আবু সাঈদেই গণঅভ্যুত্থান হয়েছে-নিউইয়র্কে কাটুর্নে বিদ্রোহে-শহীদুল আলম
বিশেষ প্রতিনিধি যুক্তরাষ্ট্র থেকে : একটা ছবি যেমন হাজার কথা বলে, তেমনি একটি কার্টুনও প্রতিবাদ বা বিদ্রোহের ভাষা হতে পারে। বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের আঁকা শত শত কার্টুন ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনকে বেগবান করেছিল। ভূমিকা রেখেছিল শেখ হাসিনা সরকারের পতনে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আঁকা সেই কার্টুনগুলো এখন গণমানুষের মুক্তির প্রতীক। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কার্টুনগুলো প্রদর্শিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে।শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) থেকে ‘কার্টুনে বিদ্রোহ’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী প্রদশর্নী শুরু হয়েছে। নিউ ইয়র্কের প্রবাসী বাংলাদেশি অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশি মালিকানাধীন টেলিকম কোম্পানি রিভালটেল মিলনায়তনে এ প্রদশর্নী চলবে আগামী রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ কাটুর্নিস্ট অ্যাসোসিয়েশন, বহির্বিশ্বে সর্বাধিক জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম ঠিকানা এবং বাংলাদেশের শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলোর রম্য ম্যাগাজিন ইআরকি যৌথভাবে এই প্রদশর্নীর আয়োজন করেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোকচিত্রী শহীদুল আলম জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণ করে বলেন, আবু সাঈদের মত কেউ যদি প্রাণ না দিতেন তাহলে আন্দোলন সফল হতো না। আশা করেছিলাম, তবে এত দ্রুত সফল হবে ভাবিনি। আবু সাঈদেই গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আঁকা কার্টুন ও ছবি একসময় কালের সাক্ষী হবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শহীদুল আলম বলেন, ‘সরকার আসে, সরকার বদলায়। তবে আমাদের সকল সরকারই কোনো না কোনোভাবে নিপীড়ক। এরশাদ আমলে আমার মাথায় বন্দুক ঠেকানো হয়েছিল। বিএনপি আমলে ছুরিকাহত হয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকার আমাকে অত্যাচার করেছে, জেলে রেখেছে। সবাই আমাকে একইভাবে ভালোবাসে।’
তিনি বলেন, গত সরকারের সমালোচনা করার জন্য এখন অনেক লোক পাওয়া যাবে। কিন্তু সরকার যখন গদিতে ছিল তখন প্রতিবাদ করার মানুষ খুব বেশী ছিল না এবং নিপীড়করা নিপীড়ন করতে পারে অনেকটা নিরবতার কারণেই।’
শহীদুল আলম বলেন, ‘ব্যঙ্গ ও কৌতুক করে অনেক কিছু প্রকাশ করা যায়। ফাঁক-ফোঁকর দিয়ে অনেক কথা বলে ফেলা যায়। কিন্তু সিরিয়াস করে অনেক কিছুই প্রকাশ করা যায় না। তিনি বলেন, প্রতিবাদ ধরে রাখা খুব দরকার। ছবি ও কার্টুনের মাধ্যমেই তা সম্ভব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা কাদের গণি চৌধুরী, রিভারটেল সিইও রুহিন হোসেন এবং ঠিকানা টিভির প্রধান সম্পাদক ও সিইও খালেদ মুহিউদ্দীন।
স্বাগত বক্তব্যে ইআরকি সম্পাদক সিমু নাসের জানান, জুলাই আন্দোলনে একদল তরুণ কাটুর্নিস্টের আঁকা প্রায় ৫০০ কার্টুনের মধ্যে ৮২ জন কার্টুনিস্টের বাছাই করা ১৭৫টি কার্টুন প্রদশর্নীতে স্থান পেয়েছে। ২৯ সেপ্টেম্বর রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে কার্টুন প্রদশর্নী এবং তা সবার জন্য উন্মুক্ত, জানান সিমু নাসের।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারি, মনির হায়দার ও শাহেদ আলম, দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র রিপোর্টার সাইদুর রহমান, প্রথম আলোর বিশেষ আলোকচিত্র সাংবাদিক জিয়াউল ইসলাম, সংবাদের সিনিয়র আলোকচিত্র সাংবাদিক সোহরাব হোসেন, দৈনিক ইত্তেফাকের সিনিয়র আলোকচিত্র সাংবাদিক আব্দুল গণি, সংস্কৃতিকর্মী দিঠি হাসনাত প্রমুখ।