বিশেষ প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এবার যেমন ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন হল, বাংলাদেশের ইতিহাসে তা ‘বিরল’; আর নতুন রাষ্ট্রপতি কর্মের মাধ্যমেই তার যোগ্যতা প্রমাণ করবেন। শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন কাদের।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন রাষ্ট্রপতি মনে প্রাণে একজন বাঙালি। গণতন্ত্র, দেশপ্রেম এর সবকিছুই তার চেতনায় আছে। রাষ্ট্রপতি নতুন এসেছেন। আমরা মনে করি, রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন যে শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক উপায়ে হয়েছে এটা দেশের বিরল ঘটনা।গত সোমবার রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন মো. সাহাবুদ্দিন। তার কাছ থেকে ‘কোনো প্রত্যাশা’ নেই বলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।
নতুন রাষ্ট্রপতি দেশের রাজনৈতিক সংকটের কোনো সমাধান দিতে পারবেন কিনা, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।এর জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি (রাষ্ট্রপতি) বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী। আজকের সঠিক পথে, তিনি সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় সঠিক ব্যক্তি। তার সম্পর্কে আমি এটুকু বলতে চাই।বাকিটা তার কর্মের দ্বারা তিনি প্রমাণ করবেন, তিনি কতটা যোগ্য।
শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের ৬১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় আওয়ামী লীগ।শেরে বাংলার অবদান স্মরণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকে অসম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন।কাদের বলেন, শেরে বাংলা ‘মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত’ একজন খাঁটি বাঙালি ছিলেন। তিনি ছিলেন অবিভক্ত বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী এবং ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের উত্থাপক। তার সবচেয়ে বড় অবদান এ দেশের কৃষক সমাজের জন্য প্রজাতন্ত্র আইন পাস করেছেন।
ঋণ সালিশি বোর্ড গঠন করে বাংলার ঋণে জর্জরিত কৃষক সমাজকে স্বস্তি দিয়ে গেছেন। তার এই অবদান বাংলার শ্রমজীবী কৃষক এখনও ভুলতে পারে না। শেরে বাংলাকে মনে পড়লে তার অবদানের কথা মনে পড়ে। তিনি কিছু কথা বলে গেছেন যেটা আমরা স্মরণ করতে পারি।শেরে বাংলার মাজার সংস্কারের ব্যাপারে পূর্ত মন্ত্রণালয়কে জানানোর কথা বলে সেতুমন্ত্রী বলেন, শেরে বাংলাকে আমরা অসম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদী নেতা, মানবতাবাদী নেতা হিসেবে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। মানবতাবাদী অসস্প্রদায়িক চেতনায় তিনি কাজ করে গেছেন।
১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরের সাতুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর, যুক্তফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী, কলকাতা সিটি করপোরেশনের প্রথম মুসলিম মেয়র এবং আইনসভার সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনেও এ কে ফজলুল হকের অবদান ছিল। ১৯৪০ সালে তিনি ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তিনি ২১ দফা দাবিরও প্রণেতা ছিলেন।১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।