দেবদাসের স্বপ্নের বিসিএস
![](https://dainiksottokothaprotidin.com/wp-content/uploads/2024/02/highcort-dainik-sotto-kotha-protidin.jpg)
কোর্ট রিপোর্টার : অবশেষে ১৫ বছর পর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে দেবদাস বিশ্বাসের। বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার’ও ডাক পেয়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে দেবদাসের জীবন থেকে ঝড়ে যাওয়া এই ১৫ বছরের দায় কে নেবে? একই সঙ্গে তার চাকরী প্রমোশন কি হবে?
সালটা ছিল ২০০৯। এই সালে ২৯তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন দেবদাস বিশ্বাস। বিসিএস ক্যাডার হতে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) এসেছিলেন তিনি। বিপত্তি বাধে পিএসসির আজগুবি এক নিয়মে। সঙ্গে টাকা পরিশোধের রসিদ না আনায় মৌখিক পরীক্ষায় (ভাইভা) তাকে ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করে পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।
ক্ষুব্ধ হয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন দেবদাস বিশ্বাস। দীর্ঘ ১৫ বছরের আইনি লড়াই শেষে তার পক্ষে রায় দেন উচ্চ আদালত। দেবদাসের মৌখিক পরীক্ষা আয়োজনে পিএসসিকে নির্দেশ দেন আদালত। আদালতের নির্দেশনা মেনে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি পিএসসিতে তাকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনন্দ কুমার বিশ্বাসের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নম্বর-৩১৫৯/২০১১ এবং সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল নম্বর-৩০৩১/২০১৮ এর রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২৯তম বিসিএস পরীক্ষা-২০০৯-এর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থী দেবদাস বিশ্বাস, রেজিস্ট্রেশন নম্বর- ০০১৫৭৫ এর মৌখিক পরীক্ষা ২৫ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় পিএসসির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেবদাস বিশ্বাসকে সরকারি কর্ম কমিশন কর্তৃক প্রেরিত সাক্ষাৎকারপত্র এবং সাক্ষাৎকারপত্রে উল্লেখিত কাগজপত্রসহ নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। প্রার্থী নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হলে তার মৌখিক পরীক্ষা আর গ্রহণ করা হবে না এবং প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে।
জানতে চাইলে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আনন্দ কুমার বিশ্বাস দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, ‘উনি ২৯তম বিসিএসের প্রার্থী। সেসময় নিয়ম ছিল মৌখিক পরীক্ষার সময় টাকা জমা দেওয়ার রসিদ সঙ্গে আনতে হবে। তিনি সেটি না নিয়েই মৌখিক পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন। এজন্য তাকে অযোগ্য বিবেচনা করা হয় এবং তার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।এরপর দেবদাস বিশ্বাস আদালতে যান। তিনি রিট করেন। দীর্ঘদিন এ রিটের ওপর একাধিক শুনানি হয়। এরপর আদালত চূড়ান্ত রায় দেন। রায়ের কপি আমরা হাতে পাওয়ার পরই তাকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডেকেছি। উনি উপস্থিত হলে নিয়ম মেনে তার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।’
ওদিকে দেবদাস বিশ্বাস সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এজন্য তার সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করাও সম্ভব হয়নি। ২০০৯ সালে ২৯তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এরপর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়। পরে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একই বছরের জুলাইয়ে লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এতে মোট ৭ হাজার ২১৭ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। ওই বছরের ১৭ আগস্ট থেকে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।