আন্তর্জাতিক

সুদানে জাতিগত সংঘাতে নিহত ১৬৮


আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের পশ্চিম দারফুর প্রদেশে আরব ও স্থানীয় বংশোদ্ভূত জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১৬৮ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৯৮ জন। দারফুর অঞ্চলের শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়দানে গঠিত সরকারি কো অর্ডিনেশন কমিটির মুখপাত্র অ্যাডাম রিগাল বলেন, বৃহস্পতিবার পশ্চিম দারফুরের রাজধানী জেনেনা থেকে ৩০ কিলোমিটার পূর্বের এলাকা ক্রেইনিকে আততায়ীর বন্দুক হামলায় ২ জন নিহত হন। তারপরই সেখানে দাঙ্গা শুরু হয় আরব ও স্থানীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে। পরে এই সংঘাতের জের জেনেনাতেও পৌঁছায়। প্রাদেশিক রাজধানীতে যখন এই সংঘাত এসে পৌঁছায় ততক্ষণে রীতিমতো ভয়াবহ হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। রাজধানীর আশাপাশের বেশ কিছু গ্রাম আগুনে ভস্মীভ‚ত হয়েছে। সুদানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে ধ্বংস হয়ে যাওয়া সেসব গ্রামের ছবি। সংঘর্ষে আহতদের জেনেনার প্রধান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরব মিলিশিয়া বাহিনী জাঞ্জাউইদ ওই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আহতদের ওপরও হামলা করেছে বলে এএফপিকে জানিয়েছেন হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা, সালাহ সালেহ। সুদানের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশই আরব বংশোদ্ভূত। বাকি ৩০ শতাংশ লোকজন বেজা, ফুর, নুবিয়ানসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর। দেশটির শাসনক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ আরব বংশোদ্ভূতদের হাতেই। গত শতকের ৭০ দশকে সুদানে আরব ও অনারব বংশোদ্ভূতদের মধ্যে দ্ব›দ্ব শুরু হয়। তারপর বহুবছর মোটামুটি স্থিতাবস্থা থাকার পর ২০০৩ সাল থেকে ফের শুরু হয় উভয়পক্ষের মধ্যকার সমস্যা। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক জাতিগত বৈষম্যের প্রতিবাদে ওই বছর আন্দোলন শুরু করেন সুদানের জাতিগত সংখ্যালঘুরা। আন্দোলন দমন করতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে জাঞ্জাউইদ নামে বিশেষ এক আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের লেলিয়ে দেন সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির। সুদানের উপ রাষ্ট্রপতি মোহামেদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বাধীন এই বাহিনী শুরু থেকেই জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ব্যাপকমাত্রায় হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ধর্ষণ ও নির্যাতনের মতো অপরাধ ঘটিয়ে চলেছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, কয়েক দশকের এই সংঘাতে সুদানে এ পর্যন্ত ৩ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন আরও প্রায় ২৫ লাখ মানুষ।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button