শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করেছে ইউজিসি ব্রিটানিয়া ভেজাল বিশ্ববিদ্যালয়
স্টাফ রিপোর্টার : কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কে ভেজাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে অভিহিত করে এর ছাত্র ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। কর্তৃপক্ষ বলেছে, কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে। রোববার ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিনকে এসব তথ্য জানান।
জানা গেছে, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কুমিল্লার জেলার পাদুয়ার বাজার, বিশ্বরোডে অবস্থিত একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি ১৬ই নভেম্বর ২০১২ সালে এর কার্যক্রম শুরু করার অনুমতি লাভ করে।ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন লাভ করে। ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কুমিল্লা জেলায় প্রতিষ্ঠিত তৃতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১২ সালে ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডক্টর এমডি আব্দুস সাত্তার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে দায়িত্ব পালনের কথা থাকলেও তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়না। অনেকে বলেছেন, তাকে নামসর্বস্বভাবে উপাচার্য রেখে মালিকপক্ষ ফায়দা লুটছিল।
ইউজিসির পরিচালক বলেন, সম্প্রতি কমিশনের প্রতিনিধি দল ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেছে। পরিদর্শন দল দেখতে পান, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংখ্যা যেমন অপ্রতুল, তেমনই ‘যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকেরও অভাব’ রয়েছে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে গবেষণা হয় না। আচার্য নিযুক্ত বৈধ কর্তৃপক্ষেরও উপস্থিতি সেখানে দেখা যায়নি।
ইউজিসি জানায়, শিক্ষাসহায়ক ক্যাম্পাসের অনুপস্থিতি, লাইব্রেরিতে প্রয়োজনীয় পাঠ্য বইয়ের অপ্রতুলতার পাশাপাশি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কারিকুলাম মেয়াদোত্তীর্ণ । ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের ১৮ ও ২০ ধারা অনুযায়ী, সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তি, শিক্ষাদান, সব পরীক্ষা ও এর ফল অনুমোদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
আইনের ১৭ ও ১৯ ধারা অনুযায়ী, ভাইস-চ্যান্সেলর সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি এবং আইনের ৩১ ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ দিয়ে থাকেন।আর রাষ্ট্রপতির নিয়োগ দেওয়া ভিসির অবর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো আইনগত বৈধতা থাকে না বলে ইউজিসি লিখিতভাবে ব্রিটানিয়া কে জানিয়ে দিয়েছে।
জানা গেছে, ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ সাল থেকে আচার্য নিযুক্ত ভিসি নেই এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। ফলে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত উপাচার্যের অবর্তমানে অন্য কারো সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভার আইনগত কোনো বৈধতা নেই।