জাতীয়

‘এই ছাইভস্ম থেকেই আগুন হয়ে জেগে উঠব’

 

 

স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে মোমবাতি প্রজ্বালন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করেছেন একদল সংস্কৃতিকর্মী। এতে নেতৃত্ব দেন সংস্কৃতিকর্মী ও অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী। বুধবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্বালন এবং নীরবতা পালন করা হয়।এ সময় রোকেয়া প্রাচী বলেন, আজ আমরা সবাই এখানে একত্রিত হয়েছি, কারণ বাংলাদেশ পুড়েছে। আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি, কারণ আমাদের ১৯৭১ পুড়েছে। আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি, কারণ আমাদের বঙ্গবন্ধুর ছবি পুড়েছে।

ধানমন্ডির ৩২ পুড়েছে। আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি বাংলাদেশ পুড়েছে বলে। আমরা এখানে কোনও রাজনীতির কথা বলতে আসিনি। বাংলাদেশ আমাদের সবার।তিনি বলেন, আমরা এখানে শোক প্রকাশ করতে এসেছি শান্তিপূর্ণভাবে। আমরা বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা করি। তিনি আমাদের জন্য এই বাংলাদেশ দিয়েছেন, সংবিধান দিয়েছেন। এই ৩২ যখন পুড়েছে, তখন আমাদের মনে হয়েছে আমরা পুড়েছি। আমরা ধানমন্ডি ৩২-এ দাঁড়িয়ে সারা বিশ্বের এই মহানায়কের কাছে ক্ষমা চাইছি, আমরা লজ্জিত, বাঙালি জাতি আজ লজ্জিত।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সংস্কৃতি কর্মীদের মোমবাতি প্রজ্বলনজাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে সংস্কৃতি কর্মীদের মোমবাতি প্রজ্বলন
রোকেয়া প্রাচীর ওপর হামলাধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শোকদিবস উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বালন ও নীরবতা পালনের সময় রোকেয়া প্রাচীর ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৩০-৩৫ জনের একটি দল লাঠিসোঁটা নিয়ে তার ওপর হামলা করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

জানা গেছে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী রোকেয়া প্রাচী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গেলে আরও ৭০-৮০ জন সংস্কৃতিকর্মী তার সঙ্গে যোগ দেন। সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালনের আয়োজন চলাকালে সেখানে ৩০-৩৫ জন যুবক উপস্থিত হয়।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একদল লোক লাঠিসোঁটা হাতে ৩২ নম্বরে হাজির হয়। তারা হুমকি দিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর করে। রোকেয়া প্রাচী সেটি ঠিক করতে গেলে লাঠি দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়। তিনি লুটিয়ে পড়লে সহশিল্পীরা তাকে উঠিয়ে নিয়ে সেখান থেকে দ্রুত বের হয়ে যান।

হামলার বিষয়ে রোকেয়া প্রাচী বলেন, সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আমাদের ওপরে অতর্কিত হামলা হয়। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। হঠাৎ আমাদের ঘিরে ধরে বেধড়ক পেটানো হয়।গুরুতর আহত হওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেন, যারা পিটিয়েছে তারা আমাকে টার্গেট করে এসেছে। প্রত্যেককে আমার শিক্ষিত মনে হয়েছে। তারা খুব শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেছে। তাদের কথাবার্তা শুনেই বুঝেছি তারা দুষ্কৃতকারী নন।

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে অবস্থান নিয়ে রোকেয়া প্রাচী তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, আছি ধানমন্ডি ৩২। হোক সব হত্যার, সব নৈরাজ্যের বিচার।তিনি আরও লিখেছেন, ‘বিচার হোক বাঙালির ইতিহাস হত্যার, আছি। আমরাও বিচার চাই। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে স্মরণ করবো স্বাধীনতা এবং বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস। আছি পুড়ে যাওয়া ৩২-এ।

এর আগে ফেসবুকে রোকেয়া প্রাচী ঘোষণা দেন, ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে মিছিল নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে উপস্থিত হওয়ার। একটি ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, আমরা জেগে উঠবো এই ধ্বংস থেকে। জেগে উঠবো আগুনে পোড়া ৩২-এর এই ঘর থেকে। জেগে উঠবো নিভে যাওয়া ছাই থেকে। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভেবেছো সব সাহস পুড়েছে? পুড়েছো তোমরা! আমরা বাঙালি এই ছাইভস্ম থেকেই উঠবো আবার আগুন হয়ে জেগে! জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button