রাষ্ট্রপতির পেনাল্টি-ড.ইউনূস বা প্রধান বিচারপতির সম্ভাবনা!
শফিক রহমান : রাষ্ট্রপতির এক সাক্ষাতকারের জেরে পেনাল্টিতে পড়ল বাংলাদেশ। তবে এ পেনাল্টিতে রাষ্ট্রপতির নতুন করে ভবিষ্যত নির্ধারিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে তাকে নিয়ে জোরালো আলোচনা চলছে সারাদেশে । বলা হচ্ছে তাকে সরে যেতে কিংবা পদত্যাগ করতে হতে পারে। এক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা মনে করেন স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি ইনচার্জে থাকেন। তাঁকে তখন রাষ্ট্রপতি হতে প্রস্তাব করা হতে পারে। আবার ‘পদে থাকার অক্ষমতার কথা’ কিংবা অসুস্থতার কথা বলেও প্রধান উপদেষ্টাকেও রাষ্ট্রপতি তাঁর ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন এমন কথাও বলেছেন সিনিয়র আইনজীবীরা।
ওদিকে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী ৫২, ৫৩ ও ৫৪ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির অপসারণ বা পদত্যাগ প্রসঙ্গে বলা আছে। সেক্ষেত্র অবশ্যই সংসদ কার্যকর থাকতে হবে। সংসদ সদস্যরাই কেবল রাষ্ট্রপতি অপসারণ বা অভিসংশন করার ক্ষমতা রাখেন। আবার রাষ্ট্রপতি স্বেচ্ছায় পদত্যাগও করতে পারেন। সেক্ষেত্রে স্পিকার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করবেন। এবং তিন মাসের মধ্যে পরবর্তী নির্বাচন দিয়ে নতুন রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করতে হবে। এই মুহূর্তে এর কোনোটিই সম্ভব না। কেননা সংসদ কার্যকর নেই। স্পিকারও নেই।
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শাহদীন মালিক মনে করেন এখন সংবিধানের বাইরে গিয়েও গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ফলে রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে নতুন রাষ্ট্রপতিকে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় কোনো বিচ্যুতি হবে না। তিনি বলেন, ‘ফুটবল খেলা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে ফাউল, হ্যান্ডবল, পেনাল্টি, কিছুই নেই। তাই বলে কি গোল হবে না? গোল কীভাবে হবে, সেটা তো নির্ধারিত হতে হবে।
অর্থাৎ আইন বা সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের সুযোগ এখন নেই। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী ওই সুযোগ নাই। রাষ্ট্রপতি এখন স্বেচ্ছায় বা কারও কথায় চলে যেতে পারেন। কারও কথায় যাওয়া অসম্ভব কিছু না। ক্ষমতায় যারা আছেন, তারা বললেই চলে যাবে। সেনাবাহিনী ও সরকার চাইলে এক সেকেন্ডের ব্যাপার। তিনি বলেন, এখন আইনি কাঠামোর কথা চিন্তা করার দরকার নেই। এখন যা হবে তা এমনিতেই হবে। তবে তিনি এও বলেন, এখন যা হবে সেটা ভবিষ্যতে আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে আসা সরকারের অনুমোদিত হতে হবে।
এদিকে এক ভিডিও বার্তায় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শক্তির উত্থান ও পুনর্বাসন ঠেকাতে দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই।
হাসনাত বলেন, আপনারা দেখেছেন রাষ্ট্রপতি বলেছেন শেখ হাসিনা তার কাছে কোনো পদত্যাগপত্র জমা দেননি। গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকে পুনর্বাসন আবারও বিভিন্ন পাঁয়তারা শুরু করেছে।
ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গা স্বৈরাচারের পতিত আত্মারা বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেছে। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজনৈতিক স্বার্থে আমরা পৃথক হয়েছে যার কারণে একটি গ্যাপ তৈরি হয়েছে। যার কারণে এই গ্যাপটির সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা যদি দলীয় স্বার্থে আলাদা হয়ে যাই তাহলে আওয়ামী লীগ আবারও সুযোগ নিবে। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন ঠেকাতে আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে।
সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, তার মতো মানুষ, আজকে তিনি বলছেন শেখ হাসিনার রিজাইন পেপার নাকি তিনি দেখেননি। শেখ হাসিনার রিজাইন পেপার যদি তিনি নিজে না দেখেন তাহলে তার বিরুদ্ধে কী করা দরকার, কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তার জায়গা কোথায় হওয়া দরকার সেটা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ নতুন করে নির্ধারণ করবে।