নাফিজ সরাফাতকে চিত্রায়িত করা ওই কার্টুনে নাভির জায়গায় দেখা যায় ব্যাংকের প্রতীক সিন্দুকের হাতল। তাতে ক্যাপশন ছিল, ‘আমি চৌ নাফিজ সরাফাত/ জানি ব্যাংক খাওয়ার ধারাপাত!’ ২০২০ সালের ২ মে কার্টুনিস্ট কিশোর ও ৪ মে কার্টুনের ক্যাপশন লেখক মুশতাক আহমেদকে তুলে নেওয়া হয়।
শফিক রহমান : দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম লুটেরা চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এখনো বহাল তবিয়তে! তাকে গ্রেফতারের যেন কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছ। বলা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে ব্যাংক দখল ও শেয়ারবাজার থেকে টাকা লুটপাটের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে সিআইডিও তদন্ত করছে বলে জানা গেছে। দুদক নাফিজ সরাফাত ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ এবং এস আলম গ্রুপের ইসলামী ব্যাংক দখল করে নেওয়ার অভিযোগেরও তদন্ত শুরু করেছে বলে দুদক সূত্র দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে জানিয়েছেন।
এই সেই লুটেরা যিনি সাবেক ব্যাংকার চৌধুরী নাফিজ সরাফাত পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান রেইসের মালিকানার সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়া তাঁর মোবাইলের টাওয়ার কোম্পানি, বিদ্যুৎ কোম্পানি, তারকা হোটেল ব্যবসা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, গণমাধ্যমসহ নানা ব্যবসা রয়েছে।
দুদকের এক পরিচালক দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত পুলিশ ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সহায়তা নিয়ে পদ্মা ব্যাংক দখল করেছিলেন। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে শেয়ারবাজার থেকে ৮০০ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের বিরুদ্ধে পদ্মা ব্যাংক দখল ও শেয়ারবাজার থেকে টাকা লুটপাটের অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁর এসব অনিয়ম নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সাবেক ফারমার্স (বর্তমানে পদ্মা) ব্যাংক গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে ২০১৭ সালে পদ ছাড়তে বাধ্য হন ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। এরপরই ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংকটির নাম পাল্টানো হয়। নাম দেওয়া হয় পদ্মা ব্যাংক। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত।
চৌধুরী নাফিজ সরাফাত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দণ্ড-সুদ, জরিমানা মওকুফসহ বিভিন্ন ছাড় পায় পদ্মা ব্যাংক। এরপরও ব্যাংকটি ধুঁকছে। ২০২৩ সালের শেষে পদ্মা ব্যাংকের ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণই ৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। ফলে ঋণ থেকে যে আয় হয়, তা দিয়ে আমানতের সুদ পরিশোধ করা সম্ভব হয় না। ব্যাংকটি বড় অর্থের লোকসান গুনছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে ১৯৯৯ সালে চাকরিজীবন শুরু করেন চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। বিদেশি এ ব্যাংকে থাকার সময় হঠাৎ করেই বেসরকারি আইএফআইসি ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক হন তিনি। এক ব্যাংকে চাকরি আর অন্য ব্যাংকে পরিচালক—এমন প্রশ্ন ওঠার পর তিনি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দেন। ২০০৮ সালে তিনি যোগ দেন আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকে। হন কনজ্যুমার ব্যাংকিংয়ের প্রধান। ভিজিটিং কার্ডে তিনি নিজের পরিচয় ‘এমডি, কনজ্যুমার ব্যাংকিং, আইসিবি গ্লোবাল হোল্ডিংস’ ব্যবহার করতেন।
তার আগেই চৌধুরী নাফিজ সরাফাত একটি মিউচুয়াল ফান্ডের লাইসেন্স নেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে। লাইসেন্সের জন্য প্রথমে নিজের নামে আবেদন করেছিলেন। যেহেতু ব্যক্তির নামে লাইসেন্স দেওয়া হয় না, তাই বিএসইসি সদস্য মোহাম্মদ আলী খানের পরামর্শে পরে তিনি কোম্পানি গঠন করেন। এ কোম্পানিরই নাম বাংলাদেশ রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, যাতে তাঁর মালিকানা ২৫ শতাংশ। বাকি মালিকানা অন্য অংশীদার হাসান ইমামের। বিএসইসিতে তখন থেকে যাঁরা চাকরি করতেন, তাঁরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকেই বিভিন্ন খাতের অন্যতম প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন নাফিজ সরাফাত। শুরুতে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন। পরে তাঁর সখ্য গড়ে ওঠে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের সঙ্গে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্কের চিত্র গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। নাফিজ শেখ হাসিনাকে ‘ফুফু’ বলে সম্বোধন করতেন। আর সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল কে বলতেন ‘চাচা’।
