অপরাধজাতীয়

বিডিআর বিদ্রোহের নেপথ্য ভিডিও ফাঁস করলো জয়

বিশেষ প্রতিনিধি : এবার বিডিআর বিদ্রোহের নেপথ্য ভিডিও ফাঁস করলো জয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ন্যক্কারজনক ঘটনা ঢাকার পিলখানার বিডিআর বিদ্রোহ। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতরে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় দেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়ের সূচনা হয়। কীভাবে এ ঘটনার সূত্রপাত হয় সে সম্পর্কে সব অজানা তথ্য জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ভেরিফাইড পেজে একটি ভিডিও শেয়ার করেন তিনি। এর ক্যাপশনে বিডিআর বিদ্রোহ ও পিলখানা হত্যাকাণ্ডে সব অজানা তথ্য তুলে ধরেন। সজীব ওয়াজেদ জয় লেখেন, ২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার সব সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। বিডিআর বিদ্রোহ ও পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি বিশেষ দলের গুজব সেলের অপপ্রচার আর মিথ্যা তথ্যে ভরপুর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এই ভিডিওতে জানানোর চেষ্টা করবো অনেক অজানা তথ্য।

প্রধানমন্ত্রীর ছেলে আরও লেখেন, কারা কীভাবে পরিকল্পনা করেছে, কারা সাহস ও অর্থ যুগিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর কী ভূমিকা ছিল, কেন টার্গেট করা হলো সেনা কর্মকার্তাদের সব প্রশ্নের উত্তর জানবেন এই ভিডিও পোস্টের মাধ্যমে।
বিডিআর হত্যাকাণ্ডে অসামান্য কৃতিত্বের অধিকারী সেনা কর্মকর্তাদের হারায় দেশ; এ ক্ষতি অপূরণীয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের কোনো দেশেই রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড বা এ জাতীয় ঘটনাগুলোর সফল তদন্ত সম্ভব হয় না। তাই নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ওপর চরম দুর্ভাগ্যজনক ও অপ্রত্যাশিত এ ঘটনার দায় চাপিয়ে দেয়ার সুযোগ সীমিত। অন্ধ জনসমর্থনের কারণে হয়তো যথাযথ বিচার হবে না। তবে ঘটনার সংশ্লিষ্ট ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে একটি ধারণা অবশ্যই পাওয়া যায়।

২০০৯ সালে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ব্যাপক জনসমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগের সরকার গঠনের মাত্র ৪০ দিনের মাথায় সংগঠিত হয় বিডিআর হত্যাকাণ্ড। দীর্ঘদিন পর ক্ষমতায় এসে সরকার নিজেদেরই তখনো ঠিকমতো গুছিয়ে তুলতে পারেনি। তাই এই বিদ্রোহের সবচেয়ে সম্ভাব্য ফলাফল ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের পতন। বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে বিএনপি-জামায়াতের নানা মুখরোচক গল্প ও মিথ্যাচারেই এটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

২৫ ফেব্রুয়ারি কী ঘটেছিল-বিদ্রোহের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছিল এ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশিত হয়েছে। অনেক গণমাধ্যমে এটিকে ‘ডাল-ভাত কর্মসূচি’ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হওয়ার কথাও প্রচারিত হয়। মূলত এ ঘটনাটি ছিল সুপরিকল্পিত। বিদ্রোহের পরপরই দেয়াল টপকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন মেজর নাজমুল। সে সময়ে দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের সঙ্গে কোনো সৈনিকের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়নি। দরবার শুরু হওয়ার মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে পূর্ব, পশ্চিম ও উত্তর দিক থেকে গোলাগুলি শুরু হয়ে যায়। বিডিআর জোয়ানরা একে অপরকে বলতে থাকে অফিসারদের ধর। … ডাল-ভাত কর্মসূচি নিয়ে কিছুটা ক্ষোভ ছিল। তবে তা এতোটা ভয়ংকর রূপ নেয়ার মতো ছিল না।’

বিদ্রোহে যারা নিহত হন-দেশে জেএমবি ও জঙ্গিদের অস্তিত্বের কথা অস্বীকার করেছিলেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এবং জামায়াত নেতা নিজামী। তারা ‘বাংলা ভাই মিডিয়ার সৃষ্টি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। তবে সে সময় কর্নেল গুলজার- মুফতি হান্নান, বাংলা ভাই, শায়খ রহমান, আতাউর রহমান সানিসহ শীর্ষ জঙ্গি গ্রেফতার করলে, স্বাভাবিকভাবেই তাদের মুখে চপেটাঘাত পড়ে। মেজর জেনারেল শাকিল, কর্নেল গুলজারসহ নিহতদের মধ্যে যারা ২০০৮ এ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন

তাদের মধ্যে কর্নেল এলাহি, কর্নেল মোয়াজ্জেম, দেশের প্রথম প্যারা-কমান্ডো কর্নেল এমদাদ, কর্নেল ইনসাত, কর্নেল লতিফুর রহমান, কর্নেল নকিবুর রহমান, কর্নেল ইমাম শাখাওয়াত, লেফটেন্যান্ট কর্নেল রবি রহমান, কর্নেল এহসান, মেজর মাসুম, মেজর রফিক, মেজর খালিদ ও মেজর মাহবুব অন্যতম।এরশাদের ভাগনে ছাড়াও এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তৎকালীন আইজিপি নুর মোহাম্মদের জামাতা ক্যাপ্টেন মাজহারুল হায়দার।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button