মতিয়া চৌধুরীর আমলে সাধারন নাগরিকরা এই সুবিধাটা পেয়েছিল এবং দেখা গেছে কদিনের মাথায় বাজার দর নেমে গেছে অস্বাভাবিকভাবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রত্যাশার চেয়েও বাজার দর কমে যেত। বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ এর আমলেও সেটা দেখা গিয়েছিল।
আসমা খন্দকার : সরকারের এক সময়কার কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী সরাসরি নিজেই বাজারে গিয়ে চাল ডাল সবজিসহ প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র কিনতেন এবং কেনার ছলে বাজার দর যাচাই করতেন সরেজমিনে। এরপর এর রেশ তিনি সাজাতেন কিভাবে কার কারণে কোথায় থেকে দামটা বাড়ছে এবং এর জন্য করণীয় তা নির্ধারণ করে সোজা সাপ্টা পদক্ষেপ নিতেন।
মতিয়া চৌধুরীর আমলে সাধারন নাগরিকরা এই সুবিধাটা পেয়েছিল এবং দেখা গেছে কদিনের মাথায় বাজার দর নেমে গেছে অস্বাভাবিকভাবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রত্যাশার চেয়েও বাজার দর কমে যেত। বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ এর আমলেও সেটা দেখা গিয়েছিল। তোফায়েল আহমদও সরাসরি বাজার মনিটরিং করতেন এবং করনীয় নির্ধারন করে ফের বাজার যাচাই করতেন।
কিন্তু এরপর অনেকটা ছন্দপতন হয়েছে সরকারের মন্ত্রিসভার। কিন্তু মতিয়া চৌধুরী কিংবা তোফায়েলের মত আর কেউ পদের মর্যাদা ভুলে বাজার মনিটরিং করেন না। ফলে বাজার গরম থামছে না দীর্ঘদিন ধরে।
আর ভোক্তার কত কি বলবেন ওনারা তো ভোটের গরমের বাজারে একবারও কোনো বাজারে হানা দেননি; আর মনিটরিং তো দূরে থাক!! ভোটের আগে থেকে সেই যে বাজার গরম তা আর থামছে না।আর ভোটের পর বাজার ধারণ করেছে অগ্নিমূর্তিতে!!
ফলে বাজার গরম থামানো এবার অগ্নি পরীক্ষা সরকারের। শুক্রবার যারা বাজারে গেছেন তাদের সবাই বলেছেন, সবজির ভরা মৌসুমেও ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি নাই। বাজারে নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে মুরগি। ব্রয়লার মুরগির দাম উঠেছে ২২০ টাকা কোথাও কোথাও আড়াইশ। সোনালিকা মুরগি ৩২০ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা কেজি। কয়েকদিন আগেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। মরিচের ঝাঁলও কিন্তু কম না-২ থেকে ৩শ টাকা কেজি। এরকম বাজার গরম-কে থামাবে কে থামাবে সেই প্রশ্ন দেশের ভোটার নাগরিকদের!
এদিকে ভরা শীতের মৌসুম চললেও সবজির বাজারে উত্তাপ দেখা যাচ্ছে। শিমের দাম প্রতি কেজি ৫০ টাকা। মাছের বাজারেও ক্রেতাদের নাভিশ্বাস। রাজধানীর মুগদা ও মালিবাগ রেললাইন ঘেষা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি ২১০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০, গরুর মাংস কেজি ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগে গরুর মাংসের দাম ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও এখন তা মানছেন না ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতারা বলছেন, গরু মাংসের দাম হঠাৎ ১০০ টাকা বেড়ে গেছে। মুগদায় বাজার করতে আসা সফিকুল বলেন, ৬৫০ থেকে লাফ দিয়ে ৭৫০ টাকায় উঠেছে গরুর মাংস। নির্বাচন শেষ হতে না হতেই সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে।মাছের বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছ ৩শ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা, বড় রুই ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, পাঙাস ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০, সিলভার কার্প ১৫০ থেকে ১৮০, কই মাছ ২৪০, পাবদা ৩৫০, শিং মাছ ৪০০, শোল মাছ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে শিম ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা, ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, টমেটো ৪০-৬০, আলু নতুন-পুরান ৬০ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ ২৮০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা কেজি, পেপে ৫০-৬০, ওল ৪০-৫০ টাকা কেজি, লাউ ৯০-১০০ টাকা পিস (আকারভেদে কম-বেশি)।এদিকে বাজারে দেশি পেঁয়াজ ৯০ টাকা ও ডিম ১৩৫ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে। কাঁচামাল ব্যবসায়ী কামাল হোসেন দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, দাম কমার লক্ষণ নেই। আমরা কারওয়ান বাজার থেকে যে দরে কিনি, সেই দামের ওপরই আমাদের বিক্রি করতে হবে।