কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগে অনিয়ম-ক্ষুদ্ধ বিভাগীয় চিকিৎসকরা
বিশেষ প্রতিনিধি : কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম অসাধুতার অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে চীফ কনসালটেন্ট, সিনিয়র কনসালটেন্ট ও জুনিয়র কনসালটেন্ট নিয়োগে তদবিরসহ ঘুষ বানিজ্যেরও অভিযোগ তুলেছেন হাসপাতালের ভুক্তভোগী চিকিৎসকরা। অভিযোগ করা হয়েছে, সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে জাল অভিজ্ঞতার সনদ দিয়েও দরখাস্ত জমা দেয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন পিএসসি’র বিজ্ঞপ্তি (১৪৮-১৭৬) অনুযায়ী গত ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে চাহিদা মোতাবেক পুলিশ হাসপাতাল সমূহে ডাক্তারদের বিভিন্ন পদে সরাসরি নিয়োগের জন্যে যোগ্য প্রার্থীদের আবেদনপত্র আহবান করা হয়। উক্ত নিয়োগে অনলাইনে আবেদন করার বিধান থাকলেও অনেকে হাতে দরখাস্ত জমা দিয়ে মৌখিক পরিক্ষায় অংশ গ্রহণের সুযোগ পেয়েছে।এক্ষেত্রে অনেকের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। বিশেষ করে বিভাগীয় প্রার্থীদের আবেদন গ্রহনে অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে অনেকে ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ জমা দিয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের সুযোগ পেয়েছে। বিশেষ করে কার্ডিওলজি বিভাগের চীফ কনসালটেন্ট এর আবেদন এর ক্ষেত্রে চরম অনিয়ম এর আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। এছাড়া পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সুপারিশ ও অর্থ লেনদেনের বিষয়টি সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে বিভাগীয় কর্মরত চিকিৎসকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।
এ অবস্থায় এ নিয়োগ স্থগিত করে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগের জন্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী চিকিৎসকরা। অন্যথায় তারা এই নিয়োগের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেবেন বলে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের নিয়োগে অনিয়ম অসামঞ্জস্যতা বিষয়ে ইতিপূর্বে ভুক্তভোগী চিকিৎসকরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন এবং নিয়োগে অসামঞ্জস্যতার অভিযোগ করে সংশোধনীর প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এতে বলা হয়, পুলিশ শাখা-২,প্রজ্ঞাপন তারিখ ২০ আগস্ট ২০২০ মূলে প্রকাশিত ‘পুলিশ বিভাগ (নন পুলিশ কর্মকর্তা) নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৯৬’ এর প্রকাশে বিলম্বতা এবং কিছু অসামঞ্জস্যতা থাকায় ২০০৫ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা বিগত ১৬ বছর পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, চীফ কনসালটেন্ট নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রেও রয়েছে ব্যাপক অসামঞ্জস্যতা। এর কারণে বাংলাদেশ পুলিশ হাসপাতাল সমূহ আধুনিকায়ন প্রকল্প ১ম পর্যায় ৭টি এর আওতায় যোগদানকারী কর্মকর্তাগন ১৬ বছর যাবত পদোন্নতি বঞ্চিত। ওদিকে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সমতায়ন না করায় জুনিয়র চিকিৎসকরা সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে জাল অভিজ্ঞতার সনদের মাধ্যমে চীফ কনসালটেন্ট হওয়ার সুযোগ করে নিচ্ছে অসাধুতার মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে। এছাড়া সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে চাওয়া হয়েছে ৫ বছরের চাকরীর অভিজ্ঞতা এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে চাওয়া হয়েছে ১০ বছরের চাকরীর অভিজ্ঞতা। একইভাবে সিনিয়র কনসালটেন্ট পদে সরাসরি নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো সামঞ্জস্যতা রাখা হয়নি।
এসব বিষয় সম্পর্কে সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতাল এর পরিচালক এডমিন এসপি এমদাদ এর যোগাযোগ করা হলে তিনি চিকিৎসক নিয়োগের সত্যতা স্বীকার করলেও নিয়োগে অনিয়ম দুর্নীতি অসামঞ্জস্যতা সম্পর্কে কোনো বক্তব্য দেননি।