আর এভাবে ফুফু ও চাচার নাম ভাঙ্গিয়ে মাত্র ১৩ বছরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাংক, পুঁজিবাজার, বিদ্যুৎ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, গণমাধ্যমসহ আরও কিছু খাতে রহস্যজনক ব্যবসা সাজিয়ে হাজার কোটি টাকা লুটপাট চালান নাফিজ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, তিনি মালিক হন হাজার কোটি টাকার। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নাফিজ সরাফাতের সম্পদ অনুসন্ধান করতে দুদক তিন সদস্যের দল গঠন করে অনুসন্ধান করছে।
নাফিজ সরাফাত পুঁজিবাজারে নেমে ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড দিয়ে রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের যাত্রা শুরু করান। বর্তমানে মেয়াদি ও অমেয়াদি মিলিয়ে রেসের ফান্ড রয়েছে ১৩টি।
১০টি ফান্ডের সর্বোচ্চ মেয়াদ ১০ বছর ছিল। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও এগুলোর অবসায়ন হয়নি, নাফিজ সরাফাতের তদবিরে বরং আরও ১০ বছর বেড়েছে। তখন বিএসইসির চেয়ারম্যান ছিলেন এম খায়রুল হোসেন। তিনি বলেন, তহবিলগুলোর মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব শুরুতেই আমি নাকচ করে দিয়েছিলাম। প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তখন চিঠি দিয়ে বললেন, এটা দেওয়া যায়। তখন দিতে হয়েছিল। মুষ্টিমেয় লোককে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে পুঁজি লুণ্ঠনের সুযোগ করে দেওয়া যে পদত্যাগী শেখ হাসিনা সরকারের বৈশিষ্ট্য, তা আমাদের পর্যবেক্ষণে এসেছে। নাফিজ সরাফাত তাঁদেরই একজন।তিনি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ন্যাশনাল টি কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নির্বাচিত হন ২০২১ সালে। গত ৩০ জুন শেষে রেস পরিচালিত তহবিলগুলোর ক্রয়মূল্যে সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মাধ্যমে গত জুন থেকে রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের তহবিলগুলোর ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত রয়েছে। বেস্ট হোল্ডিংসকে সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বাজারে আনার পাশাপাশি ছোট প্রতিষ্ঠান কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের আইপিও অনুমোদনেও তদবিরে নেমেছিলেন নাফিজ। কপারটেকের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় নিরীক্ষক আহমেদ অ্যান্ড আখতারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল তখন ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)।
নাফিজ সরাফাত এফআরসিতে তদবির করতে এসেছিলেন জানিয়ে সংস্থাটির তৎকালীন চেয়ারম্যান সি কিউ কে মুসতাক আহমেদ বলেন, এ কোম্পানির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি না হওয়া সত্ত্বেও তিনি কেন এসেছেন, জানতে চেয়েছিলাম। অন্য ধরনের কিছু থাকতে পারে, সন্দেহ হওয়ায় নাফিজ সরাফাতের তদবিরে সায় দিইনি।আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তৎকালীন সচিব আসাদুল ইসলামও নাফিজ সরাফাতের পক্ষে তদবির করেছিলেন বলে জানান মুশতাক।
এই সেই লুটেরা যিনি কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত। এর ট্রাস্টি বোর্ডের প্রধান উপদেষ্টা সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এ আরাফাত, যিনি পরে তথ্য প্রতিমন্ত্রী হন। ২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১৭১ দশমিক ১৬ কাঠার একটি প্লট এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ দেয় রাজউক। এতে সরকারের ক্ষতি হয় ৭৭ কোটি টাকা।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের মূল নকশায় প্লটটি ছিল ‘সেকেন্ডারি স্কুল’। শ্রেণি পরিবর্তন করে ‘কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়’ করতে ২০১৭ সালের ৪ ডিসেম্বর নাফিজ সরাফাত আবেদন করলে রাজউকের পর্ষদ সভায় তা উপস্থাপিত হওয়ার পর ২৬ ডিসেম্বর অনুমোদন দেওয়া হয়। গুলশানের ১০৩ নম্বর সড়কের একটি প্লটের মালিক নাফিজ সরাফাতের স্ত্রী আঞ্জুমান আরা সাহিদ চৌধুরী। ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই এটিকে বাণিজ্যিক প্লট করার আবেদন করলে তৎকালীন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেনের হস্তক্ষেপে রাজউক এতে অনুমোদন দেয়। অথচ প্লটটি ‘বাণিজ্যিক ব্যবহারের আওতাভুক্ত নয়’ বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল রাজউক। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে রাজউক অনুমতি দিয়ে বলেছে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এ অনুমতি দেওয়া হলো।
