আমরা সরকার পতন আন্দোলন করিনা কিন্ত বাধ্য করলে উপায় থাকবে না-সরকারকে হুশিয়ারি হেফাজতের
বিশেষ প্রতিনিধি : হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লামা মুফতি খলিল আহমদ কাসেমী মাওলানা মাহমুদুল হকের মুক্তি দাবি করে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। আমরা সরকার পতন আন্দোলন করি না, কিন্তু আমাদেরকে বাধ্য করলে কোনো উপায় থাকবে না।শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর বারিধারায় জামিয়া মাদানিয়াতে অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য ও করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খলিল আহমদ কাসেমী বলেন, রমজানে আত্মীয়স্বজন ও মুসলমানরা সবাই একসঙ্গে বসে ইফতার করা আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমান সরকার ইফতার মাহফিলের ব্যাপারে কোথাও কোথাও দমনমূলক নীতি গ্রহণ করেছে। যা সাম্প্রদায়িক উসকানির শামিল। দেশে কোরআন সুন্নাহর আলোকে ইনসাফভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে স্বাধীনতার সত্যিকার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। নূরানী মাদ্রাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র করা হলে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। মাওলানা মাহমুদুল হককে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। আমরা সরকার পতন আন্দোলন করি না, কিন্তু আমাদেরকে বাধ্য করলে কোনো উপায় থাকবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৬৮ হাজার গ্রাম রয়েছে। প্রত্যেক গ্রামে হেফাজতের কমিটি গঠন করতে হবে। তৃণমূল থেকে তথা; ধারাবাহিকভাবে গ্রাম, ইউনিয়ন, থানা, জেলা, বিভাগ কমিটি গঠন করে হেফাজতকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে হবে।অন্যান্য বক্তারা বলেন, জামিন পাওয়া দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার। একজন সিনিয়র নাগরিককে জামিন না দিয়ে বছরের পর বছর জেলে আটকে রাখা দেশে বিচারহীনতার প্রমাণ বহন করে।
বিচারহীনতার এই ধারাবাহিকতা আর চলতে দেওয়া যায় না। মাওলানা মামুনুল হক দেশের একজন বিশিষ্ট আলেমদ্বীন। ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল তাকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এখনো তিনি কারাবন্দি হয়ে আছেন। আমরা ঈদের আগেই মামুনুল হককে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নামে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
তারা বলেন, ইসলাম ফোবিয়ায় আক্রান্ত একশ্রেণির ধর্মবিরোধী গোষ্ঠী এ দেশের মুসলিম প্রজন্মের মন ও মানস থেকে ইসলামের ধ্যান-ধারণা চিরতরে মুছে দেওয়ার নীলনকশা বাস্তবায়নে উঠে পড়ে লেগেছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে পাঠ্যপুস্তককে। পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলাম ঘনিষ্ঠ বিষয়বস্তু বাদ দিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে ইসলামবিরোধী বিষয়ের অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সেই সব বিষয় পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দিতে হবে।
ইফতার মাহফিলে বক্তব্য রাখেন আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা আবদুল আউয়াল, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা সারওয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আজিজুল ইসলাম ইসলামাবাদী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, মুফতী মাসউদুল করীম, মাওলানা মুফতি বশির উল্লাহ, মাওলানা শওকত হোসাইন সরকার, মাওলানা বোরহান উদ্দিন কাসেমী, মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী প্রমুখ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা জসিম উদ্দীন, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা জাবের কাসেমী, মুফতী আজহারুল ইসলাম, মাওলানা গাজী ইয়াকুব উসমানী, এডভোকেট জাহাঙ্গির হোসাইন, মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা শামসুল ইসলাম জিলানী, মুফতী ফখরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা শরিফুল্লাহ, মাওলানা আফসার মাহমুদ, মাওলানা রাশেদ বিন নূর, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা সানাউল্লাহ খাঁন, মাওলানা শরিফ হোসাইন, মাওলানা এনামুল হাসান ফারুকী প্রমুখ।