ন্যাশনাল ব্যাংক লুটেরা রন-রিক কই!
অনেকে বলছেন রন-রিক বিদেশে পালিয়ে যাবার চেষ্ঠা করছেন!এজন্য নানা ফন্দি ফিকিরের আশ্রয় নিচ্ছেন। গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা পালিয়ে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।
শফিক রহমান : মানিলন্ডারিংয়ে ধরা পড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ন্যাশনাল ব্যাংক লুটেরা রন-রিক সিকদার। তাদের অবস্থান কোথায় তা কেউ জানেনা। অনেকে বলছেন রন-রিক বিদেশে পালিয়ে যাবার চেষ্ঠা করছেন!এজন্য নানা ফন্দি ফিকিরের আশ্রয় নিচ্ছেন। গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা পালিয়ে যেতে পারবেন কিনা তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রন হক সিকদার ও তাঁর ভাই ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রিক হক সিকদারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হলেও তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক বেনজীর আহমেদ দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানান, দুদকের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয় ১-এ তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে করা মামলায় রন হক ও রিক হকের বিরুদ্ধে মোট ৭১ কোটি টাকা অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, রন হকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে তিনি বিদেশে গিয়ে সাতটি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নির্ধারিত সীমার বাইরে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয় করেন। ক্রেডিট কার্ডের এই ঋণ তিনি দেশ থেকে পরিশোধ করেন। এর মাধ্যমে তিনি অর্থ পাচার করেছেন। এই অর্থ পাচারে সহযোগিতা করেছেন ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহফুজুর রহমান, সাবেক এমডি শাহ সৈয়দ আবদুল বারী ও চৌধুরী মোশতাক আহমেদ, সাবেক অতিরিক্ত এমডি এম এ ওয়াদুদ ও এ এস এম বুলবুল।
আর রিক হকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে দুদক বলেছে, তিনি ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বিদেশে ২১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় করেন। পরে দেশে ফিরে এই অর্থ পরিশোধ করেন। এর মাধ্যমে তিনি বিদেশে পাচার করেছেন।মামলার এজাহারে দুদক বলছে, ব্যাংকের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী বোর্ড সভা ছাড়া ক্রেডিট কার্ডের অর্থ ব্যয়ের সীমা বাড়ানোর সুযোগ নেই। তবে আসামিরা রন হককে অবৈধ আর্থিক সুবিধা দেওয়ার জন্য নিয়মবহির্ভূতভাবে ক্রেডিট কার্ডের অর্থ ব্যয়ের সীমা বাড়িয়েছেন।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) বরাত দিয়ে দুদক মামলায় উল্লেখ করেছে, থাইল্যান্ডে রন হক ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ২০টি ব্যাংক হিসাবের খোঁজ মিলেছে। এসব হিসাবে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে। ব্যাংকিং নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি মাসে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া বিল পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু রন হক ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক বছরের বেশি সময় বকেয়া পরিশোধ করেননি। বরং ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে তিনি খরচ অব্যাহত রাখেন।
দুদক বলেছে, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে রিক হক বিদেশে যে অর্থ ব্যয় করেছেন, নিয়ম অনুযায়ী ক্রেডিট কার্ডের ঋণের তথ্য ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। কিন্তু আসামি মাহফুজুর রহমান ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদকে না জানিয়ে কিংবা সিআইবিতে ক্রেডিট কার্ডের হালনাগাদ তথ্য অন্তর্ভুক্ত না করে রিক হক সিকদারের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের অর্থ ব্যয়ের সীমা বাড়িয়েছেন। মামলার এজাহারের তথ্য অনুযায়ী, রিক হক সিকদার ছয়টি ক্রেডিট কার্ডের নির্ধারিত অর্থ ব্যয়ের সীমার বাইরে ২১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয় করেছেন।