অপরাধআন্তর্জাতিক

ভূমধ্যসাগর নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ ঢাকায়

 

অবৈধভাবে ইউরোপ নিচ্ছিল ২০ জনের একটি চক্র-

 

শাহজালাল বিমান বন্দর প্রতিনিধি : অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টার সময় তিউনিসিয়ার উপকূলে নৌকায় আগুন লেগে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ দেশে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সৌদি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে মরদেহগুলো দেশে নিয়ে আসা হয়।এ সময় মরদেহগুলো ময়না তদন্ত ছাড়াই বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিমানবন্দরে হট্টগোল করেছেন নিহতদের স্বজনরা।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি লিবিয়ার জোয়ারা উপকূল থেকে নৌকায় করে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা করে অভিবাসন প্রত্যাশীদের একটি দল। তারা তিউনিসিয়ার উপকূলে পৌঁছালে নৌকাটিতে আগুন লাগে। এ সময় নৌকায় ৫২জন আরোহী ছিলেন।

পরে ঘটনাস্থল থেকে ৪৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ২৭ জন ছিলেন বাংলাদেশি। অন্যান্যদের মধ্যে পাকিস্তানের ৮ জন, সিরিয়ার ৫ জন, মিশরের ৩ জন নাগরিক ছিলেন। নৌকাটির চালককেও এ সময় উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত ৯ জনের মধ্যে ৮ জনই বাংলাদেশি। আর অন্য একজন পাকিস্তানের নাগরিক।

নিহত বাংলাদেশিরা হলেন, মামুন শেখ, সজল বৈরাগী, নয়ন বিশ্বাস, রিফাত শেখ, সজীব কাজী, ইমরুল কায়েস আপন, মো. কায়সার ও রাসেল শেখ। এদের পাঁচজনের বাড়ি মাদারীপুরে আর তিনজন গোপালগঞ্জের। এ ঘটনায় গত ১৯ এপ্রিল ঢাকার বিমানবন্দর থানায় হত্যা ও মানবপাচার প্রতিরোধে আইনে মামলা করেন নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী। মামলায় এরই মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলাটির এজাহারে বলা হয়েছে, ২০ জনের একটি চক্র পারস্পরিক যোগসাজশে নিহতদের উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করেন। তাঁরা নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও উত্তাল সাগরে ছোট নৌকায় তুলে দিয়ে পানিতে ডুবিয়ে অভিবাসন প্রত্যাশীদের মৃত্যু ঘটান।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্লাটফর্মের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই নৌকায় থাকা আরও ১১ বাংলাদেশী দেশে ফিরেছে। তাদের মধ্যে মাদারীপুর রাজৈর উপজেলার দুজন ব্র‍্যাকের সাথে যোগাযোগ করে অভিযোগ করেছেন, ওই ৮ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় যেহেতু একটা মামলা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে বিস্তারিত উঠে আসবে আশা করছি‌।’

এদিকে নিহত বাংলাদেশিদের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানোর পর ময়না তদন্তের কথা জানানো হলে বিমানবন্দরে থাকা তাদের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা দাবি করেন, তদন্ত ছাড়াই মরদেহ দিতে হবে। বিমানবন্দর জোনের একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নিহত ৮ বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় মানবপাচার ও হত্যা মামলা হয়েছে, তাই ময়না তদন্তের জন্য মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

 

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button