রিমান্ডে পাচারকৃত অর্থের সন্ধান দিচ্ছেনা পিকে হালদার
ইন্ডিয়া থেকে মীরা নায়ার : রিমান্ডে মুখ খুলছেনা পিকে হালদার। ইন্ডিয়ার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট’ ইডি’র জিজ্ঞাসাবাদে পাচার করা অর্থ বিদেশে কোথায় কোথায় রয়েছে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেয়নি পিকে হালদার। কলকাতা লাগোয়া সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স-এর ষষ্ঠ তলায় অবস্থিত ইডির দফতরে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের প্রশ্নবানে কাহিল পি কে হালদার ও তার সহযোগীরা। মূলত পি কে হালদার কীভাবে সম্পত্তির পাহাড় গড়েছেন তার খোঁজ পেতে চাইছে ইডির তদন্তকারী কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার করে তিনি কোন কোন দেশে সেই অর্থ পাঠিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের কোথায় কোথায় তার সম্পত্তি আছে, কারখানা আছে সমস্ত কিছু খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে একটানা জেরার মুখে প্রশান্ত কুমার হালদার (পি কে হালদার) ভেঙে পড়েছেন বলে জানা গেছে। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলার পলাতক আসামি পি কে হালদারকে গতকাল শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে আটক করা হয়। তার সাথেই গ্রেফতার করা হয় তার ভাইসহ মোট ছয় জনকে। আটক হওয়াদের মধ্যে একজন নারীও আছেন।
এর আগে শনিবারই তাদের সকলকে কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তদন্তের স্বার্থে ৫ জনকে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত ইডি রিমান্ডের নির্দেশ দেয় আদালত। অন্যদিকে গ্রেফতারকৃত নারীকে ১৭ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তাদের সকলকেই আগামী ১৭ তারিখ ফের আদালতের মুখোমুখি হতে হবে। ইডির অন্য আরেকটি সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, ইডির পক্ষ থেকে প্রথমে অনলাইনে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়। যেহেতু রবিবার বিশেষ আদালত ছাড়া বাকি সব আদালতে সাপ্তাহিক ছুটি তাই আদালতের কাছে অগ্রিম আবদেন জানানো হয়েছে এবং সেখানেই ৩ দিনের রিমান্ডের আবেদনও করা হয়েছে।
ইডির পক্ষ থেকে সরকারি কোনও বিবৃতি না আসায় পিকে হালদার গ্রেফতার ইস্যুতে শুরু থেকেই দেখা যায় বিভ্রান্তি। তবে ইডির অফিসিয়াল সাইটে কিংবা ইডি সরকারিভাবে শনিবার রাত পর্যন্ত পিকে হালদারের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। কিংবা কোনও ব্রিফিংও দেয়া হয়নি।
ইডির হাতে প্রশান্ত হালদারসহ ছয় জনের গ্রেফতার হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রী ও হাবরার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, আইন আইনের পথে চলবে। এখানে কাউকে রেয়াত করা হবে না। যেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকবে, তাকে গ্রেফতার করা হবে।
পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের শনিবার যখন সিজিও কমপ্লেক্স আনা হচ্ছিল, সেই সময় যথেষ্ট বিমর্ষ লাগছিল পি কে হালদারকে। এসময় গণমাধ্যমের কর্মীরা তার কাছে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি মুখ খোলেননি। এক প্রকার মুখ লুকিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এড়িয়ে যান তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত পিকে হালদার তদন্তে সহায়তা করছে বলেই ইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, পাসপোর্ট আইনসহ একাধিক মামলা করা হয়েছে। ইডি বলেছে, ২০১৬ সালের ভারত-বাংলাদেশ প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
গত শুক্রবার অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের অন্তত ৯টি জায়গায় মূলত পি কে হালদার, পৃথ্বীশ কুমার হালদার, প্রাণেশ কুমার হালদার ও তাদের সহযোগীদের খোঁজে অভিযান চালায় ইডির কর্মকর্তারা। আর এর পরই সন্ধান মেলে পি কে হালদারসহ অন্য সহযোগীদের।