ধুমকেতু ট্রেনে ভ্লাদিমির পুতিনের বাংলাদেশ ভ্রমণে হুলুস্থুল অবস্থা!
ডেস্ক রিপোর্টার : ধুমকেতু ট্রেনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধের রেশ ফেলে বাংলাদেশ ভ্রমণ করে গেছেন বলে শোরগোল অবস্থা পড়ে গেছে দেশের নেট দুনিযায়। যিনি এই স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি বলেছেন, এরপর বাইডেন সাহেব ভ্রমন করে গেলেও আমরা টের পাব না। অবস্থাটা এরকমই। বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি টিকিট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল। এ টিকিটে গত ৫ মে ধূমকেতু এক্সপ্রেসে চড়ে রাজশাহী থেকে ঢাকা ভ্রমণ করে গেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বিষয়টি সত্যি না হলেও টিকিট তাই বলছে। ভাইরাল সেই টিকিট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে রসিকতা।রসিকতা হলেও বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখছেন নিরাপদ খাদ্য থেকে রেলওয়ের অতিরিক্ত সচিব হওয়া আলোচিত ব্যক্তিত্ব মাহবুব কবীর মিলন। তার মতে, সরকারি সিস্টেম নিয়ে রসিকতা করার কোনো অবকাশ নেই। নিজের নাম গোপন রেখে যে কেউ অন্য নামে টিকিট কাটতে পারছে বাংলাদেশে, যা অন্য কোনো দেশে করা কঠিন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও এমনটি অকল্পণীয়। এতে ভয়াবহ বিপদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘ভ্লাদিমি পুতিন সাহেব কবে আমাদের দেশে এসে রেল ভ্রমণ করে গেলেন তা আমরা কেউ জানলাম না, এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়। এভাবে চলতে থাকলে বাইডেন সাহেব এসে রেলে উঠলে সেটিও হয়তো কেউ জানতে পারবে না। প্রয়াত জর্জ ওয়াশিংটন বা উইন্সটন চার্চিল টিকিট কাটলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। ফান করলাম। কিন্তু সরকারি সিস্টেমে ফান করার কোনো অবকাশ নেই।
জগতের কোথাও পাসপোর্ট কিংবা অথরিটি কর্তৃক ভেরিফায়েড নাম ছাড়া অন্য নামে রেল টিকিট করতে পারবে না। কারণ টিকিট করার সময় সিস্টেম তা যথাযথভাবে যাচাই করেই তবে টিকিট ইস্যু করবে।
ভারতে রেল টিকিট করার আগে বিশাল এক ফর্ম পূরণ করতে হয় বলে জানি। জগতজুড়ে কেন এত কঠিন সিস্টেম। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে যাত্রীর পরিচয় বের করা যায়। কোনো ধরনের নাশকতায় যাতে জড়িত যাত্রীকে শনাক্ত করা যায়। এ ছাড়া আরও অনেক কারণ আছে।
আমাদের রেল অনলাইন ডাটা বেজ করছে কোনো রকম ভেরিফিকেশন ছাড়াই। যাত্রীকে তার নাম ও এনআইডি নাম্বার দিয়ে রেল সার্ভারে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। কিন্তু তা এনআইডি সার্ভার ভেরিফিকেশন ছাড়াই।
এনআইডি সার্ভারের সঙ্গে রেল হুক-আপ করেনি। ফলে যাত্রী রেলে রেজিস্ট্রেশন করার সময় যে কোনো নাম এবং ১৩ বা ১৭ ডিজিটের যে কোনো সংখ্যা বসিয়ে রেজি. করে টিকিট করতে পারে। যেমন ‘১১১১১১…. বা ২২২৩৩৩৩৩…..’। জর্জ বাইডেন বা ভ্লাদিমি চার্চিল, যে নামই দিন, রেজিস্ট্রেশন হয়ে রেল টিকিট কাটতে পারবেন।
এতে ভয়াবহ ব্যাপার দুটি। এক. যে কোনো নাম ও এনআইডি সংখ্যা বসিয়ে বিপদ ঘটানো। দুই. আপনার অরিজিনাল নাম ও এনআইডি নাম্বার যদি কেউ জানে, সে সেটা ব্যবহার করে টিকিট কেটে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে।
এনআইডি সার্ভার হুক-আপ না করে আন্দাজে এনআইডি নাম্বার ও নাম দিয়ে কোনো ডাটাবেজ তৈরি করে সেটি ব্যবহার করার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার সিস্টেম চালু করার কোনো অবকাশ কোনো সরকারি দপ্তরের হতেই পারে না।রেলে সাড়ে তিন মাস থাকাকালীন প্রাণান্তকর চেষ্টা করেছিলাম নির্বাচন কমিশন সার্ভারের সঙ্গে রেলের হুক-আপ করানোর জন্য। সিএনএসবিডি আমার অনুরোধে সফটওয়্যারসহ সব কিছু রেডি করে ফেলেছিল। আফসোস! রেলের কোনো সাড়া পাইনি।