লাবণ্য চৌধুরী : ‘সেলিব্রিটা’য় মাতাল নারীদের মদ কেলেংকারি নেপথ্যে কোটি কোটি টাকার অবৈধ নেশার ব্যবসা চলছে গুলশান বনানীতে। বলা হচ্ছে, নেশার রাজত্ব গুলশান বনানীর আবাসিক হোটেল বাসা বাড়ি, বিউটি পার্লার ও নামধারী বিউটি স্পা’য় ওয়াইন ওম্যানে সয়লাব অবস্থা। পুলিশ ও মাদক কর্মকর্তাসহ উর্ধ্বতণদের খুশী রেখে চলছে এসব অপকর্ম। প্রায় প্রকাশ্য এসব ঘটলেও মদ নারী তাশ এই তিনেই সর্বনাশ। আর এই সর্বনাশা খেলার রমরমা মেলা এখন রাজধানী ঢাকার বেশ কিছু আবাসিক হোটেল। সেখানে সাজানো হচ্ছে নারী দেহের পসরা। প্রশাসনের চোখের সামনেই চলছে এমন রমরমা ব্যাবসা।
রাজধানী ঢাকার কাওরানবাজার, মহাখালী, ফকিরারপুল, মগবাজার, গুলশান, পুরান ঢাকার অসংখ্য আবাসিক হোটেল গুলো পরিণত হয়েছে এইসব কর্মকান্ডের আখরা। রাজধানীর টপটেরররদের চাদাবাজি, মাদক, নারী ব্যাবসা নিয়ন্ত্রিত হয় এই সব হোটেল থেকেই।গ্রামের সহজ সরল অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক মেয়েদের দেহ ব্যাবসায় বাধ্য করানোর অভিযোগও মিলছে হরহামেশাই। টিভি ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাননা এই সব হোটেলে কর্মরত কর্মকর্তারা অথবা মালিক পক্ষ।
আর এই দেহ ব্যাবসায় জড়িয়ে পরা অসহায় নারীরা জানালেন তাদের জীবণের করুণ কাহিনী। এদের অনেকেই জানান অভাবের তাড়নায় তারা এসেছেন এই পেশায়। আবার অনেকে নিজের অজান্তেই জড়িয়ে পরেছেন এইসব অসামাজিক কাজে। এদের অনেকেই বলেন, হোটেল মালিক তাদের এমন ভাবে ব্যবহার করেছেন যে ছাইলেও তারা এখন আর এই পেশা ছাড়তে পারবেন না।
রাজধানীতে প্রায় প্রতিটি থানা এলাকায় ২৫/৩০টির মতো আবাসিক হোটেল আছে। প্রশাসনের চোখের সামনেই চলছে এমন রমরমা ব্যাবসা। এসব হোটেল থেকে প্রতিমাসে থানা পুলিশ পাচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। এছাড়াও স্থানীয় ক্ষমতাসীনরাও এসব হোটেল থেকে সাপ্তাহিক, মাসিক চাঁদা নেয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আবাসিক হোটেল মালিকরা মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে থাকেন। টাকা দিয়েই প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন আবাসিক হোটেল মালিকরা।স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের নাকের ডগায় এইসব চললেও প্রশাসন নির্বিকার। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো দু’একটি অভিযান চালানো হলেও তা আই ওয়াশ ছাড়া আর কিছুই নয়।
যৌনকর্মীরা জানায়, আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার ও বয়-বেয়ারা নির্দিষ্ট কমিশনের ভিত্তিতে খদ্দের যোগাড় করে দেয় তাদের। অনেক পেশাদার যৌনকর্মী অবশ্য নিজেরাই কার্ড বিলি করে। এসব কার্ডে সাধারণত মধ্যস্থতাকারীর মোবাইল নম্বর থাকে। পার্ক, ওভারব্রিজ এলাকায় তাদের তৎপরতা বেশি।আরেক কৌশল-হারবাল চিকিৎসার নামে ভিজিটিং কার্ড বিতরণ। ফার্মগেট, শাহবাগ, কাকরাইল, মালিবাগ, মতিঝিল, সায়েদাবাদ, গাবতলী এলাকায় এ তৎপরতা বেশি।
দেখা যায়, রাজধানীর আবাসিক হোটেলের সামনে প্রতিদিন অবস্থান করে দালাল চক্র। টার্গেট করা পথচারীকে তারা ডাকে মামা বলে। কাছে এলেই ধরিয়ে দেয় ভিজিটিং কার্ড।এমতাবস্থায় পতিতাবৃত্তি বন্ধকল্পে তাদের পুনর্বাসনের বিকল্প নেই। এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেও্যা না হলে বড় ধরনের সামাজিক অবক্ষয়ের মুখে পড়তে হতে পারে।