ঢাকায় ওয়াং ই-সিসন কোনদিকে যাবে ঢাকা!
কূটনৈতিক রিপোর্টার : শনিবার দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ওদিকে চার দিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্তর্জাতিক সংস্থা বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী মিশেল জে সিসন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আসার ঘণ্টাখানেক পর শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকায় পা রাখেন সিসন।
ক্ষমতার দৃশ্যপটে একদিকে চীন অন্যদিকে আমেরিকা। কোনদিকে যাবে ঢাকা! তা সময়েই বলে দেবে। তবে বাংলাদেশে যে দেশের স্বার্থ দেখবে তা বলাই বাহুল্য।চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে। তার সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু, চীনের সহায়তায় বিভিন্ন চলমান ও ভবিষ্যৎ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হতে পারে। অন্যদিকে ঢাকা সফরে ওয়াশিংটনের বহুপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পাশাপাশি বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে ইউক্রেন পরিস্থিতি, তাইওয়ান ইস্যু আলোচনায় আসবে।
দুই দিনের সফরে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। শনিবার (৬ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এসে পৌঁছান তিনি। ওয়াং ই কে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক। কারণ এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন কম্বোডিয়ায় একটি সম্মেলনে রয়েছেন। ৭ আগস্ট বাংলাদেশ ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন ওয়াং ই। এর পরে ৭ আগস্ট তিনি ঢাকা ছেড়ে যাবেন।
বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরটিকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগে থেকেই চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে সম্প্রতি তাইওয়ান ঘিরে নতুন করে উত্তেজনায় জড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে। তার সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু, চীনের সহায়তায় বিভিন্ন চলমান ও ভবিষ্যৎ প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
চার দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্তর্জাতিক সংস্থা বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী মিশেল জে সিসন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আসার ঘণ্টাখানেক পর শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকায় পা রাখেন সিসন।সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বাইডেন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিনিধি।কূটনৈতিক সূত্র বলছে, বাইডেন প্রশাসনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে ওয়াশিংটনের বহুপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পাশাপাশি বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে ইউক্রেন পরিস্থিতি, তাইওয়ান ইস্যু আলোচনায় আসবে। এ ছাড়া সফরকালে তিনি খাদ্য নিরাপত্তা, বিশ্বস্বাস্থ্য, মানবাধিকার ও মানবিক প্রয়োজন, শান্তিরক্ষা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গাদের সমর্থনসহ যুক্তরাষ্ট্রের বহুপক্ষীয় বিভিন্ন অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা করবেন।
জানা গেছে, বাইডেন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিনিধির সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও সরকারের আরও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও বড় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন। এ ছাড়া সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক হতে পারে সিসনের।
উচ্চ পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার বৈঠক জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার দিক নিয়ে আলোচনা হবে।
ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনেশন ইউনিয়নের পরবর্তী মহাসচিব হিসাবে ডরীন বগদান মার্টিনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের বিষয়েও আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সুশীল সমাজের সঙ্গে তার আলোচনায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে যুক্তরাষ্ট্র ও অপর দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার দিক নিয়ে আলোচনা করা হবে।ভারত, বাংলাদেশ ও কুয়েত সফরের অংশ হিসেবে ঢাকায় এসেছেন সিসন। আগামী ৯ আগস্ট বাইডেন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রতিনিধির ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।