বিশেষ প্রতিনিধি : ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে মঙ্গলবার ২৫ অক্টোবর। সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেতের পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আজ রবিবার (২৩ অক্টোবর) রাতে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশের দিকে মুখ করে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি।
ঘণ্টায় ১৬ থেকে ২০ কিলোমিটার গতিতে এটি বরিশাল ও চট্টগ্রামের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, গভীর নিম্নচাপটির বর্ধিতাংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যে আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলায় বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এর ফলে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং এ জেলাগুলোর অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেন, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে-এটা মোটামুটি নিশ্চিত বলা যায়। এটি ‘সুপার সাইক্লোন’ হতে পারে।তিনি বলেন, সোমবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাতের পর থেকে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
উপকূল ঘুরে জানা গেছে, আকাশে কালো মেঘ ঘনালে উপকূলবাসীর চোখেমুখেও মেঘ ঘনায়। ফের কষ্টের ফসল লবণপানিতে নষ্ট হয়ে যাবে না তো! আশঙ্কায় ফ্যাকাসে মুখ কৃষকের।২০২০ সালে আম্ফান, ফণী। তারপর ইয়াস। একের পর এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। এখন নতুন ঘূর্ণিঝড়ের আভাস উপকূলের মানুষদের ভাবিয়ে তুলছে।
আগের ঘূর্ণিঝড়ে সব তছনছ হয়ে যায়। সামান্য কিছু ত্রাণ ছাড়া আজও জোটেনি সরকারি ক্ষতিপূরণ। জোড়াতালি দিয়ে সামলে ওঠার চেষ্টা চলছে এখনো। ফের ঘূর্ণিঝড়ে যদি সব লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় তাহলে আর বাঁচার উপায় থাকবে না।
ধানক্ষেতে কীটনাশক ছিটানোর কাজ করছিলেন কলাপাড়ার আমির হোসেন। ক্ষেতে কাজ করতে করতেই এমন আশঙ্কার কথা শোনালেন মধ্য বয়সের আমির। তাঁর কথা, আতঙ্ক তো হবেই। আগের অভিজ্ঞতা তো ভালো নয়। তাই এখন বাঁচব কি মরব আল্লাই জানেন।