রাজনীতি

শেখ হাসিনা জহর চেনে

০০ প্রতিমন্ত্রী জাকিরের চ্যালেঞ্জ তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা
০০ পাঁচ মন্ত্রীসহ বহু হেভিওয়েট বাদ

 

শফিক রহমান : কথায় বলে জহুরী জহর চেনে স্বর্ণকারে চেনে সোনা। হাঁ শেখ হাসিনা নেতা চিনতে ভুল করেন না, ঠিক যেমনটি চিনতেন বঙ্গবন্ধু। জনসভার কোনায় দাড়িয়ে থাকা কোনো নেতাকে যেমন বঙ্গবন্ধু ডেকে কাছে আনতেন, ঠিক তেমনি প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনাও জহর চেনেন। এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি তাঁরই প্রতিফলন দেখালেন।

এবার সাবেক ও বর্তমান মিলে এবার পাঁচ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ বহু হেভিওয়েট কথিত দাপটের এমপি বাদ পড়েছেন মনোনয়ন থেকে। অভিযোগ আছে মাঠ জরিপে এদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক অভিযোগ গেছে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কাছে। ফলে এদের মনোনয়ন দেননি নেত্রী। তবে মনোনয়ন না পাওয়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হাসান দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেছেন, তার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেছে সবাই মিথ্যা বলেছে। তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। বরং তিনি বলেন, যারা অভিযোগ করেছে তারা দুর্নীতি, লুটপাট নারী কেলেংকারিতে এবং চাকরী দেয়ার নামে প্রতারণা করে এলাকার নিরীহ মানুষের টাকা মেরে খেয়ে এলাকায় যেতে পারেন না। তিনি মনোনয়নে তদবির করেননি বলে এমনটা হয়েছে।

এছাড়াও এবার বহু হেভিওয়েট বাদ পড়লেন আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা থেকে। বাদ পড়েছেন এখনও কার্যরত তিন প্রতিমন্ত্রী।এই তিন প্রতিমন্ত্রী হলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হাসান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

এ ছাড়াও একাদশ জাতীয় সংসদে থাকা কথিত দাপটের এমপি যশোর-২ আসনের সাবেক সেনা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, মাগুরা-১ আসনের সাইফুজ্জামান শিখর ও ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মনোনয়ন পাননি। এছাড়া বাদ পড়েছেন সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মহীউদ্দীন খান আলমগীর।

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮টি আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড। রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে ৩০০ আসনের মধ্যে এসব আসনের নৌকা প্রতীকের চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নৌকার প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। বাকি দুটি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম পরে ঘোষণা করা হবে।

চূড়ান্ত তালিকায় এসেছে অনেক নতুন মুখ। আর বাদ পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) সাইফুজ্জামান শিখর, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম, সাবেক সেনা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনসহ বেশকিছু বর্তমান এমপি, প্রতিমন্ত্রী ও সাবেক মন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদে থাকা যশোর-২ আসনের সাবেক সেনা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন, মাগুরা-১ আসনের সাইফুজ্জামান শিখর ও ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মনোনয়ন পাননি। এছাড়া বাদ পড়েছেন সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মহীউদ্দীন খান আলমগীর। পাশাপাশি বাদ পড়াদের মধ্যে আরও আছেন তিন প্রতিমন্ত্রী। যারা হলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হাসান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ।

রাজধানী ঢাকাতেও বেশ কয়েকটি আসনে প্রার্থিতায় পরিবর্তন এনেছে ক্ষমতাসীন দলটি। ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য সাদেক খানের পরিবর্তে এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। পাশাপাশি ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীনের পরিবর্তে এবার নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ। আর ঢাকা-১১ আসনে রহমতুল্লাহর পরিবর্তে নৌকার টিকেট পেয়েছেন ওয়াকিল উদ্দিন।

এদিকে, ঢাকা-৫ আসনে কাজী মনিরুল ইসলামকে এ বছর মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ। এই আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন হারুনর রশীদ মুন্না। এছাড়া ঢাকা–৪ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম। আসনটির বর্তমানে সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। আর ঢাকা-৮ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ১৪ দলের শরিক ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনকে এবার ঢাকা-৬ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ। পাশাপাশি ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকায় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে বড় ছেলে সোলায়মান সেলিমকে। আর ঢাকা-১৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন যুবলীগের নেতা মাইনুল হাসান খান। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের আগা খান।

এছাড়াও মনোনয়ন না পাওয়ার তালিকায় আছেন, টাঙ্গাইল-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সানোয়ার হোসেন, টাঙ্গাইল-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান, ফরিদপুর-১ আসনে মঞ্জুর হোসেন ও ফরিদপুর-৩ আসনের এমপি খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

চট্টগ্রাম বিভাগে বাদ পড়েছেন চাঁদপুর-১ আসনের সাবেক মন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, চাঁদপুর-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুল আমীন। পাশাপাশি চট্টগ্রাম-১ আসনে বাদ পড়েছেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা মোশাররফ হোসেন। যদিও মোশাররফ হোসেন আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন অসুস্থতার কারণে তিনি আর নির্বাচনে অংশ নেবেন না। আর চট্টগ্রাম-৪ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য দিদারুল আলমও এ বছর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি।

অন্যদিকে, বরিশাল-৪ আসনে সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথকে এ বছর মনোনয়ন দেয়নি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এছাড়াও মনোনয়ন না পাওয়ার তালিকায় আরও আছেন, বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান। সুনামগঞ্জ-১ আসনের মোয়াজ্জেম হোসেন, সিলেট-৫ আসনের হাফিজ আহম্মেদ মজুমদার ও সুনামগঞ্জ-২ আসনের জয়া সেন।

 

 

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button