জিতল সাকিবরা-দলে লড়াকু মনোভাব জরুরী!
স্পোর্টস রিপোর্টার : অবশেষে জিতল সাকিবরা-। এ জয়ে আছে শুধুই স্বান্তনা। তবে প্রথম ম্যাচের সাকিবরা যদি নিজেদের নামের মর্যাদা রাখার জন্যে লড়াই করতো তাহলে সিরিজটা বাংলাদেশেরই হতো। খেলার পরিসংখ্যানটা সেটাই বলে। কিন্তু সাকিবরা তাদের মান রাখতে না পারায় দেশের মানুষ শুধুই আফসোস করেছে। যাহোক সাকিবদের লড়াই করেই জেতার ধারায় ফিরতে হবে এটাই চায় দেশবাসী।
সাকিব আল হাসানের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে সান্ত্বনার জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ ইংল্যান্ডকে ৫০ রানে হারিয়েছেন সাকিব-তামিমরা। বাংলাদেশের দেওয়া ২৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৪৩.১ ওভারে ১৯৬ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংলিশরা। এতে ২০১৬ সালের পর এবারও দুই দলের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিল ইংল্যান্ড। ব্যাট-বলে দিনটা ছিল সাকিবময়। প্রথম ব্যাটিংয়ে নেমে ৭১ বলে খেলেছেন ৭৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। যার ফলে সাকিব হয়ে গেলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৪তম ফিফটি। আর বোলিংয়ে ১০ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট।
এর সৌজন্যে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৩০০ উইকেট শিকারি হয়েছেন সাকিব । ২৯৬ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আজ সিরিজের শেষ ওয়ানডে খেলতে নেমেছিলেন সাকিব। প্রথমে ফিল সল্টকে, এরপর জেসন রয়, জেমস ভিন্স এবং রেহান আহমেদকে ফিরিয়ে ৩০০ পূর্ণ করলেন এই অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশের দেওয়া ২৪৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালোই হয়েছিল ইংল্যান্ডের। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫০ রান তুলেছিল তারা। কিন্তু এরপরই ১ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়েছে তারা। ৫৪ রানে ওপেনার ফিল সল্টকে ফেরান সাকিব আল হাসান। কাভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ক্যাচ দিয়ে ৩৫ রান দিয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরেন সল্ট।
১০ম ওভারে ৫৫ রানে আউট হয়েছেন ডেভিড মালান ও জেসন রয়। ইবাদতের হাঁটুর উপরের ডেলিভারি মিড-অনে মাহমুদউল্লাহকে ক্যাচ দেন মালান। রানের খাতা খোলা হয়নি তাঁর। ১১তম ওভারের প্রথম বলেই ওপেনার জেসন রয়কে বোল্ড করেন সাকিব। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা রয় এই ম্যাচে করলেন ৩৩ বলে ১৯ রান। এর পর সর্বোচ্চ ক্রিস ওকস ৩৪ রান করেছেন। এ ছড়া সেভাবে কেউ নিজেদের মেলে ধরতে পারেননি।এর আগে শান্ত, মুশফিক ও সাকিবের ফিফটিতে বড় স্কোরেরই ইঙ্গিত দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু লোয়ার মিডল অর্ডারদের ব্যর্থতায় সেটি আর সম্ভব হয়নি। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডকে ২৪৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। ৪৮.৫ ওভারে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকেরা।
শুরুতেই দুই ওপেনারের উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ৯৮ রানের জুটিতে সেই চাপ সামলিয়ে ওঠে বাংলাদেশ। দুজনেই তুলে নেন ফিফটি। তবে ৭১ বলে ৫৩ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলে রান আউট হন শান্ত। মাঝে বোলিংয়ে এসে আদিল রশিদ তুলে নেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের উইকেট। ৯৩ বলে ৭০ রান আসে মুশফিকের ব্যাট থেকে। যখন রানের গতি বাড়ানোর প্রয়োজন, তখন নেমে রিয়াদ ৮, মেহেদী হাসান মিরাজ ৫ ও আফিফ হোসেন ১৫ রান করে ড্রেসিং রুমে ফেরেন।পাঁচে নেমে সাকিব চালিয়ে যান লড়াই। ৪৯ ওভারে আউট হওয়া সাকিব ৭১ বলে করেছেন ৭৫ রান। ওয়ানডেতে নিজের ৫২তম ফিফটি করতে মেরেছেন ৭টি চার।
এই ম্যাচেও হতাশ করল বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। লিটন দাস ও তামিম ইকবালের জুটি থেকে আসল ১ রান! রানের খাতা খোলার আগেই জস বাটলারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন লিটন। দ্বিতীয় ওয়ানডের পর তৃতীয় ওয়ানডেতেও লিটনকে শিকার বানালেন স্যাম কারান। এই ইংলিশ পেসার খেলছেন দুই ম্যাচে, আর লিটনও দুবার আউট হলেন নামের পাশে রান সংখ্যা লিখানোর আগেই।
তৃতীয় ওয়ানডেতে ৬ বলে ১১ রান করে আউট হয়েছেন তামিমও। এর আগে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছিল ৩৫ রান। এই সিরিজে প্রথম ওয়ানডেতেই সর্বোচ্চ ৩৩ রানের ওপেনিং জুটি পেয়েছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে লিটন করেছিলেন ৭ রান আর তামিমের ব্যাট থেকে আসে ২৩ রান।