আমেরিকার নয়া চাল
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে নির্বাচন দাবি করে ১৪ কংগ্রেসম্যানের চিঠি
কূটনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশের মানবাধিকার ইস্যু ও ভোট নিয়ে আমেরিকার নয়া চাল দিয়েছে এবার। জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডকে ১৪ কংগ্রেসম্যান চিঠি দিয়েছেন। সেখানে তারা বাংলাদেশে জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানিয়েছেন। চিঠিতে তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের কোনো অংশ জাতিসংঘে কোনো প্রস্তাব তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করলে তা জাতিসংঘে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমেই করা হয়ে থাকে। কূটনীতিকরা কংগ্রেসম্যানদের এ ধরনের চিঠি জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপনের প্রক্রিয়া বলে অভিহিত করেছেন।
দীর্ঘ চিঠিতে তারা বলেছেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াাচ, ফ্রিডম হাউস এবং রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসহ বহু মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ভয়ভীতি, হামলা, মিথ্যা কারাদণ্ড, নির্যাতন, গুম এবং এমনকি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো বিষয়ও রয়েছে।
এসব কারণে ২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশটির তৎকালীন পুলিশ প্রধানসহ র্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।দেশটিতে গত ৬ থেকে ৮ মাসে হাজার হাজার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সমর্থনে বিক্ষোভ করেছে। এই বিক্ষোভগুলো প্রায়ই সহিংসতা, হামলার সম্মুখীন হয়েছে।
তারা আরও বলেন, আমরা অত্যন্ত সন্দিহান যে সরকার সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের অনুমতি দেবে। সহিংসতা এবং আইনের অপব্যবহার বন্ধে নিম্নে উল্লেখিত বিষয়গুলো কার্যকর করার জন্য লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডকে তারা অনুরোধ জানিয়েছেন।
এক. জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের সদস্যপদ অবিলম্বে স্থগিত করার জন্য ব্যবস্থা নিন।আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্তের ব্যবস্থা নিন। বিশেষ করে সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দেশটির সরকার যে সব ব্যবস্থা নিয়েছে।
দুই. অস্থায়ীভাবে বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) যে কোনো সদস্যকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে মোতায়েন করা বন্ধ রাখতে হবে।তিন. জাতিসংঘ বিশ্বজুড়ে বিদ্যমান নিরপেক্ষ সরকারগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ে এবং তাদের তত্ত্বাবধানে এবং পরিচালনায় বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে। এতে ভোটারদের ভয়ভীতি, ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি বা ভোটারদের ওপর হামলা প্রতিরোধের জন্য শান্তিরক্ষা বাহিনী গঠন করবে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) লেখা এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন- কংগ্রেসম্যান বব গুড, অ্যানা পলিনা-লুনা, র্যালফ নরম্যান, টম পেরি, যশ ব্রেচেন, এন্ড্রু ক্লেড, এইলি ক্রেইন, পল এ গসার, রনি এল জ্যাকসন, ব্রইন বেবিন, করি মিলস, ডাগ লামাফা, র্যান্ডি ওয়েবার ও গ্লেন গ্রোথম্যান।উল্লেখ্য, ১৪ কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষরসহ তিন পাতার একটি চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের কিছু গণমাধ্যমেও এ-সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে এর সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।