জেলার খবর

আত্মীয়ের বাসায় থেকে নয়াপল্টনে

বিএনপি অফিসের সামনে সতর্ক পুলিশ-

 

স্টাফ রিপোর্টার : সরকার পতনের এক দফা দাবিতে বিএনপির ঢাকা মহাসমাবেশে অংশ নিতে এরিমধ্যে দলটির হাজার হাজার নেতাকর্মী নয়াপল্টনে জড়ো হয়েছেন। শুক্রবার বিকেল থেকে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তারা নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। তবে এ প্রতিবেদন লেখার সময় নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে থেকে নেতাকর্মীদের সরে যাওয়ার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছিল।

এ সময় সেখানে সতর্ক অবস্থান নেয় পুলিশ। সন্ধ্যার পর আনা হয়েছে দুটি জলকামান। জোরদার করা হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মতিঝিল থানার উপ-কমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, মানুষের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে নয়াপল্টনে পুলিশের সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। জনভোগান্তি না করতে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি পুলিশের আহবান জানানো হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত তারা পুলিশকে সহায়তা করবে, ততক্ষণ কিছু বলবে না পুলিশ। বিএনপি নেতাদের সাথে কথা বলেছে পুলিশ, তারাও সহায়তার জন্য ইতিবাচক কথা দিয়েছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার সময় সমাবেশের একদিন আগেই বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ পুরো নয়াপল্টন এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে। নেতাকর্মীরা বলছেন, সারাদেশ থেকে আসা বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানেই তারা সারারাত অবস্থান করবেন। সরকারের পদত্যাগের বার্তা নিয়েই তারা ঘরে ফিরবেন।

বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শেষ হয়ে এসেছে, তাই সাধারণ জনগণও রাস্তায় নেমে এসেছে। একদিন আগেই দেখছেন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের কী অবস্থা, তার মানে কাল ঢাকা শহর যে নেতাকর্মীরা দখল করে নেবে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আমারা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করতে চাই। আমরা চাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটুক।

বিএনপির কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীদের বেশিরভাগ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই চলে এসেছে। আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের আশ্রয়ে থেকেছেন। পুলিশি তল্লাশির ভয়ে তারা কেউ রাজধানীর কোনো হোটেলে অবস্থান করার ঝুঁকি নেননি।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে জড়ো হাজারও নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে, পুরো এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এদের বেশিরভাগই ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন নানা কৌশলে। দিনভর নয়াপল্টনে দেখা যায় বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল নিয়ে জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা।

তারা আরও জানান, পুলিশি গ্রেপ্তার, হয়রানি ও তল্লাশি এড়াতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা অনুসরণ করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। ঢাকায় মহাসমাবেশের উদ্দেশ্যে যাওয়া নেতাকর্মীদের দলবদ্ধভাবে না যাওয়া, হোটেল-মেসে না থাকা, স্মার্ট ফোন না ব্যবহার করাসহ নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীরা চেষ্টা করছেন সেইসব নির্দেশনা অনুসরণ করতে।

এদিকে সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই রিকশা মিছিল করেন চালকসহ নয়াপল্টনে থাকা কয়েকশ নেতাকর্মী। পায়ে হাঁটার পাশাপাশি রিকশা ভাড়া করে মিছিল করছেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন তারা। আবার অনেককে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উড়াতে দেখা যায়।

বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশের গলিতে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে কাজ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শুক্রবার বিকেলে নাইটিঙ্গেল মোড়ে ডিবি প্রধান হারুন উর রশীদ বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই দলই সমাবেশে অনুমতি পাবে। তবে স্থানের বিষয়ে দ্রুতই জানানো হবে।

রাজধানী নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় এলাকায় শুক্রবার পুলিশকে সিসি ক্যামেরা বসাতে দেখা গেছে। পুলিশ জানায়, সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোনের মাধ্যমে সমাবেশস্থলে নজর রাখা হবে। নয়াপল্টন এলাকার জন্য মোট ৬০টি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়া সাদা পোশাকে পুলিশ কর্মকর্তারা ক্যামেরা নিয়ে দায়িত্ব পালন করবেন।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button