বিশেষ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস-২) গাজী হাফিজুর রহমান এবং উপ-প্রেস সচিব (ডিপিএস) হাসান জাহিদ তুষারের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার।বুধবার (২৯ মে) এক প্রজ্ঞাপনে তাদের নিয়োগ বাতিলের কথা জানায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।দুজনেরই চুক্তি বাতিলের প্রথম দুটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সম্পাদিত চুক্তিপত্রের অনুচ্ছেদ-৮ অনুযায়ী তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ১ জুন থেকে বাতিল করা হলো।এ বছরের ২৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস)-২ পদে নিয়োগ পান গাজী হাফিজুর রহমান। একই দিনে উপ-প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় হাসান জাহিদ তুষারকে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুই কর্মকর্তার নিয়োগ বাতিল প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দায়িত্ব পালনে কোনো প্রকার বিচ্যুতি ঘটেছে বলেই তাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। বুধবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দুই গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। সে বিষয়ে আপনারা কি আগে রিপোর্ট করেছিলেন? সেটা এখন পাচ্ছেন আপনারা।
তাদের (দুই কর্মকর্তার) বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ আছে কি না সেটা আমি জানি না। নিশ্চয়ই তাদের কর্তব্যে কোনো প্রকার বিচ্যুতি ঘটেছে। তবে সেটি কী রকম আমি জানি না।
বেনজীর ও আজিজ আহমেদের প্রয়োজন শেষ সরকারের। তাই তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে, বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনার প্রশ্নটা সঠিক হয়নি। তারা বলছে বেনজীর, আজিজ আহমেদরা আওয়ামী লীগের সৃষ্টি। আমি জানতে চাই, আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, কহিনূর, এরা কাদের সৃষ্টি? আমি জানতে চাই, দুর্নীতি লুটপাটের হাওয়া ভবন এটা কার সৃষ্টি? এসব প্রশ্নের জবাব চাই। তারা প্রশ্ন করেছে, আমিও পাল্টা প্রশ্ন করছি, রকিবুল হুদা সাবেক আইজিপি ছিলেন, চট্টগ্রামে ২৪ জানুয়ারি আমাদের নেত্রীর সভায় তাকে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছিল, হামলা করা হয়েছিল। তারা কি এসবের বিচার করেছে?
তিনি বলেন, বেনজীর আওয়ামী লীগ আমলে আমাদের আইজিপি ছিলেন। এখন তার ব্যাপারটা…এখন এটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ব্যক্তির জন্য আমরা তো একটা প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করতে পারি না। ব্যাপারটা যখন প্রকাশ্যে এসেছে তখন দুদক তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে নিশ্চয়ই মামলা করবে। যে যতটা অপরাধ, অপকর্ম করেছে তাকে ততটা শাস্তি পেতে হবে। বিএনপির আমলে তাদের কোনো নেতা, সরকারি কোনো কর্মকর্তা, পুলিশের সাবেক কোন কর্মকর্তা অপরাধের জন্য শাস্তি পেয়েছেন? শেখ হাসিনার সৎ সাহস আছে, সে কারণে তিনি দুর্নীতির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। যখনই যেটা প্রকাশ পাচ্ছে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন। সেই করোনার সময় ফেক হসপিটাল করে যারা অপকর্ম করেছিল তাদের কিন্তু আমাদের নেত্রী ক্ষমা করেননি। এখনও অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি পেতেই হবে, এখানে কোনো ছাড় নেই।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।