ওদিকে পদ্মা ব্যাংকের পর নাফিজ সরাফাত হাত দেয় সাউথইস্ট ব্যাংকে। ব্যাংকটির সাবেক দুই চেয়ারম্যান এম এ কাশেম ও আজিমুদ্দিন আহমেদকে কৌশলে পর্ষদ থেকে সরিয়ে দেন তিনি। সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান হয়ে আসেন আলমগীর কবির। নাফিজ সরাফাতের স্ত্রী আনজুমান আরা সাহিদ হন পরিচালক। ছেলে চৌধুরী রাহিব সরাফাতকে ব্যাংকটির পরিচালক করতে চাইলেও অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে তা হয়নি। বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফাইন্যান্স ফান্ড লিমিটেডের (বিআইএফএফএল) চেয়ারম্যান ছিলেন আব্দুর রউফ তালুকদার। বিআইএফএফএলের এমডি ফরমানুল ইসলামকে একদিন ডেকে নিয়ে তিনি কিছু ‘ভুল’ বিনিয়োগের জন্য চাপ দেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও নাফিজ সরাফাত সেখানে উপস্থিত ছিলেন।ফরমানুল ইসলাম বলেন, রাজি না হওয়ায় বিআইএফএফএল থেকে আমাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়।
এদিকে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডট কম এবং ২৫ বছর পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পুনরায় চালু হওয়া দৈনিক বাংলার নিয়ন্ত্রণ নাফিজ সরাফাতের। দুটির সঙ্গেই জড়িত এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার। আর গণমাধ্যম দুটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নাফিজ সরাফাতের ভাই চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত। নিউজবাংলা উদ্বোধনের দিনই নাফিজ সরাফাত টিভি চ্যানেল আনার ঘোষণাও দিয়েছিলেন। এলক্ষ্যে ২০১৭ সালে সিটিজেন টিভি নামে একটি চ্যানেলের লাইসেন্স পেয়েছিলেন (এখনো সম্প্রচারে আসেনি) আওয়ামী লীগের তৎকালীন সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান।
শফিকুর রহমান গত ৩০ মে এক লিখিত অভিযোগে জানান, একদিন রাত ১২টার দিকে তাঁকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে ওয়েস্টিন হোটেলে নিয়ে যান এবং প্রতারণার মাধ্যমে শেয়ার লিখে নেন নাফিজ সরাফাত। সঙ্গে ছিলেন পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ আরও কয়েকজন। এটি ২০১৯ সালের ঘটনা। পরে তিনি জানতে পারেন, তাঁর নামে ৩০ শতাংশ, বেনজীর আহমেদের দুই মেয়ের নামে ৩০ শতাংশ, নাফিজ সরাফাতের নামে ২৫ শতাংশ এবং টুটুল নামের একজনের নামে ১৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
মিউচুয়াল ফান্ডগুলোয় মালিকানার পাশাপাশি নাফিজ সরাফাত আরগাস ক্রেডিট রেটিং সার্ভিসেসের চেয়ারম্যান। আর কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটির পর্ষদে আছে তাঁর ভাই-বোন ও ছেলেমেয়ে। এ ছাড়া পদ্মা ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার ও ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের পরিচালক নাফিজ সরাফাত। পদ্মা ব্যাংকের গোপালগঞ্জ শাখাটি তাঁদের পারিবারিক ভবন। ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, গ্রিন রোড, গুলশান, বারিধারা ও নিকুঞ্জে নাফিজ, তাঁর স্ত্রী ও ভাইয়ের নামে আটটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর বাইরে কানাডায় একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে বলে জানা গেছে।কানাডা বাংলাদেশ চেম্বার হাউসের (কানাডা) সভাপতি, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব ও আর্মি গলফ ক্লাবের সদস্য, ওয়ার্ল্ড চেজ ফেডারেশনের (বাংলাদেশ বিভাগ) সহসভাপতি এবং বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সদস্য তিনি।
এই সেই নাফিজ যিনি কতোটা ভয়ংকর ছিলেন তা হারে হারে টের পেয়ে বলেছেন কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর। পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান হয়ে আসার পর একটি কার্টুন আঁকেন কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর। নাফিজ সরাফাতকে চিত্রায়িত করা ওই কার্টুনে নাভির জায়গায় দেখা যায় ব্যাংকের প্রতীক সিন্দুকের হাতল। তাতে ক্যাপশন ছিল, ‘আমি চৌ নাফিজ সরাফাত/ জানি ব্যাংক খাওয়ার ধারাপাত!’ ২০২০ সালের ২ মে কার্টুনিস্ট কিশোর ও ৪ মে কার্টুনের ক্যাপশন লেখক মুশতাক আহমেদকে তুলে নেওয়া হয়।
৫ মে গ্রেপ্তার দেখানোর পর ১০ মাসে ছয়বার তাঁদের জামিনের আবেদন নাকচ হয়। ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি কাশিমপুর কারাগারে মারা যান মুশতাক আহমেদ। পরের মাসে জামিন পান কিশোর। এরপর গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর বলেছিলেন, নির্যাতনের সময় একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে নিয়ে কার্টুন আঁকার বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘আমি চৌ নাফিজ সরাফাত/ জানি ব্যাংক খাওয়ার ধারাপাত!’ ২০২০ সালের ২ মে কার্টুনিস্ট কিশোর ও ৪ মে কার্টুনের ক্যাপশন লেখক মুশতাক আহমেদকে তুলে নেওয়া হয়।