স্টাফ রিপোর্টার : সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেলো মেধাবী মিমের। মিমের স্বপ্নগুলো ভেবে কান্না থামাতে পারছে না
মিমের পরিবার। এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্যান্টনমেন্ট জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, কিছুক্ষণ আগে চট্টগ্রাম থেকে কাভার্ড ভ্যানের চালক ও তাঁর সহকারীকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের ঢাকায় আনা হচ্ছে। আটক চালকের নাম সাইদুল। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁর বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া যায়নি। আর চালকের সহকারীর নাম এখনো জানা যায়নি।
রাজধানীর কুড়িল ফ্লাইওভারে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মাইশা মমতাজ মিমের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছেছে। এসময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। মরদেহটি শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মৌচাকে পৌঁছালে বাড়ির সামনে শতশত মানুষের ভিড় জমে। আত্মীয়-স্বজন এমনকি পাড়া-প্রতিবেশীদের অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।বাড়িতে ছুটে আসেন স্কুল কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও। পুরো গ্রাম যেন স্তব্দ হয়ে যায়। মিমের মা-বাবা মেয়ের শোকে পাগলপ্রায়। মা আসমা আক্তার বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বাবা নুর মোহাম্মদ মামুন কোনোক্রমেই কান্না থামাতে পারছেন না।
প্রতিবেশীরা জানান, মিম খুবই মেধাবি ছিলেন। ২০১৮ সালে বাবার হাতে গড়া স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। পরে রাজউক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিতে ইংলিশে অনার্স করছিলেন।মেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার্তে বাবা নুর মোহাম্মদ মামুন বাসা নেন রাজধানীতে। উত্তরার ৬নং সেক্টরের ১০নং সড়কে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন তিনি। এরমধ্যে মিমের যাতায়াতের জন্য গতবছর একটি স্কুটি কিনে দেন বাবা।
মিমের ছোট চাচা মাকসুদুর রহমান পিয়াস বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্কুটি নিয়ে ইউনিভার্সিটির উদ্দেশে বের হয়েছিল মীম। সেখানে ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ নামে একটি সেমিনার ছিল। সারাদেশ থেকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। মিমের সেখানে ভলেন্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল।রহমান পিয়াস বলেন, সকাল সাড়ে ৭টা কিংবা পৌনে ৮টার দিকে কুড়িল ফ্লাইওভারের ওপর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয় সে।
মিমের বাবা নুর মোহাম্মদ মামুন বলেন, সকালে মিম ইউনিভার্সিটিতে একটি ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ সেমিনারে যাওয়ার জন্য বের হয়। পরে আমি ছোট মেয়ে রৌদসি মমতাজ মৌকে নিয়ে বাংলা কলেজে যাই তার মেডিকেল পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য। মেয়েকে পরীক্ষার হলে দিয়ে গেটে অপেক্ষা করার পর সকাল ৯টার দিকে কুর্মিটোলা থেকে একজন চিকিৎসক ফোন দিয়ে ঘটনাটা জানান। এসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। চোখ মুছে আবার বলেন, আমার মিম প্রায়ই বলত ইংলিশের ওপর পড়াশোনা করবে। সে মালয়েশিয়ায় গিয়ে পড়াশোনার করার স্বপ্ন দেখত। মেয়েকে নিয়ে খুব স্বপ্ন ছিল আমারও।এশার নামাজের পর মিমের জানাজা সম্পন্ন হয়। পরে তাকে তার দাদার কবরের পাশে দাফন করা হয়।