স্টাফ রিপোর্টার : মহামান্য হাইকোর্টের চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও পুলিশের উপস্থিতিতে বিহারী মুসলিম ক্যাম্পের জায়গা দখল করায় চরম ক্ষোভ অসন্তোষ দানা বাঁধছে মিরপুরে। রবিবার ২৮ মে দুপুরে এনিয়ে মিরপুরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিহারীরা। পুলিশের চার এসপি ও কয়েক ভূমিদস্যু বিহারীদের এই শত কোটি টাকার জায়গা দখল করেছে বলে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
দখলবাজিতে মালিক সেজে পুলিশের বিহারী সোর্স ফাককু দালাল সাড়ে ৬ কোটি টাকা মেরে দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন ভুক্তভোগী নিরিহ বিহারীরা। বিক্ষোভকারীরা বিহারী ক্যাম্পের ইনফর্মা ফাককুর নেতৃত্বে আরও কয়েকটি বিহারী ঘর বাড়ী দখলের কথা তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন। তারা ইনফর্মা নেতা ও তার সহযোগিদের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের দাবী জানিয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগে বলেছেন, গত ১১.০৫.২০২৩ ইং তারিখে রাজধানীর পল্লবী থানাধীন মিরপুর- ১০, ব্লক- এ, রোড- ২৫, বাসা- ১, ঢাকা- ১২১৬ ঠিকানার ৫ কাঠার প্লটটি দলিল জালিয়াত চক্র কতিপয় পুলিশ সদস্যের সহযোগীতায় দখল হস্তান্তর ও বিক্রয় হয়েছে। যা আইনত অবৈধ। কারণ ওই প্লটটি মহামান্য হাইকোর্টের চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা ছিল। তা সত্ত্বেও পুলিশের উপস্থিতিতে বিহারী মুসলিম ক্যাম্পের জায়গা দখল করায় চরম ক্ষোভ অসন্তোষ দানা বাঁধছে মিরপুরে।
মিছিলটি কাফরুল থানাধীন সহকারি ভূমি কমিশনার এর কার্যালয় হতে শুরু হয় ও প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে মিরপুর-১০ এর এ ব্লকে অবস্থিত মুসলিম ক্যাম্পের সন্নিকটস্থ ডিসি ট্রাফিক মিরপুর জোনের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশী বিহারী পূণর্বাসন সংসদ (বিবিআরএ) পল্লবী থানা শাখার সভাপতি মোহাম্মদ শা’বান। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিবিআরএ এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি বাংলাদেশ (ন্যাপ বাংলাদেশ) এর কেন্দ্রীয় মহাসচিব জননেতা নেয়াজ আহমদ খান ও বিশেষ অতিথি ছিলেন বিবিআরএ এর কেন্দ্রিয় সভাপতি কাউসার পারভেজ ভুলু। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিবিআরএ নেতা শেখ ইয়াসির।
কর্মসূচিতে নেয়াজ আহমদ খান বলেন, দূর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে জাল দলিলের তদন্ত করতে হবে। পরিত্যাক্ত প্লটগুলোতে বিহারীদের পুণর্বাসন সহ সরকারি অফিস আদালত নির্মাণ করতে হবে। সমাবেশের বিশেষ অতিথি বিবিআরএ এর কেন্দ্রিয় সভাপতি কাউসার পারভেজ ভুলুু বলেন যে, মিথ্যা মামলার ভয়ে মজলুম উর্দূভাষী ক্যাম্পবাসীগণ উৎকণ্ঠিত।
নিরীহ মানুষকে ভয় দেখাতে ও প্রতিবাদ রুখতে ভূমিদস্যু ও জালিয়াত চক্র হাজারো ক্রেতা থাকা সত্ত্বেও উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে বেছে নেয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক। তিনি সরকারকে অবিলম্বে ২৫ নং রোডের ১০টি প্লটের জায়গায় বিহারীদের বহুতল ভবন বানিয়ে পুণর্বাসনের দাবী জানান।
সমাবেশে বিহারী নেতৃবৃন্দ জানান যে, শতকোটি টাকার প্লট মাত্র সাড়ে ৬ কোটি টাকায় কিনেছে পুলিশের ৪ জন এসপি/সরকারী কর্মকর্তা। বিহারী নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে ভূমিদস্যুদের সাজানো মামলায় প্লটটির উপর মহামান্য হাইকোর্টের চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও পুলিশের উপস্থিতিতে বিহারী মুসলিম ক্যাম্পের জায়গা দখলের ঘটনায় নিজেদের শংকার কথা তুলে ধরেন। বিহারী ক্যাম্পের ইনফর্মা নেতার নেতৃত্বে আরও কয়েকটি বিহারী ঘর বাড়ী দখলের কথা তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেন। তারা ইনফর্মা নেতা ও তার সহযোগিদের সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের দাবী জানিয়েছে।
কর্মসূচীতে আরো বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ জাহিদ, মোহাম্মদ রাজু, সুলতান আহমদ, আসমা বেগম, আনিসুর রহমান বেচু, টিটু ইসলাম, মোহাম্মদ ফায়সাল প্রমুখ। মিছিলে ব্যাপক সংখ্যক নারী পুরুষ ও শিশুরা অংশ গ্রহণ করেন। তাদের শ্লোগান ছিল- দূর্নীতিমুক্ত দেশ চাই, দেশপ্রেমিক নাগরিক চাই, পুলিশের দালালদের রুখে দাঁড়াও ও জালিয়াত চক্রকে গ্রেফতার কর-করতে হবে।