Uncategorized

‘মব ট্রায়ালের মাধ্যমে সুযোগসন্ধানী শক্তির উপদেষ্টা পরিষদ গঠন হয়েছে:জবির ১৫ সমন্বয়ক

জবি প্রতিনিধি : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ সমন্বয়ক। শনিবার যৌথ বিবৃতিতে নিজেদের সরে দাঁড়ানো ঘোষণা দেন ১৪। আর ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে আরেক সমন্বয়ক মো নূর নকী সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বলে বাংলা একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। যৌথ বিবৃতি দেওয়া সমন্বয়করা হলেন ইভান তাহসীব, কিশোর সাম্য, সিয়াম হোসাইন, অরুণাভ আশরাফ, মুজাহিদ বাপ্পি, শওরীন হাসান ইরা, নাজমুল হাসান, ফয়সাল মুরাদ, মুগ্ধ আনন, খাদিজা তুল কুবরা, কামরুল হাসান রিয়াজ, কাজী আহাদ, আপেল মৌলানা, যুবায়ের আহমেদ শাফিন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, আমরা লক্ষ করছি, সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অথবা আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে অনেক অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানো হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও এর ব্যতিক্রম নয়। ৫ আগস্টের পর থেকেই অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে, যার দায় এসে পড়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর।

এতে আরও বলা হয়, সমন্বয়কদের মধ্যে কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই মব ট্রায়ালের মাধ্যমে একটা উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়েছে, যার নজির সারা দেশে আর কোনো ইউনিটে নেই। সমন্বয়কদের আবার উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের প্রয়োজন পড়লো কেন? আর কাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে এই উপদেষ্টা পরিষদ?… সুযোগসন্ধানী শক্তির উপদেষ্টা পরিষদ আমরা কখনোই সমর্থন করিনি।

তারা আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও অন্যতম সমন্বয়ক মাসুদ রানার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ও স্বেচ্ছাচারিতা লক্ষ করা যায়। …সমন্বয়কদের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ছাত্রলীগের অনুগতদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন ও নতুন কমিটি প্রণয়নের সিদ্ধান্ত মাসুদ রানার ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে কি না, আমরা সেই প্রশ্ন রেখে যাচ্ছি।’

জবির ‘হল উদ্ধার আন্দোলন’কে আত্মঘাতী কর্মসূচিকে দাবি করে তারা বলেন, ‘দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে জবির ‘হল উদ্ধার আন্দোলন’ একটা আত্মঘাতী কর্মসূচি বলেই আমরা মনে করি। এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার স্থানীয় ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে, যা মোটেই কাম্য নয়।’

সমন্বয়ক নূর নবীর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলার অভিযোগ তুলে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘১৫ আগস্ট রাতে ক্যাম্পাসে সমন্বয়ক নূর নবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলেন।… যেখানে সারা দেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহ্বান করা হয়েছে কোনও প্রকার সহিংসতায় না জড়াতে, সেখানে একজন সমন্বয়কের এমন আচরণ কোনোভাবেই আন্দোলনের স্পিরিটের সঙ্গে যায় না বলে আমরা মনে করি।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সমন্বয়কদের কোনো প্রকার পরামর্শ ছাড়াই ডিসি অফিসে বসে আবু বকরের মধ্যস্থতায় একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই লিয়াজোঁ কমিটির প্রয়োজনীয়তা কী? ডিসি অফিসে এ রকম লিয়াজোঁ কমিটি গঠনের নজির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে অন্য কোথাও নেই। আমরা মনে করি, এর মাধ্যমে কতিপয় স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সুবিধাভোগ ছাড়া ফলপ্রসূ কোনও কর্মকাণ্ড সম্পাদন সম্ভব নয়।’

প্ল্যাটফর্মের আর প্রয়োজনীয়তা থাকছে না

এ বিষয়ে সমন্বয়ক কিশোর সাম্য বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করা হয়েছে, আমরা মনে করি, এই প্ল্যাটফর্ম এসব সমর্থন করে না। এসব কর্মকাণ্ডের ফলে প্ল্যাটফর্মটি গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। তাই আমরা মনে করছি, এই সময়ে এসে এই প্ল্যাটফর্মের আর প্রয়োজনীয়তা থাকছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আসলে কী ঘটেছে, ঘটছে, সেটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে জবাবদিহির জায়গা থাকে। আর আমরা এই প্ল্যাটফর্মে থাকছি না, এটা ক্লিয়ার। কারণ, এখানে এখন পেশিশক্তির ব্যবহার হচ্ছে। অথচ পেশিশক্তির বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছিলাম।’

Back to top button