ফের বেড়েছে চিনির দাম
অর্থনীতি ডেস্ক : রাজধানীর বাজারে বেড়েছে চিনির দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম বেড়েছে তিন থেকে পাঁচ টাকা। আর প্যাকেটজাত চিনিতে বেড়েছে পাঁচ টাকা। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বছরের অন্য সময়ের চেয়ে রমজান মাসে চিনির চাহিদা বেশি থাকে। ঈদ ঘিরে চাহিদা আরেকটু বাড়ে। অন্যদিকে, এবার বিশ্ববাজারে চিনির দামও বাড়তি। যে কারণে দাম একটু বেশি রাখা হচ্ছে দেশের মিল পর্যায়ে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। তবে মিলাররা বলছেন, চিনির দাম বাড়াননি তারা। গত রোববার রাজধানীর কয়েকটি পাইকারি ও খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পরিশোধিত বা সাদা প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৩ টাকায়, যা গত সপ্তাহে পাওয়া যেত ৭৭ থেকে ৭৮ টাকায়। প্যাকেটজাত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে একই চিনির দাম ছিল সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা। এ ছাড়া দেশীয় লাল খোলা চিনির কেজি ৯৫ এবং প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই চিনির দামে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এদিকে, সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনন্দিন বাজারের তথ্যমতে, গত এক বছরের ব্যবধানে ১৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে আমদানি করা চিনির দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত চিনির দর বেড়ে যাওয়ায় এবং স্থানীয় পরিশোধনকারী মিলগুলোর উৎপাদন খরচ বিবেচনায় নিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর চিনির নতুন দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনারস অ্যাসোসিয়েশন। প্রতি কেজি খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৭৪ টাকা ও প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৭৫ টাকা নির্ধারণ করে সংগঠনটি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি এই দাম। চিনির বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকার আমদানি শুল্ক্কে ছাড় দিয়েছে। গত বছরের ১৪ অক্টোবর আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক্ক ৩০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। শুল্ক্ক ছাড়ের এ সুবিধা আগামী ১৫ মে পর্যন্ত পাওয়া যাবে। কিন্তু এর সুফল পাচ্ছেন না ক্রেতারা। নাখালপাড়ার খুচরা ব্যবসায়ী মহসিন স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. মহসিন বলেন, পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে খোলা চিনি বস্তা হিসেবে কিনতে হয়। মাপজোখের সময় কিছু চিনির ঘাটতি হয়। তাছাড়া আগের চেয়ে পরিবহন খরচ বেড়েছে। দোকানে আনা পর্যন্ত প্রতি কেজি চিনির খরচ ৭৮ থেকে ৭৯ টাকার মতো পড়ে যায়। বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি আবুল হাশেম বলেন, পাইকারি পর্যায়ে চিনির কেজি এখন ৭৭ থেকে ৭৭ টাকা ৫০ পয়সা পড়ে যায়। খুচরা পর্যায়ে তা আরও বেশি পড়বে। তিনি বলেন, বর্তমানে চিনির সরবরাহে তেমন সমস্যা নেই। মিল মালিকরা চিনির সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখলে ঈদেও কোনো সংকট হবে না। তবে চিনির দাম কমছে না। তিনি বলেন, মিলারদের দাবি, বিশ্ববাজারে চিনির দাম বাড়ছে। এ কারণে মিলগেটে দাম বেড়েছে। অন্যদিকে মিলাররা বলছেন, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে চিনি সরবরাহ করা হচ্ছে। দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। সিটি গ্রæপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা বলেন, মিলগেটে দাম বাড়েনি। আগের মতোই ৭৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজার মিলাররা নিয়ন্ত্রণ করেন না। খুচরা বাজারে দাম কেন বাড়ছে তা বোধগম্য নয়।