জাতীয়

এদেশ হত্যা ক্যু’র-যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে: হাসিনা

 

বিশেষ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র এটা তো আমাদের দেশে লেগেই আছে। আমাদের তো ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ধারা থাকে না এই দেশে। যার জন্য একটা স্থিতিশীল পরিবেশও কখনো আসেনি। যে জন্য সার্বিক উন্নতিটা ঠিক হয়নি। কাজেই যেকোনো সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তারপরও আমার প্রচেষ্টা থাকবে আমি যতটুকু আছি আমরা চেষ্টা করে যাব।আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শীতার্ত মানুষের সহায়তায় কম্বল ও শীতবস্ত্র প্রদানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডারে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া অনুদান গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

টানা তিন মেয়াদে ১৪ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় দেশের উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘২০১৪ এবং ২০১৮-তে জয়ী হয়ে এই দীর্ঘ সময় থাকাতে আজকে অন্তত বাংলাদেশের উন্নয়নটা আমরা করতে পারছি।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক এক অনুষ্ঠানে কথোপকথনের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি, রেহানা (শেখ রেহানা), প্রধানমন্ত্রী মাহাথির ও তাঁর স্ত্রী বসে এক কোনায় গল্প করছিলাম। উনি (মাহাথির মোহাম্মদ) বললেন যে, আসলে দেশের একটা উন্নতি করতে হলে একটু দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় না থাকলে উন্নতিটা ঠিকমতো হয় না, করা যায় না। এই কথাটা কিন্তু তিনি আমাকে বলেছিলেন। সরকার প্রধান বলেন, ‘আমি বললাম (মাহথির মোহাম্মদ), দেখেন জনগণ কতক্ষণ ভোট দেবে না দেবে সেটা তো বলতে পারি না। যদি ভোট পাই হয়তো থাকব। কারণ আমাদের দেশে তো পরিবেশটা অন্যরকম। দীর্ঘদিন সামরিক শাসক, কখনো সরাসরি কখনো পরোক্ষভাবে ক্ষমতা দখল করে আবার উর্দী খুলে রাজনীতিবিদ হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘হত্যা, ক্যু, ষড়যন্ত্র এটা তো আমাদের দেশে লেগেই আছে। আমাদের তো ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক ধারা থাকে না এই দেশে। যার জন্য একটা স্থিতিশীল পরিবেশও কখনো আসেনি। যে জন্য সার্বিক উন্নতিটা ঠিক হয়নি। কাজেই যেকোনো সময় যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তারপরও আমার প্রচেষ্টা থাকবে আমি যতটুকু আছি আমরা চেষ্টা করে যাব।দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খেলাধুলায় বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই খেলাধুলার ক্ষেত্রে আমার মনে হয় আমাদের সকলের বিশেষ করে আপনাদের একটু সহযোগিতা বেশি করা উচিত।’

খেলাধুলা ও সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা যদি সকলে উৎসাহিত না করি তাহলে এই ছেলেমেয়েগুলো তাদের ভবিষ্যৎ কী? তারা যত বেশি খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে থাকবে তত বেশি এই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকের থেকে দূরে থাকতে পারবে এবং দেশের উন্নতি হবে। এটা হলো বাস্তবতা।শিল্প প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাদের রয়েছে তাদের প্রতিষ্ঠানে খেলোয়াড়দের চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা।করোনা মহামারি মোকাবিলায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুভ ফলটা তো আমরা পাচ্ছি এখন। যাই হোক, যতটুকু অর্জন আমি মনে করি এটা আপনাদের সকলেরই অবদান। বাংলাদেশের জনগণের অবদান। আমি তাদেরই ধন্যবাদ জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে অনেক দিন তো হয়ে গেল। মানুষকে তো এক সময় বিদায় নিতেই হবে এটা তো আল্লাহই বলে দিয়েছেন। সেটাও আল্লাহর ইচ্ছা যেদিন যেতে হয় চলে যাব। মানে… এখান থেকেও…এই চেয়ার থেকেও চলে যাব আবার জীবন থেকেও চলে যাব। যেতেই হবে। এটা হলো বাস্তবতা। যেদিন যাওয়ার সময় হবে। আর সময় না হলে তত দিন তো কাজ করতেই হবে। আল্লাহ যতক্ষণ সুযোগ দিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। ব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট খবর

Leave a Reply

Back to top button