বিএনপির রিজভী নরকের কীট!-তথ্যমন্ত্রী
ট্রেনে আগুন নিয়ে বিএনপি মিথ্যাচার করছে
বিশেষ প্রতিনিধি : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ট্রেনে আগুন নিয়ে বিএনপি নেতাদের মিথ্যাচার হত্যাকাণ্ডের চেয়েও নারকীয় বীভৎস ও কুৎসিত কদাকার। তিনি বলেন, বিএনপি নেতা রিজভীর মিথ্যাচার নরকের কীটের চেয়েও জঘন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা এসব ঘটনা ঘটিয়ে, নির্দেশ দিয়ে সেগুলোকে আড়াল করার চেষ্টা করে তারাও সমান অপরাধী। জনগণের দাবি এই জঘন্য, কুৎসিত, কদাকার মিথ্যাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু আগুনসন্ত্রাসী না, তাদের হুকুমদাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ের তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার সব সময় দেশে শান্তি বজায় রাখতে চায়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করতে চায়। দেশকে অস্থিতিশীল করে নির্বাচন বানচালের জন্য বিএনপি-জামায়াত ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে যেভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল এখনও একই কায়দায় সেটি করছে। গত মঙ্গলবার তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন দিয়ে নারকীয়ভাবে মা ও সন্তানসহ চারজনকে হত্যা করেছে। আগেও তারা বহু মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। এর চেয়েও জঘন্য কুৎসিত কদাকার, নারকীয় বীভৎস হচ্ছে রিজভী সাহেবদের মিথ্যাচার।
বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন ও ভোটার উপস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। প্রতিটি আসনে সাতজনের বেশি প্রতিদ্বন্দ্বী। নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। নির্বাচনবিরোধীরা যত চেষ্টাই করুক, ভোটার উপস্থিতি হবে ব্যাপক। বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে তাদের কর্মীরাই নেতাদের সহযোগিতা করছে না।’
তিনি বলেন, ‘এখন প্রশাসন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। কদিন আগে নির্বাচন কমিশন দেশের বেশিরভাগ ইউএনও এবং অর্ধেকের বেশি থানার ওসি বদলি করেছে, কয়েকজন ডিসিকে বদলি করেছে। নির্বাচনের আয়োজক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সুতরাং ভোট সুষ্ঠু করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। সরকার এই ক্ষেত্রে সর্বোতভাবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করছে।
কপ ২৮ নিয়ে আলোচনা-
এর আগে দুবাইয়ে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৮ এ দেশের অর্জন নিয়ে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন হাছান মাহমুদ। প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, ফোরামের সভাপতি কাউসার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রমুখ এ সময় বক্তব্য দেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “কপ-২৮ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত ছিলেন। তিনি সেখানে যেতে পারেননি। তার পক্ষ থেকে আমাকে পাঠিয়েছিলেন। সেখানে বাংলাদেশ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলায় যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছি, সেগুলো সেখানে প্রশংসিত হয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মোবিলিটি (জিসিসিএম) যৌথভাবে প্রধানমন্ত্রীকে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ডে’ ভূষিত করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশকে স্থানীয় অভিযোজনে সাফল্যের জন্য ‘গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে।
হাছান বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার হলেও যেভাবে এই জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলা করে এসেছে সেগুলো বিশ্বব্যাপী সব সময় প্রশংসিত হয়েছে। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীকে ২০১৫ সালে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কপ-২৮ সম্মেলনের অন্যতম প্রধান অগ্রগতি হচ্ছে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ গঠন করা, যেটি আগে ছিল না। এই সম্মেলনে সবাই জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসার বিষয়ে একযোগে একমত হয়েছে।
এ সময় নগর পরিকল্পনায় প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সংযোগ নিয়ে এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে বেশিরভাগ নগর পরিকল্পনার ক্ষেত্রে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সংযোগ ঘটিয়ে তোলা হয়নি। এ কারণে নগরগুলো ইট-পাথরের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অনেকগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সে উদ্যোগের প্রেক্ষিতে অনেকগুলো খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, খাল খননের সঙ্গে যুক্তদের চেয়েও অনেক শক্তিশালী হচ্ছে খাল দখলকারীরা। এটি একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। অবশ্যই প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সংযোগ ঘটিয়েই নগর পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। শুধু নগর পরিকল্পনা নয়, যেকোনো উন্নয়ন পরিকল্পনাই প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সংযোগ ঘটিয়ে করা প্রয়োজন।