এখনো লাপাত্তা এমপি আনোয়ার-ভারতের থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের
বিশেষ প্রতিনিধি : নিখোঁজের ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মেলেনি বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনোয়ারের। পঞ্চম দফায় ব্যারাকপুরের নির্বাচনের কারণে তদন্তেও গতি আনতে পারিনি ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিজিপি অনুপম সিং অবশ্য তদন্তে ধীর গতির কথা অস্বীকার করে বলেছেন, ‘নিখোঁজ সম্পর্কিত যে অভিযোগপত্রে এমপির যে দুটি ফোন নাম্বার দেওয়া হয়েছিল সেই নাম্বার ট্রেস করে মুজাফফরপুরে তার লোকেশন পাওয়া যায়। এ ছাড়া যে গাড়িতে ওই এমপি উঠেছিলেন সেই গাড়ির চালককে জিজ্ঞাসা করেও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। যদিও তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু জানাতে চাননি ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
গাড়ি চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঠিক কী তথ্য পাওয়া গেছে সে বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনও। হাইকমিশনের সূত্রের খবর তদন্ত এখন যে পর্যায়ে রয়েছে তা প্রকাশ্যে আনলে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
এদিকে এমপি নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ব্যাপক গুজব ছড়িয়েছে কলকাতায়। সোমবার সকালে গুজব ছড়িয়ে পড়ে ক্রুজ শিপে প্রমোদ ভ্রমণে রয়েছেন আনোয়ার। বিকেলে তদন্তকারীদের একাংশের মধ্যেই তার প্রাণে বেঁচে থাকা নিয়েই ছড়িয়ে পড়ে উৎকণ্ঠা। তবে সন্ধ্যার দিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের দাবি মঙ্গলবার সকালে মধ্যেই এমপির নিখোঁজ কাণ্ডের পর্দা সরতে পারে।
এদিকে সোমবারও গোপাল বিশ্বাসের ব্যক্তিগত দুটি মোবাইল নাম্বারে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও এদিনও তার কোন উত্তর মেলেনি। রোববারের পর সোমবারও গোপালের এসআরবি জুয়েলার্সের অফিস বন্ধ পাওয়া যায়। বাড়িতে থাকলেও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাননি তিনি। সূত্রের খবর প্রশাসন কেও তদন্তে খুব একটা সহযোগিতা করছেন না গোপাল বিশ্বাস। স্বাভাবিকভাবে ওই বাংলাদেশে এমপি কোথায় আছেন সেই তদন্তে বেগ পেতে হচ্ছে তদন্তকারীদের।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরানগর থানার অন্তর্গত ১৭/৩ মণ্ডল পাড়া লেনের বাসিন্দা তার দীর্ঘদিনের পরিচিত গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে উঠেন। মূলত ডাক্তার দেখানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ওই বন্ধুর বাড়িতে আসেন এমপি আনোয়ারুল।
পরদিন ১৩ মে দুপুরে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান। কিন্তু সন্ধ্যা বেলায় ফেরার কথা থাকলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। উল্টে দিল্লি গিয়ে সেখান থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করে জানান তাকে আর ফোন করতে হবে না, দরকারে তিনি ফোন করে নেবেন গোপাল বিশ্বাসকে।
কিন্তু এরপর থেকে আর কোনভাবেই আওয়ামী লীগের ওই এমপিকে ফোনে পাওয়া যায়নি। স্বাভাবিকভাবে উৎকণ্ঠা ছাড়ায় তার বাংলাদেশের বাসায়। পাশাপাশি গোপাল বিশ্বাসও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরপরই কোন উপায়ান্তর না দেখে গত ১৮ মে শনিবার বরাহনগর থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করেন গোপাল বিশ্বাস। অভিযোগ পেয়ে বরানগর থানা তদন্তে নামে।