অপরাধ

কাদেরের পিয়নও শত কোটিপতি-চড়েন আড়াই কোটির গাড়িতে

 

 

 

প্রিয়া রহমান : ফ্যাসিস্ট হাসিনার পিয়ন যখন চারশ কোটিপতি তখন ওবায়দুল কাদেরের পিয়ন আতিকুর রহমানও কম যায় কিসে। সেও বনে গেছে শত কোটিপতি। চড়েন আড়াই কোটি টাকার গাড়িতে। এলাকাবাসী বলছেন, কাদেরের পিয়ন না হলেও শত কোটি টাকার মালিক। তবে আতিক ওবায়দুল কাদেরের পিয়ন হলেও স্ত্রীর গাড়িচালায় সে। কাজের ফাঁকে কাদেরের নাম ভাঙ্গিয়ে তদবির বাণিজ্য করে বেড়ায়। কাদেরের স্ত্রীকে দিয়েও সে তদবির বাণিজ্য করেছে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জাান গেছে, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীর গাড়ীর ড্রাইভার ছিলেন আতিকুর রহমান। সরকারি গাড়িচালক হলেও নিজ গ্রাম মানিকগঞ্জের সিংগাইরে রয়েছে তার দুই কোটি টাকার বিলাসবহুল বাড়ি। ঢাকায়ও একাধিক ফ্ল্যাট, বাড়ি এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। চড়েন আড়াই কোটি টাকার ল্যান্ড ক্রুজার গাড়িতে। গাড়িচালক হলেও আতিক অল্প সময়ে কিভাবে এতো টাকার মালিক হলেন, তা নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

স্থানীয়রা জানান, একসময় পরিবারের সঙ্গে চারচালা ঘরে থাকতেন আতিক। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন ড্রাইভিং পেশায় সম্পৃক্ত হন। প্রথমে নিজ এলাকায় বেবিট্যাক্সি চালাতেন। পরে ঢাকায় এসে সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগে গাড়িচালক হিসেবে যোগ দেন। কাজের ফাঁকে সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীর প্রাইভেটকার চালাতেন। সেই সূত্রে বিভিন্ন কৌশলে মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে অবৈধভাবে অর্থ কামিয়ে হয়ে উঠেন বিত্তশালী। গড়েছেন বাড়ি-গাড়ি, ঢাকায় জেন্টস্ পার্লার ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসা। এছাড়াও রয়েছে জমি।

অভিযোগ রয়েছে, করোনাকালে ঢাকায় ইটভর্তি ট্রাক প্রবেশে বিধি- নিষেধ থাকলেও মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর প্রভাব দেখিয়ে কাজ করতেন আতিক। সেক্ষেত্রে গাড়িপ্রতি নিতেন ৫ হাজার টাকা। এর ফলে ইট-ভাটার মালিকরাও তার শরণাপন্ন হতেন। আবার নিজেও সেতুমন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে ঢাকায় ইট সাপ্লাই করতেন।

আতিকের প্রতিবেশী থানা আওয়ামী লীগের নেতা নজরুল ইসলাম খান রতন বলেন, আতিক ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি নিয়ে বাড়ি আসতেন। সামান্য একজন ড্রাইভারের এমন ঘটনা দেখে আমরা বলতাম এটা কি করে সম্ভব। আওয়ামী লীগ নেতারাও তার বাড়িতে দাওয়াত খেত। প্রভাব খাটিয়ে আত্মীয়-স্বজনকে রোডস অ্যান্ড হাইওয়েতে চাকরি দিয়েছেন। আমার ধারনা দুই থেকে তিনশ কোটি টাকার মালিক তিনি। তবে তদন্ত করলে আরও জানা যাবে।

এ বিষয়ে কথা বলতে আতিকের সেই বিলাসবহুল বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। ফোন করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার মা ছাহেলা খাতুন বলেন, আমার ছেলে সরকারি গাড়ি চালায়। ঢাকায় দুটি দোকান আছে, পার্টনারে ব্যবসা করে। ছেলেটা এখন চাপের মধ্যে আছে। বিভিন্ন লোকজন বাড়িতে এসে তাগাদা করেন।

পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুল ইসলাম বলেন, আতিকের একটি চারচালা ঘর ছিল। ঐ ঘরে তারা বসবাস করতো। শুনেছি সে ইটের ব্যবসা করে এ বাড়ি করেছে। কিন্তু এতো কিছুর মালিক কিভাবে হলো তা বলতে পারছি না।

সংশ্লিষ্ট খবর

Back to top button