চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গায় লাগেজে একটি মরদেহের আট টুকরো পড়ে থাকার ঘটনার রহস্য উন্মেচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই ঘটনায় নিহত ওই ব্যক্তির পরিচয় ও হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে সংস্থাটি। নিহত ওই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ হাসান। তার বাড়ি চট্টগ্রামের বাশখালীতে। হত্যার ঘটনায় স্ত্রী সানোয়ারা বেগম ও ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করে পিবিআই। শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর আকমল আলী রোডের একটি খাল থেকে মোহাম্মদ হাসানের খন্ডিত মাথাসহ শরীরের মূল অংশটি উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন পিবিআই পরিদর্শক মোহাম্মদ ইলিয়াস।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে যে পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে একটি লাগেজে ওই ব্যক্তির লাশের আটটি খণ্ড উদ্ধার করা হয়। তবে মাথা ও শরীরের কিছু অংশ না পাওয়ায় প্রাথমিকভাবে তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। কর্ণফুলী নদী ও সাগরের মোহনার কাছাকাছি এলাকায় খালের মুখে এক নারী লাগেজটি দেখতে পান। পরে এটি উদ্ধার করা হলে তাতে লাশের আটটি খণ্ড পাওয়া যায়। এর মধ্যে আছে দুই হাত, দুই পা, কনুই থেকে কাঁধ ও হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ। খণ্ডিত প্রতিটি অংশ ছিল স্কচটেপে মোড়ানো। পিবিআই বলছে- সম্পত্তি লিখে না দেওয়ার বিরোধকে কেন্দ্র করে স্ত্রী ও সন্তানরা মিলে ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে তারা।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম জানান, অন্তত ৩০ বছর ধরে ভুক্তভোগী হাসানের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। এসময়ে তিনি কোথায় ছিলেন তাও জানতেন না পরিবারের সদস্যরা। গত এক বছর আগে হঠাৎ তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে হাসানের নামে কিছু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। যেগুলো নিজেদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য হাসানের স্ত্রী এবং সন্তানরা চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু তিনি বিষয়টিতে রাজি ছিলেন না।
তিনি আরও বলেন, অভিযুক্তরা মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো কয়েকভাগে ফেলে দেয়, যাতে হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু পাওয়া না যায়। কিন্তু পিবিআইয়ের তদন্তে অভিযুক্তদের শনাক্ত এবং দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে নিয়ে হাসানের মরদেহের অবশিষ্ট অংশ উদ্ধারে চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় জড়িত হাসানের আরেক ছেলেসহ অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানান এসপি।