরে।

একটি ভিডিও শেয়ার করে তিনি লেখেন, নিয়মিতভাবেই আপনাদের সামনে নিয়ে আসব বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের দুঃশাসনের কথা। সাধারণ মানুষ কতোটা নিষ্পেষিত ছিল তা জানতে পারবেন তাদের মুখেই। চোখ রাখুন আমার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে আর মন্তব্য করুন কমেন্ট বক্সে।এর আগে গত রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে একটি ভিডিও শেয়ার করেন জয়।ভিডিওতে বাংলাদেশ থেকে কীভাবে অর্থপাচার করা হয়, কারা পাচার করেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।

ভিডিওটি শেয়ার করে জয় লেখেন, বাংলাদেশের অর্থ পাচার করে কারা? এই অনুসন্ধানী রিপোর্টে উঠে এসেছে বাংলাদেশ থেকে কীভাবে, কখন, কোথায় টাকা পাচার হয়েছে। আন্তর্জাতিক তদন্তকারী সংস্থাগুলো বাংলাদেশের কোন কোন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করেছে তাদের রিপোর্টে তা জানার জন্য ভিডিওটি দেখার অনুরোধ করেন জয়।ভিডিওটিতে বিএনপির বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে। ভিডিওটি বৈশ্বিক বেশ কিছু সংস্থার প্রকাশিত তথ্যকে ভিত্তি করে তৈরি।ভিডিওটিতে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি বড় অঙ্কের অর্থপাচার করেছে।

সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক জিয়া তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের অ্যাকাউন্টে ২০ কোটি টাকা পাঠান। এ ঘটনায় এফবিআই’র এক কর্মকর্তা তারেক জিয়ার অর্থ পাচার মামলায় সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান (কোকো) ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সিঙ্গাপুরে বড় অঙ্কের অর্থ পাচার করেছেন। তার মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থের মধ্য থেকে তিন ধাপে ৩০ লাখ সিঙ্গাপুর ডলার ফেরত আনতে সক্ষম হয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার দুর্নীতির তথ্য এফবিআই ওয়েব সাইটেও রয়েছে বলে ভিডিওতে উল্লেখ করা হয়।

প্যারাডাইজ পেপারেও অসংখ্য বিএনপি নেতার নাম এসেছে। তাদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করা আব্দুল আওয়াল মিন্টু এবং তার স্ত্রীসহ তিন ছেলের নাম রয়েছে। ভিডিওতে বলা হয়, বিশ্বের যেখানেই দুর্নীতি নিয়ে কোনো তদন্ত হয়েছে সেখানেই বিএনপি নেতাদের নাম উঠে এসেছে।

ফাঁস হওয়া পানামা পেপারস-এ অর্থ পাচার করা ৩৪ বাংলাদেশি ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন বিএনপির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোর্শেদ খান এবং তার ছেলে ফাইসাল মোর্শেদ খান। তারা ৪ কোটি মার্কিন ডলার এবং ১ কোটি হংকং ডলার পাচার করেছে হংকং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে। শ্রীলঙ্কার আমানা ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে ফাইসাল মোর্শেদের অধীনে একাধিক নামের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেখানে এবি ব্যাংকের ১৮ কোটি শেয়ার রয়েছে। বিদেশে এভাবেই হাজার হাজার কোটি টাকা সংরক্ষণ করেছে ফাইসাল মোর্শেদ। সে বিভিন্ন বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে বিদেশে অর্থ পাচার করেছে যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুর্নীতি বিরোধী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভিডিওতে বলা হয়, এই বৈশ্বিক অনুসন্ধানকারীদের আসলে কে ক্ষমতায় আছে তাতে কিছু যায় আসে না। তারা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একই রকম দুর্নীতির তথ্য পেলে এভাবেই প্রচার করবে। কিন্তু তেমন কিছু তারা করেনি।

সম্প্রতি সময়ে প্যান্ডোরা পেপারস ফাঁস হওয়ার পর সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে ১.২ কোটির বেশি গোপন নথি সেখানে রয়েছে। কিন্তু পানামা পেপারস বা প্যান্ডোরা পেপারস কোনোটিতেই দুর্নীতি অনুসন্ধানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ কোনো নেতৃত্বের নাম উঠে আসেনি। কিন্তু প্রতিটি পেপারসে মিলেছে বিএনপি নেতাদের নাম। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ভেবে দেখার মতো বিষয় বলে ভিডিওতে উল্লেখ করা হয়।

 

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button