অর্থনীতি

শিল্পকারখানার শ্রমিকদের বেতন-বোনাস নিয়ে অনিশ্চয়তা


অর্থনীতি ডেস্ক : বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সরবরাহ বন্ধ থাকায় গ্যাস সংকটে গাজীপুরের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলে ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তাই গ্যাস বন্ধ রাখার এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন শিল্পকারখানার মালিকরা। এদিকে বেতন-বোনাস নিয়ে শ্রমিকরাও দুশ্চিন্তায় আছেন। কারখানার ক্রয়াদেশের কাজ সময়মতো শেষ করার জন্য দিনরাত কাজ করছেন শ্রমিকরা। তবে ঈদের আগে বেতন-বোনাস না পাওয়ার শঙ্কা তাদের তাড়া করছে। ১২ এপ্রিল থেকে ১৫ দিনের জন্য বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শিল্পকারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা গ্যাস না থাকায় উৎপাদন ধীরগতিতে চলছে। এতে সময়মতো ক্রেতাদের পণ্য সরবরাহ করা নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে। তাই উৎপাদন ব্যাহত হলে ঈদের আগে সময়মতো বেতন-বোনাস না পাওয়ার শঙ্কার কথা জানান শ্রমিকরা। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ না করার অনুরোধ জানিয়ে কারখানা শ্রমিকরা বলেন, ‘পণ্য উৎপাদনের স্বার্থে আমাদের সার্বক্ষণিক গ্যাস প্রয়োজন। গ্যাস না থাকলে আমাদের পণ্য উৎপাদন হবে না। ঠিকমতো শিপমেন্ট হবে না। গার্মেন্টস বন্ধ থাকলে আমরা চলব কীভাবে? আমরা তো ঠিকমতো বেতন ও বোনাস পাব না। তাই সরকারের কাছে আমাদের দাবি, যেন গ্যাস বন্ধ না করেন।’ শিল্পমালিকরা জানান, কারখানায় প্রতি বর্গফুটে ১৫ পিএসআই গ্যাসের চাপ থাকার কথা থাকলেও অনেক কারখানায় সেটি নেমে মাত্র দু-তিনে দাঁড়াচ্ছে। গ্যাসের পর্যাপ্ত চাপ না থাকায় চাহিদামতো উৎপাদন করা যাচ্ছে না। ইতোমধ্যে অনেক কারখানার উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ বিষয়ে গাজীপুর স্টাইলিশ গার্মেন্টস লিমিটেডের সিইও রোহান ঢামাইকা বলেন, ‘গ্যাস বন্ধ করলে আমাদের শিপমেন্টগুলো যথাসময়ে সম্পন্ন হবে না।’ এদিকে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতারা বলছেন, শ্রমিকদের ১৫ দিনের বেতন ও ওভারটাইম পরিশোধের তারিখ নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু টানা গ্যাস সরবরাহে বিঘœ হওয়ায় শ্রমিক ও মালিক উভয়েই বেকায়দায় পড়েছেন। বিজিএমইএ-র স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ঈদের আগে ও পরে আমাদের গ্যাস সরবরাহ নিরবচ্ছিন্নভাবে চালু রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি। এতে আমাদের শিল্পগুলো বাঁচবে।’ শিল্প পুলিশের তথ্যমতে, গাজীপুরে ৫ হাজারের বেশি শিল্পকারখানা রয়েছে, যার অধিকাংশ গ্যাসনির্ভর। এসব কারখানায় ২২ লাখের বেশি শ্রমিক কাজ করেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার পেট্রোবাংলার একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রমজান উপলক্ষে ১২ এপ্রিল থেকে পরবর্তী ১৫ দিন (বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত) ৪ ঘণ্টা শিল্প শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস ব্যবহার বন্ধ রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে। গ্যাস বিতরণ কোম্পানির ভিজিল্যান্স টিম বিষয়টি নিয়মিত তদারকি করবে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button