স্যাংসনের পাল্টা হুশিয়ারি-কড়া বার্তা শেখ হাসিনার
‘গোলমাল’ বাধিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা চালালে তাদের সাজা হবে
নিউইয়র্ক থেকে ইমরুল কায়েস : নির্বাচন বানচালের চেষ্টাকারীদের পাল্টা স্যাংসনের হুশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এবার বাংলাদেশের মানুষ স্যাংসন দেবে। অন্যদিকে ‘গোলমাল’ বাধিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা চালালে তাদের সাজা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘গোলমাল’ বাধিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করে অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা চালালে তাদেরকে সাজা পেতে হবে বলেও সাবধান করেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাস থেকে মানুষের জীবন রক্ষা পাবে। নিউইয়র্কে শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেলে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে আসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা! যারা এই কথাটা বলছে যে, নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করলে, তারা স্যাংসন দেবে। সেখানে আমারও কথা থাকবে, এই বানচাল করার চেষ্টাটা যেন দেশের বাইরে থেকেও না হয়। দেশের বাইরে থেকেও যদি হয়, বাংলাদেশে মানুষও স্যাংসন দিয়ে দেবে। এই কথাটা মাথায় রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবং আমি এটাও দেখতে চাই, বাইরে থেকে যেন নির্বাচন বানচালের কোনো চেষ্টা করা না হয়। শুক্রবারই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জানা হয়েছে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে দেশটি।
এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সরকার ও বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরাও থাকবেন বলে ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, বহু কিছু মোকাবিলা করেই না আমরা এখানে উঠে এসেছি। আমাদের অভ্যন্তরীণ অনেক বাঁধা, সেটা অতিক্রম করেই কিন্তু সরকারে আছি।জনগণ ভোট দেবে। জনগণ যদি আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়, তাহলে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞায় কারণে আগুন সন্ত্রাস থেকে সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষা পাবে বলে মনে করছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেরিকার স্যাংসন ঘোষণায় অন্তত মানুষের জীবনগুলি বাঁচবে। এখন ওই অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও পোড়াও- এইগুলি আর বিএনপি-জামায়াত করতে পারবে না। সেটা কিন্তু ভাল কাজ করছে একটা।সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় আসার প্রচেষ্টা করলে সাজা পেতে হবে বলে সাবধান করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব- এই স্লোগান আমার দেয়া। সংবিধানে বলা আছে, জনগণই ক্ষমতার মালিক। জনগণই রাষ্ট্রের মালিক।কাজেই এই জনগণের ক্ষমতাকে যদি অন্য কোনো পন্থা… একমাত্র নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া অন্য কোনো পন্থায় কেউ যদি ক্ষমতায় আসতে চায় তাহলে, তাদের কিন্তু সাজা পেতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা তাদের মাথায় রাখতে হবে যে, সাজা পেতে হবে। এখানে অবৈধভাবে আর ক্ষমতা দখলের সুযোগ কিন্তু নাই। কাজেই এখন একটা গোলমাল সৃষ্টি করে অবৈধভাবে কেউ যদি ক্ষমতায় আসে সংবিধান লঙ্ঘন করে, তাহলে সে শাস্তির মুখোমুখি হবে। সেকথাটা কিন্তু ভুললে চলবে না।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে (বাংলাদেশকে) গণতান্ত্রিক ধারায় এনেছি। এই ধারাটা অব্যাহত থাকবে।
জাতিসংঘের ৭৮তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে টানা পাঁচদিন ব্যস্ত সময় কাটান শেখ হাসিনা। উচ্চ নানা বৈঠক, সভা-সেমিনারে অংশগ্রহণ শেষে শুক্রবারই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী।এরপরই জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশন কার্যালয়ে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে আসেন তিনি।