স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিমএম কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে না অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানীতে সংবিধান সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় এ কথা বলেন তিনি।আওয়ামী লীগ সম্পর্কে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারে না অন্তর্বর্তী সরকার। যদি কেউ দোষ করে তবে তার বিচার হওয়া উচিত। আগামী নির্বাচনে অবশ্যই আওয়ামী লীগের অংশ নেওয়া উচিত।
ওদিকে জিএম কাদেরের বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘আজকে হাসিনার দোসর জি এম কাদের বলেছেন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি মিলে তাদের পক্ষে জনসমর্থন নাকি ৫০ শতাংশ। জি এম কাদেররা এই কথা বলার সুযোগ পায় কী করে? শেখ হাসিনার রক্ত ঝরানো যে দুঃশাসন, সেই দুঃশাসনের মধ্যে কত মায়ের যে বুক খালি হয়েছে। কত বোনের চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে পড়েছে, কত পিতা যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন সন্তানের শোকে, তার কোনো শেষ নেই। সেই শেখ হাসিনার ১৭ বছরের নির্মম শাসনকে যারা বৈধতা দিয়েছে, তারা হলেন স্বৈরাচার এরশাদ, তাঁর ভাই জিএম কাদের, এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ। সেই জি এম কাদেররা আজ গলা বের করে উঁচু গলায় কথা বলে কী করে?’
জিএম কাদের বলেন, জাতীয় ঐক্যের নামে জাতীয় অনৈক্য করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। জাতীয় ঐক্য করা হয়েছে মাত্র ১৮টি দল নিয়ে। অথচ নির্বাচন কমিশনের ৫৩টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। ৫০ শতাংশ মানুষকে জাতীয় ঐক্যের বাইরে রাখা হয়েছে। এতে জাতিগত ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে, দেশে একটি সংঘাতময় অবিশ্বাসের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, জাতীয় পার্টিকে সাংবিধানিকভাবে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের পার্টি অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। নেতাদের পাসপোর্ট আটকে দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যম নিয়ে জিএম কাদের বলেন, গণমাধ্যমে চরমভাবে সেলফ সেন্সরশিপ চলছে। সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
কড়া জবাব রিজভীর-
ওদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আজকে হাসিনার দোসর জি এম কাদের বলেছেন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি মিলে তাদের পক্ষে জনসমর্থন নাকি ৫০ শতাংশ। জি এম কাদেররা এই কথা বলার সুযোগ পায় কী করে? শেখ হাসিনার রক্ত ঝরানো যে দুঃশাসন, সেই দুঃশাসনের মধ্যে কত মায়ের যে বুক খালি হয়েছে। কত বোনের চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে পড়েছে, কত পিতা যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন সন্তানের শোকে, তার কোনো শেষ নেই। সেই শেখ হাসিনার ১৭ বছরের নির্মম শাসনকে যারা বৈধতা দিয়েছে, তারা হলেন স্বৈরাচার এরশাদ, তাঁর ভাই জিএম কাদের, এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ। সেই জি এম কাদেররা আজ গলা বের করে উঁচু গলায় কথা বলে কী করে?’
আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর দক্ষিণ বাসাবোতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী এ কথা বলেন। গুম হওয়া সবুজবাগ থানা ছাত্রদল নেতা সুজন ও ফরহাদকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
‘ভারতের গোয়েন্দাদের ল্যাবরেটরিতে শেখ হাসিনা, জি এম কাদেরদের জন্ম’—এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘আমরা সবাই জানি ভারতের ল্যাবরেটরিতেই শেখ হাসিনার জন্ম। ওখানে জি এম কাদেরদের জন্ম। ভারতের গোয়েন্দাদের ল্যাবরেটরিতেই রওশন এরশাদের জন্ম। ওরা তো এ কথা বলবেই। এখন ঘাপটি মেরে থাকলেও তারা যেকোনো মুহূর্তে সুযোগ পেলে ছোবল দেবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আজকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সবাই সমর্থন দিয়েছে। আপনাদের কাজ কি শুধুমাত্র গদির মধ্যে বসে থাকা? এসি রুমের মধ্যে বসে থাকা? আপনারা এই চার মাসে কী করেছেন দেখাতে পারবেন? আজকেও সয়াবিন তেল কেন ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা কেজি হবে? এজন্যই কি অন্তর্বর্তী সরকারকে জনগণ সমর্থন দিয়েছে? এখনো তো বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে আওয়ামী লীগের লোকেরা।’
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবিরাম অপপ্রচার চলছে। বাংলাদেশ নাকি তুর্কি ড্রোন নিয়ে এসে সীমান্তে বসিয়েছে, ডাহা একটি মিথ্যা কথা। তার কয়েক দিন আগে রিপাবলিক বাংলা বলে বেড়াল চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ হিসেবে দাবি করতে হবে। এত সাহস কোথায় থেকে পায় তারা?’এ সময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।