ব্যবসায়ীরা বিশ্বাস-ঘাতক-টিপু মুন্সি
স্টাফ রিপোর্টার : সিন্ডিকেট আর মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ভাঙতে ব্যর্থ সরকারি সংস্থাগুলো। রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তা স্বীকার করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, সুশাসনের অভাব রয়েছে সবখানেই। এসময় অসাধুদের সিন্ডিকেট ভাঙতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
শীতকালীন সবজিতে বাজার সয়লাব হলেও দাম কমেনি প্রত্যাশা অনুযায়ী। উত্তরের জেলা বগুড়া থেকে আসা ফুলকপি রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে মিলছে ১০ থেকে ১৫ টাকায়। অথচ খুচরায় তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা পর্যন্ত। সরবরাহ বাড়ায় প্রতি আঁটি লাল শাক নেমেছে ৩ টাকায়। অথচ ভোক্তাকে গুণতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। শাক-সবজির দরে বিশাল এই ফারাক পুরোটাই তৈরি করছেন মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা। পুরোটাই যা বহন করতে হচ্ছে ভোক্তাদের।
এক বিক্রেতা বলেন, ১০ থেকে ১৫ টাকায় প্রতি ফুলকপি বিক্রি করছি। আরেক বিক্রেতা বলেন, আঁটিপ্রতি লাল শাক বিক্রি করছি ২ থেকে ৩ টাকায়। অপর বিক্রেতা বলেন, যারা খুচরা ব্যবসায়ী, তাদের মুনাফা বেশি হচ্ছে। আমাদের কোনও লাভ হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে এক ক্রেতা বলেন, একই বাজারে এক জায়গায় সবজির দাম ২০ টাকা বেশি। আরেক স্থানে তা সমান কম।
মধ্যস্বত্বভোগীদের এমন দৌরাত্ম্য ও সরকারি সংস্থাগুলোর নানা দুর্বলতার কথা উঠে আসে এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায়। এসময় জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, চাহিদা ও সরবরাহে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে অদৃশ্য শক্তি। পুরোপুরি যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকারও। মূলত মধ্যস্বত্বভোগীরাই বাজার অস্থির করে দিচ্ছে। সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে এটা করছে তারা।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, গ্রাম থেকে সরাসরি শহরে পণ্য আনতে হবে। এতে কৃষক লাভবান হবেন। সেই সঙ্গে ভোক্তাও কম মূল্যে জিনিস কিনতে পারবেন। এজন্য দেশে সুশাসন দরকার। সর্বোপরি রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।
এসময় বাজারে অস্থিরতার জন্য বরাবরের মতোই বৈশ্বিক মন্দার দোহাই দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি আহ্বান জানান, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে জনগণকে সিন্ডিকেট গড়ার। মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের বিশ্বাস করে আমি ভুল করেছি। জনগণের সিন্ডিকেট হলে অন্যরা আর পাত্তা পাবে না। আমাদের ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর মানুষকে সেই জ্ঞানটাই দিতে চাচ্ছে। জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। তাদের ঐক্যবন্ধ হতে হবে। আইনে ওদের কী ক্ষমতা আছে, তা জানতে হবে। তাহলেই কাজ হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি খাতের সদিচ্ছার পাশাপাশি আইনের কঠোর প্রয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরেন বিতার্কিকরা।