জাতীয়

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি শ্রীলংকার সাথে তুলনা করা উদ্দেশ্যমূলক বাংলাদেশকে নিয়ে হিংসা

শফিক রহমান  :  কোথায় বাংলাদেশ আর কোথায় শ্রীলংকা। যেখানে বাংলাদেশ দাড়িয়ে আছে কঠিন মজবুত অর্থনৈতিক শক্তির ওপর। যার রিজার্ভ অভাবনীয়। অর্থনৈতিক উন্নয়ন আর জোরালো প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় ক্রমেই অবস্থান এগিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ। এমনকি পাকিস্তান ও শ্রীলংকা থেকে অর্থনীতির সব সূচকে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। এটাই ইর্ষা
বিএনপি জামায়াত মনা বুদ্বিজীবীদের। তাই এরা শ্রীলংকার অর্থনৈতিক দুরবস্থার সঙ্গে বাংলাদেশ কে মেলাতে চায়। কিন্তু আন্তজার্তিক সব পরিসংখ্যানে এগিয়ে বাংলাদেশ।
এমন শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে থাকা দেশের অর্থনীতিকে শ্রীলংকার সাথে তুলনা করা উদ্দেশ্যমূলক এবং দেশকে হেয় করার সামিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস। এ সময় অর্থ মন্ত্রণালয়র সচিব বলেছেন, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা থেকে অর্থনীতির সব সূচকে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে টানা তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব তথ্য জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে দ্রুত স্ফীত হচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিকভাবে দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির ভিত্তিতে ২৬তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ। লন্ডনভিত্তিক এইচএসবিসি’র বৈশ্বিক গবেষণার ভিত্তিতে তৈরি এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
‘দ্য ওয়ার্ল্ড ইন ২০৩০: আওয়ার লং টার্ম প্রজেকশন ফর ৭৫ কান্ট্রিস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি ১৮ ধাপ এগিয়ে যাবে। অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার দিক থেকে বাংলাদেশের পরেই রয়েছে ফিলিপাইন, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া। প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধিই কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান অংশ। এটা খুবই স্পষ্ট যে বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি আরো বাড়বে। ধনী দেশ নরওয়ের মতোই এটা হতে পারে।
এইচএসবিসির দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি মডেলে দেখানো হয়, ২০৩০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর বাংলাদেশের জিডিপিতে প্রত্যেক বছর ৭ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে। যা প্রতিবেদনটির ৭৫ দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এতে আরো বলা হয়, ২০৩০ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৭০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
ওদিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিংকট্যাংক সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ (সিইবিআর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৩৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার তিন গুণ বেড়ে হবে প্রায় ৮৫ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ হবে ৩৪তম এবং ২০৩০ সালে হবে ২৮তম অর্থনীতি। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে থাকা বাংলাদেশের অবস্থান ক্রমেই আরো এগিয়ে যাবে।
যাহোক দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকার চরম অর্থনৈতিক সংকটে বাংলাদেশের নীতি নির্ধারকদের বারবার সতর্কবাণী দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। এমন প্রেক্ষাপটে দেশের অর্থনীতির বাস্তব চিত্র নিয়ে মঙ্গলবার পর্যালোচনায় বসেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডাকা হয় অর্থমন্ত্রণালয়ের সচিব রউফ তালুকদার, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও রাজস্ব বিভাগের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহাম্মদ রহমাতুল মুনিম, ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসসহ সংশ্লিষ্টদের। দীর্ঘ তিন ঘণ্টার বৈঠকে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরা হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কিছু বুদ্ধিজীবী বাংলাদেশ নিয়ে ভুল মন্তব্য করছেন। এসময় শ্রীলংকা ও বাংলাদেশের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে অর্থসচিব বলেন, এই দুটি দেশের মোট জিডিপির তুলনায় বাংলাদেশের জিডিপি এগিয়ে আছে।  বৈদেশিক ঋণও এক চতুর্থাংশ।পাকিস্তান ও শ্রীলংকার সংকটে গার্মেন্ট শিল্পের সম্ভাবনা বাংলাদেশ কাজে লাগবে কি-না এমন প্রশ্নে মুখ্য সচিব জানান, কোন দেশের দুরাবস্থাকে পূজি করতে চায় না বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button