অর্থনৈতিক রিপোর্টার : আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে আইনি প্রক্রিয়ায় না গিয়ে, বড় অপরাধীদের সরাসরি শাস্তি দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এসওএএস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোস্তাক খান। তিনি বলেন, কিছু বড় বড় লুটেরা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। আলোচনায় অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকারের জনসমর্থন থাকলে দেশের স্বার্থের বিষয়ে বিদেশিদের কাছে আপস করতে হয় না।
আমেরিকা-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ, রাশিয়া–ইউক্রেন সংঘাতসহ নানা ইস্যুতে বদলে যাচ্ছে বৈশ্বিক আর্থ সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামো। চীনের উত্থানসহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক শক্তির আবির্ভাব তৈরি করছে নতুন মেরুকরণ।এমন পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ধরে রাখার উপায় বের করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ ও দৈনিক বণিক বার্তা এ সম্মেলন আয়োজন করে। এতে অংশ নেন দেশ বিদেশের খ্যাতিমান অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদরা।
সম্মেলনে এসওএএস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুস্তাক খান জানান, পশ্চিমা দেশগুলোর আইনের শাসন নীতি উন্নয়নশীল অনেক দেশেই কাজ করেনি। যদি বাংলাদেশেও আইনের শাসন প্রক্রিয়ায় শৃংখলা না ফেরে, তবে সরাসরি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তাঁর মতে, অর্থপাচারকারী, ঋণ খেলাপি ও উন্নয়ন প্রকল্পের নামে অর্থ অপকারীদের আদালতে না নিয়ে, সরাসরি শাস্তি দিতে হবে।
মোস্তাক খান বলেন, ‘যারা অর্থ পাচার করছে, ব্যাংকের টাকা ফেরত দিচ্ছে না, প্রকল্পের নামে জনগণের টাকা অপচয় করছে, তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিয়ে একটা বার্তা দিতে হবে। বড় বড় কিছু অপরাধীকে চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া এভাবেই সফল হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, অর্থনীতিতে সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। তার মতে, কাঁচামাল আমদানি স্বাভাবিক রাখতে চীন, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘সরকারের যদি জনগনের চোখে বৈধতা থাকে, আত্মবিশ্বাসী হয় এবং সরকারের নীতির প্রতি জনসমর্থন যদি থাকে তাহলে দেশে বৈদেশিক অর্থনৈতিক স্বার্থরক্ষা অনেক সহজ হয়।’
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এর সংস্কার দরকার বলে মন্তব্য করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ করছি। এজন্য অনেক চ্যালেঞ্জ আসবে। পরিবর্তিত বিশ্ব ব্যবস্থাও অনেক চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়গুলো নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার।’আলোচনায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্বিক সমৃদ্ধি নিশ্চিতে তৃণমূল মানুষের উন্নয়নে জোর দিচ্ছে সরকার।