অপরাধ

দুর্নীতিতে হাবুডুবু ফেনীর জেলার- জেল সুপার

হাতেনাতে ধরল দুদক

 

 

ফেনী প্রতিনিধি : দুর্নীতিতে হাবুডুবু ফেনীর জেলার-জেল সুপারকে হাতেনাতে ধরল দুদক টিম। তবে এ ঘটনায় দুদক মামলা না করে ভুয়া বিল-ভাউচার করে টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত অভিযোগের রেকর্ডপত্র, জেল সুপার ও জেলারের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্তে আয়কর নথি এবং সহকারী প্রধান রক্ষী মনির হোসেনের ভুয়া ঠিকানা দিয়ে চাকরি করা সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে।

ফেনী জেলা কারাগারের জেলার ও জেল সুপারের বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চট্টগ্রামের বহুল আলোচিত সাবেক এসপি বাবুল আক্তার, ফেনীর বহুল আলোচিত স্বর্ণ ডাকাতি মামলার আসামি ডিবি পুলিশের সাবেক ওসি সাইফুল ইসলামসহ ১১ জনকে হাসপাতালে পেয়েছে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
তবে স্বর্ণ ডাকাতি মামলার প্রধান আসামি ফেনীর সাবেক ডিবির ওসি সাইফুল ইসলামের কারা হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে ভর্তি সংক্রান্ত কোনো তথ্য পায়নি দুদক দল।

রোববার বিকেলে ফেনী জেলা কারাগারে দুদকের নোয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুবেল আহমেদের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেন। ফেনী জেলা কারাগারের জেলার মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ও জেলা সুপারের বিরুদ্ধে জামিনপ্রাপ্ত এক বন্দীর অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক এ অভিযান চালায়।

অভিযোগে জানা যায়, ফেনী জেলা কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে বন্দীদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা, কারা ক্যানটিনে খাবারের মূল্য বেশি রাখা, বন্দীদের মোবাইল ফোনে কথা বলার জন্য সরকারি খরচের বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেয়া, কারা হাসপাতালে অসুস্থ রোগীদের ভর্তি না করে টাকার বিনিময়ে সুস্থ রোগীদের ভর্তি, বন্দীদের সরকারিভাবে বরাদ্দ খাবার না দিয়ে ভুয়া বিল-ভাউচার করে টাকা আত্মসাতের মাধ্যমে সম্পদ অর্জন করেছেন।

এ ঘটনায় দুদকের সহকারী পরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, করোনা মহামারি চলাকালে বন্দীদের সঙ্গে সারা দেশে দর্শনার্থীদের সাক্ষাৎ বন্ধ থাকলেও ফেনী কারাগারে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২/৩ হাজার টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা, কারা ক্যানটিন পরিচালনার দায়িত্ব জেলার শীর্ষ শিবির ক্যাডার লতা কামালের হাতে দিয়ে তার মাধ্যমে জামায়াত-বিএনপির আটক নেতাদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা আদায়, অসুস্থ কয়েদিদের জন্য হাসপাতাল ওয়ার্ডের সিট বরাদ্দ না দিয়ে দৈনিক চুক্তিতে টাকার বিনিময়ে সুস্থ ব্যক্তিদের সিট দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের তদন্ত করা হয়। এ ছাড়া কারা ক্যানটিনে খাবারের মূল্য বেশি রাখা, বন্দীদের মোবাইল ফোনে কথা বলার জন্য সরকারি খরচের বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেয়া, সরকারিভাবে বরাদ্দ খাবার না দিয়ে ভুয়া বিল-ভাউচার করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

অভিযান পরিচালনার সময় দুদক দেখতে পায়, কারা হাসপাতালে পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার ও স্বর্ণ ডাকাতি মামলার আসামি ডিবি পুলিশের সাবেক ওসি সাইফুল ইসলামসহ মোট ১১ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে অভিযান পরিচালনার সময় সাইফুল ইসলামের কারা হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে ভর্তি সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় কারাবন্দী তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২০২১ সালের ২৯ মে ফেনী জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। সুবেল আহমেদ জানান, ভুয়া বিল-ভাউচার করে টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত অভিযোগে রেকর্ডপত্র, জেল সুপার ও জেলারের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্তে আয়কর নথি এবং সহকারী প্রধান রক্ষী মনির হোসেনের ভুয়া ঠিকানা দিয়ে চাকরি করা সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে বিস্তারিত প্রতিবেদন কমিশনের সিদ্ধান্তের জন্য দাখিল করা হবে।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button