রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শহীদদের দেহাবশেষ দাফন করালেন সেনাপ্রধান
বিশেষ প্রতিনিধি : স্বাধীনতার অর্ধ শত বছর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শহীদদের দেহাবশেষ দাফন করালেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। আজ সোমবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় এ দাফন সম্পন্ন হয়।জানা গেছে, মিরপুরের মুসলিম বাজার বধ্যভূমি থেকে উদ্ধার হওয়া মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের দেহাবশেষ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর জানায়, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ সরেজমিনে উপস্থিত থেকে এ দাফন সম্পন্ন করান।পরে সেনাবাহিনী প্রধান মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার শিকার ব্যক্তিদের দেহাবশেষ সমাধিস্থ করার পর পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন।
জানা গেছে, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের অসংখ্য বধ্যভূমিতে বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ চালায়। মিরপুরের মুসলিম বাজার বধ্যভূমি এসব বধ্যভূমির মধ্যে অন্যতম। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের মদদপুষ্ট রাজাকারদের হিংস্রতা যে কত ভয়াবহ ছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায় ১৯৯৯ সালের জুলাই মাসে। ওই বছরের ২৭ জুলাই মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের নূরী মসজিদ সংস্কারের কাজ করার সময় কূপ খনন করলে বেরিয়ে আসে ১৯৭১ সালের সেই সব হত্যাযজ্ঞের স্মৃতিচিহ্ন। মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড়ের সঙ্গে বেরিয়ে আসে চুলের বেণি, ওড়না, কাপড়ের অংশবিশেষসহ শহীদদের বিভিন্ন ব্যবহার্য সামগ্রী।
উদ্ধার করা হাড় ও খুলিগুলো ১৯৭১–এর গণহত্যার নিদর্শন কি না, তা নিশ্চিত করতে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিদর্শনগুলো পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়। শহীদদের রক্ত সম্পর্কের আত্মীয়স্বজনের ‘টিস্যু স্যাম্পল’ নিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা করা হয়। পরে দেহাবশেষগুলোর কিছু মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং কিছু সেনাবাহিনীর জাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য দেওয়া হয়। অবশিষ্ট দেহাবশেষগুলো সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সম্মানজনকভাবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের কাজ সম্পন্ন হলো। দাফনের সময় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।