অরিন শর্মাকে আজীবন শিক্ষাবৃত্তি দিলো বসুন্ধরা
কুষ্ঠিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়া জেলার ইবি থানাধীন ঝাউদিয়া গ্রামে বসবাস অরিন শর্মার। বাবা পেশায় এলাকার এক ছোট স্বর্ণের দোকানের কারিগর। ৪ জনের সংসার, অরিন শর্মার বাবা, মা ছাড়াও আছে একজন প্রতিবন্ধী বোন। ঝাউদিয়া বাজার সরকারি প্রাথমিক স্কুলের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র অরিন শর্মা। একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে মায়ের নির্দেশে দোকান থেকে বসুন্ধরা আটা সহ আরও কিছু খাবার কিনেছিলো অরিন শর্মা।
বসুন্ধরা আটার প্যাকেটটি পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে রেখেছিলো, তাই দেখে কাছেই থাকা বসুন্ধরা ফুড এন্ড বেভারেজ এ কর্মরত বিক্রয় প্রতিনিধি কৌতূহলী হয়েই একটি ছবি তুলে। পরবর্তীতে ছবিটি মুঠোফোনে পাঠিয়ে দেয় ঢাকায় সেলস এর বিভাগীয় প্রধানের কাছে। ছবিটি বিভাগীয় প্রধানের ভালো লাগায় তখন চলতে থাকা সেলস কনফারেন্স এর জন্য কমিউনিকেশনের এক ব্যানারে ছবিটিকে ছাপিয়ে দেন। ব্যানারে থেকেই ওই ছবিটি নজরে আসে গ্ৰুপের ভাইস চেয়ারম্যানের। অরিন শর্মার মুখের মায়াময় হাসি এবং বসুন্ধরা আটার প্যাকটটি যত্নে জড়িয়ে রাখাটা মন কাড়ে সবার।
অরিন শর্মা হয়তো ভাবতেও পারেনি, শুধুমাত্র বসুন্ধরা আটার ২ কেজির প্যাকেট বুকে জড়িয়ে নেয়া একটা ছবির কারণে বসুন্ধরা গ্ৰুপই তাকে বুকে জড়িয়ে নিবে। ১০ বছর বয়সী অরিন শর্মার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, বিশ্ববিদ্যালয় সকল পড়াশোনা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থান সহ সকল কিছুর দায়িত্ব নিলো বসুন্ধরা গ্ৰুপের ভাইস চেয়ারম্যান জনাব সাফিয়াত সোবহান।
ভালো লাগা থেকেই ভালো কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া। বরাবরই বসুন্ধরা মানবিক সহায়তায় অগ্রগামী। এই প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ সব সময়ই মানুষের কল্যানে দাঁড়াতে সচেষ্ট। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (১৮ এপ্রিল) বসুন্ধরা হেডকোয়ার্টার-২ এ বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান অরিন শর্মার বাবার হাতে একটি স্মারক তুলে দেন। এছাড়া অরিন শর্মার পরিবারের সদস্যদের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দেওয়া হয়।
জনাব রেদওয়ানুর রহমান (জি.এম. সেলস, বসুন্ধরা ফুড এন্ড মাল্টি ফুড ইউনিট) স্বাগত বক্তব্যে বলেন, এটা সত্যিই আমাদের জন্য অনেক আনন্দের কখনও কারও জন্য কিছু করতে পারা। এর আগেও ফুড এন্ড বেভারেজ এবং মাল্টি ফুড ইউনিট থেকে আমরা অনেককেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করে থাকি, সাময়িক সাহায্য দিয়েই আমরা আমাদের কার্যক্রমের সমাপ্তি টেনে দেই। হয়তো আর খোঁজ নেয়া হয় না, কেমন চলছে তাদের জীবন যাদের আমরা কোনও এক সময় সহযোগিতা করেছিলাম। আমাদের সম্মানিত ভাইস চেয়ারম্যান স্যার সেই পথই আমাদের দেখালেন কিভাবে দীর্ঘস্থায়ী এবং জীবনমুখী কল্যানের পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন করতে হয়। আজীবন শিক্ষাবৃত্তি পুরষ্কার তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
বসুন্ধরা গ্ৰুপের ভাইস চেয়ারম্যান জনাব সাফিয়াত সোবহান তার অভিব্যক্তিতে বলেন, আজীবন শিক্ষাবৃত্তি পুরষ্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এই কার্যক্রম চলমান থাকবে, যাতে করে হাজারো অরিন শর্মা তাদের স্বপ্ন পূরণে অগ্রসর হতে পারে।
অরিন শর্মার বাবা অকিল শর্মা বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ আমার ছেলের পড়াশোনা সহ কর্মসংস্থানের দায়িত্ব নিয়েছে, এ খবর আমার জন্য অনেক অনেক আনন্দের। আমাদের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসায় বসুন্ধরার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা। আমার ছেলে বড় হয়ে দেশ ও মানুষের কল্যানে কাজ করবে এবং সম্মানজনক পেশায় থাকবে এটাই আমার আশা।
শিক্ষাবৃত্তি সনদপত্র হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ক্যাপ্টেন শেখ এহসান রেজা (চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার, বসুন্ধরা ফুড এন্ড মাল্টি ফুড), জনাব আব্দুস শুকুর (সি.ও.ও, সাপ্লাই চেইন ডিভিশন), জনাব এম এম জসীম উদ্দিন (সি.ও.ও, ব্র্যান্ড এন্ড মার্কেটিং, সেক্টর-এ, বসুন্ধরা গ্রূপ), জনাব আব্দুর রহমান (কোর্ডিনেটর টু ভাইস চেয়ারম্যান, বসুন্ধরা গ্ৰুপ), জনাব বেলাল হোসেন (হেড অফ একাউন্টস এন্ড ফাইন্যান্স, বসুন্ধরা ফুড এন্ড মাল্টি ফুড), সহ আরও উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ।