অপরাধস্বাস্থ্য

দুদকের খাঁচায় কালাম-সাবরিনা

স্বাস্থ্য'র লুটেরাদের বিরুদ্ধে মামলা

 

 

 

লাবণ্য চৌধুরী : করোনা চিকিৎসায় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক চিকিৎসক ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইনসহ সাতজনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১০ জুলাই) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
বাকি আসামিরা হলেন- জেকেজি হেলথ কেয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুল চৌধুরী (৪০), জেকেজি হেলথ কেয়ারের ষ্টাফ আ.স.ম সাঈদ চৌধুরী (৪৭), হুমায়ুন কবির ওরফে হিমু (৩৪), তানজিনা পাটোয়ারী (২৫) ও জেকেজি হেলথ কেয়ারের স্বত্ত্বাধিকারী জেবুন্নেসা রিমা।

দুদকের করা মামলা থেকে জানা যায়, ১ নং আসামি ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইন জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট এর কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত থাকাকালে অসৎ উদ্দেশ্য এবং কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে জেকেজি হেলথ কেয়ার নামক একটি লাভজনক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পরিচয় ব্যবহার করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অন্যান্যদের যোগসাজশে অভিজ্ঞতাহীন, নিবন্ধনবিহীন, ট্রেডলাইসেন্সবিহীন তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর ওভাল গ্রুপের নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারকে কোভিড-১৯ এর নমুনা সংগ্রহের জন্য অনুমতি পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন।

বিনামূল্যে বুথ থেকে করোনার স্যাম্পল কালেকশনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নিয়ে বুথ থেকে স্যাম্পল কালেকশন না করে আসামি ডা. সাবরিনা শারমিন ও তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর নির্দেশে তার অফিসের কর্মীগণ বাড়ি বাড়ি গিয়ে টেষ্ট ফি হিসেবে প্রতিটি টেষ্টের জন্য আনুমানিক ৫,০০০-৮,০০০ টাকা গ্রহণ করে তা যথাযথভাবে পরীক্ষা না করে ভুয়া ও জাল রিপোর্ট (আনুমানিক ১৫,৪৬০ টি) প্রস্তুত করে তা সেবা গ্রহীতাদের নিকট সরবরাহ করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ পূর্বক আত্মসাৎ করেন। এছাড়া সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি এবং লকডাউন চলাকালীন বিগত ১ এপ্রিল ২০২০ হতে ৩০ জুন ২০২০ সময়ে লকডাউনের মধ্যে মাত্র ৩ মাসে ওভাল গ্রুপ এবং এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ভেলবিল সিকিউরিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিঃ এর ব্যাংক একাউন্টসমূহে ১ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৭ টাকা জমা হয়। যা করোনা টেষ্টের টাকা মর্মে প্রতিয়মান হয়।

এছাড়া তিনি প্রতারণা ও জালিয়াতির উদ্দেশে নিজের জন্মতারিখ পরিবর্তন করে দুটো সচল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে তা দিয়ে দুটো ভিন্ন টিআইএন নম্বর খোলেন এবং প্রকৃত জন্মতারিখ ১৯৭৮ কে ১৯৮৩ বানিয়ে তার কর্মস্থলে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে চাকুরির মেয়াদ ০৫ বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে অসৎ উদ্দেশে সরকারি চাকুরীর সুযোগ-সুবিধা অবৈধভাবে গ্রহণের অপচেষ্টা করেন। আসামিগন সরকারি কর্মচারী হিসেবে কর্মরত থেকে অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার উদ্দেশে ভুয়া ও জাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে তা সংশ্লিষ্ট সেবা গ্রহীতাদের নিকট সরবরাহ করে করোনা মহামারী সময়ে জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রমণ বিস্তার ঘটিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে দন্ডবিধি’র ১৬৮/৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় আসামিদের বিরুদ্ধে বর্ণিত ধারায় দুদক, সজেকা, ঢাকা-১ এর মামলা নং-১১ তারিখ ১০/০৭/২০২৪খ্রি. দায়ের করা হয়।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button