আইন আদালত

কালুপাড়ার মানিকের ভেল্কিবাজী হাইকোর্টে-প্রতারণা করে ৪বার জামিন নিয়েছে

কোর্ট রিপোর্টার : কথায় কথায় অনেকে হাইকোর্ট দেখিয়ে প্রতারণা করে বেড়ায়। এবার সত্যি সত্যিই হাইকোর্টের বিচারপতিদের হাইকোর্ট দেখিয়ে (ধোঁকা দিয়ে) জামিন নিয়েই পগার পাড় রংপুরের বদরগঞ্জের কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল হক মানিক। শুধু একবার নয় এভাবে তিনি হাইকোর্ট থেকে চারবার জামিন নিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছেন। শুধু তাই নয়, হাইকোর্টে সর্বশেষ জামিন পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পেরোতেই কারাগার থেকে বেরিয়ে যায় মানিক। এমন চালাক আসামি দেখে চেম্বার জজ তাজ্জব বনে গেছেন বলে জানিয়েছেন।

রংপুরের বদরগঞ্জের এক প্রত্যন্ত অঞ্চল কালুপাড়া। সেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদুল হক মানিক। যিনি ২০২২ সালে বদরগঞ্জে আব্দুল মজিদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি। এই মানিকই হাইকোর্টকে অভিনব কায়দায় ধোঁকা দিয়েছেন চারবার। ৮ বিচারপতি বুঝতেও পারেননি তারা কীভাবে একজন ইউপি চেয়ারম্যানের প্রতারণার ফাঁদে পড়েছেন।

মামলার এজাহারে জানা যায়, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে সরকারি কর্মচারি আব্দুল মজিদকে হত্যা করা হয় মানিক চেয়ারম্যানের গ্রামের বাড়িতে। এর পর সাজানো হয় দুর্ঘটনার নাটক।

এ মামলায় ২০২২ সালের ১১ আগস্ট হাইকোর্টে আগাম জামিন চাইতে আসলে মানিককে ৬ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ। তবে এর মেয়াদ শেষ হলে আত্মসমর্পণ না করেই ১৯ অক্টোবর তথ্য গোপন করে ফের আগাম জামিন চান মানিক। এবার অন্য বিচারপতি তাকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। কিন্তু এবারও আত্মসমর্পণ না করে পুরনো কায়দায় আরেক বিচারপতির বেঞ্চ থেকে একই আদেশ নেন তিনি।

এরই মধ্যে ৩১ মে ২০২৩ এ হত্যা মামলার চার্জশিটে ৩ নাম্বার আসামি হন মানিক চেয়ারম্যান। ১৪ নভেম্বর ২০২৩ আত্মসমর্পণ করে যান কারাগারে। তবে এ বছরের ২১ জানুয়ারি ফের বিচারপতি কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে জামিন চান আগের সব তথ্য গোপন করে। জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হন দু’দিন পরেই।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী বলেন, নিজের সব তথ্য গোপন করে জামিন নিয়েছেন মানিক চেয়ারম্যান। এসব ব্যাপারে আদালত কিছুই জানতেন না। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন রংপুর থেকে।

অবশেষে পুরো বিষয়টি নজরে আসে রাষ্ট্রপক্ষের। জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয় চেম্বার আদালতে। সব নথি দেখে হতভম্ব হয়ে আদালত মানিককে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এটা প্রমাণিত হয়েছে আদালতকে প্রতারণা করেছেন মানিক চেয়ারম্যান। বিষয়টি এখন পরিষ্কার। তাই তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এমন জালিয়াতিতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সর্বোচ্চ আদালত। বলেছেন, আত্মসমর্পণ না করলে তাকে যেন গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

 

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button