স্টাফ রিপোর্টার : টাপেন্ডাডল ট্যাবলেট হলেও এর পাওয়ার হেরোইনের মত। নেশাখোরদের কাছে এই মাদক বেশ জনপ্রিয়। ফলে চোরাচালান হচ্ছিল ভারতে থেকে। সোর্সের খবরের ভিত্তিতে এই মাদকট্যাবলেট উদ্ধার হয়। রাজধানীর একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা ১ লাখ ২১ হাজার পিস মাদক টাপেন্টাডল ট্যাবলেট জব্দ করেছে ঢাকা মেট্টো মাদক কর্মকর্তারা। একই আস্তানা থেকে মাদক ট্রেডারদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে লেনদেনের নগদ ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এ ঘটনায় দুই মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় টাপেন্টাডলে ট্যাবলেটের চালান জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়, ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। গতকাল মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর হাজারীবাগ থানার হাজী আফছার উদ্দিন রোডের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় টাপেন্টাডলে ট্যাবলেটের চালান জব্দ করা হয়েছে।
টাপেন্টাডলসহ আটক হওয়া মো.তামজীদ পাটোয়ারী ও মবিনুর রহমান।আটককৃতরা হলেন মো.তামজীদ পাটোয়ারী (২৯) ও মবিনুর রহমান (৩০)। তামজীদের বাড়ি কুমিল্লায় ও সদ্য একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস। মবিনুরের বাড়ি শরীয়তপুর, তিনিও সদ্য স্নাতক পাস।বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা মেট্রো কার্যালয় (উত্তর) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মজিবুর রহমান পাটওয়ারী।
অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, ‘মাদকগুলো ভারতের তেলেঙ্গানা ও গুজরাটের দুইটি কোম্পানি থেকে কুমিল্লা বর্ডার হয়ে দেশে আসে। পরে কুমিল্লা থেকে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় আসে। প্রশান্ত সাহা নামে একজন মাদক ব্যবসায়ী (পেশা ডাক্তার) কুমিল্লার বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে টাপেন্টাডল মাদক দেশে নিয়ে আসেন এবং বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় তামজীদ পাটোয়ারী ও মবিনুর রহমানের কাছে পাঠান। তামজীদ ও মবিনুর রহমান টাপেন্টাডল সংগ্রহ করে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় মজুত করে। তাদের রাজধানীসহ, মাদারীপুর ও বেশ কয়েকটি জেলা শহরে একাধিক ক্রেতা রয়েছে।’
ব্যথানাশক এই ওষুধকে মাদক হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, ‘এটা ব্যথানাশক ওষুধ হলেও অনেকে মাদক হিসেবে গ্রহণ করেন। যারা মাদক সেবন করেন তারাই ক্রেতা। এটি একটি ওপিয়েড মাদক হেরোইনের সেবনের পর যে অনুভূতি হয়, এটা সেবন করলে তেমনি অনুভূতি হয়। এটি দীর্ঘ দিন সেবন করলে শরীরের নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। যার কারণে এই ওষুধকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই মাদক সেবন করলে স্নায়ু দুর্বল করে এবং অন্যান্য সব মাদকের কারণে শারীরিক যেসব সমস্যা হয় এটি সেবন করলেও একই ধরনের সমস্যা হয়। একটি টাপেন্টাডল ট্যাবলেট আমাদের দেশে ১০০ টাকা করে বিক্রি হয়ে থাকে।’
ডাক্তার প্রশান্ত সাহার বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আটক দুই আসামির কাছ থেকে আমরা তার বিষয়ে জানতে পেরেছি। তার ভারতে নিয়মিত যাতায়াত আছে। তিনি ভারত থেকে এই মাদক কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে দেশে নিয়ে আসেন। পরে কুরিয়ারের মাধ্যমে এসব মাদক ঢাকায় পাঠান।’ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাদক চালান হচ্ছে তাদের সতর্ক করার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর কর্তৃপক্ষদের নিয়ে একটি ওয়ার্কশপ করেছে। তাদের আমরা বলার চেষ্টা করেছি এবং বুঝিয়েছি কি কি করা যাবে এবং কি কি করা যাবে না। তারা আমাদের পরামর্শগুলো শুনেছে এবং এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।’